খোলা বাজার২৪, বুধবার, ১১ জানুয়ারি ২০১৭:

ওজন বাড়া ও কমার সাথে খাওয়ার সর্ম্পক ঘনিষ্ট। খাওয়ার ওপর নিয়ণ্ত্রণ রাখাটা কঠিন কাজ। যখন মানুষের খিদে পায়, তখণ সামনে যা কিছু জোটে তাই খায়, সেটা যতই অস্বাস্থ্যকর হোক না কেন। যদি স্বাভাবিক উপায়ে আপনি আপনার খিদে পাওয়াটা কমাতে পারেন, তাহলে আপনার খাওয়ার পরিমাণটাও কমাতে পারেন।
আর ওজন কমানোর গোপন চাবিকাঠি হল, যদি কম খান, ওজন বাড়বে কম। আপনি যদি স্বাস্থ্যকর ভাবে নিজের শরীরকে কম খাওয়ায় অভ্যেস করাতে পারেন, আপনি নিজেকে অকারণে ক্ষুধার্ত মনে করবেন না। এর জন্য আপনাকে প্রচণ্ড সচেতন হয়ে কম খেতে হবে এমনও নয়।
যদি আপনি এই স্বাভাবিক পদ্ধতিগুলো পালন করেন নিজের খিদে কমানোর, তাহলে মনেও হবে না যে আপনি নিজেকে খাওয়ার থেকে বঞ্চিত করছেন। এগুলো স্রেফ কিছু কৌশল, কম খাওয়ার অভ্যেস করার। এই পদ্ধতিগুলো পালন করলে, শুধু আপনার শরীরে বাড়তি ক্যালোরির প্রবেশ বন্ধ হবে, স্বাস্থ্যের কোনো ক্ষতি না করে।
প্রতি ঘন্টায় পানি খান : প্রতি ঘন্টায় এক গ্লাস করে পানি খান। এতে আপনার শরীরে জমা যত আবর্জনা ধুয়ে বেরিয়ে যায়, এবং আপনার একটা পেটটা ভরে আছে অনুভূতি হয়। শরীর যথেচ্ছ মাত্রায় আদ্র রাখলে, আপনার কখনই ক্ষুধার্ত বোধ হবে না।
খাবারে দিন দারচিনি : দারচিনি খুব স্বাস্থ্যকর মশলা, যা আপনার রক্তে চিনির মাত্রা সঠিক বজায় রাখে। তার মানে এটা আপনার হজম করার গতিটা একটু আস্তে করে দেয়, যাতে আপনার অনেকক্ষণ অবধি ক্ষিধে পেতে দেয় না।
আস্তে খান : আপনি যদি তাড়াহুড়ো করে খাওয়ার খান, তাহলে সেটা গেলার মত হয়ে দাড়ায়, এবং চট করে পেট ভরে যায়। এর পরে আবার ক্ষিধেও পেয়ে যায়, তাড়াতাড়ি। এটা আরও ক্ষতিকারক। তাই সঠিক উপায় হল, যখন খাবেন ধীরে সুস্থ্যে খান, এবং খাবারটা বেশ উপভোগ করুন, যাতে একটা তৃপ্তি আসে। পেটের সাথে মনটাও ভরে।
গোটা ফল খান : রস বানিয়ে খাওয়ার চেয়ে গোটা ফল খান। আপনার হঠাৎ খিদে মেটাতে ফল খান, গোটা ফল খাওয়ার চেষ্টা করুন, রস না। রস তরল, ও তাতে কোনো ফাইবার থাকে না। তাই সেটা চট করে হজম হয়ে যায়। গোটা ফল খেলে, ক্যালোরির পরিমাণ একই থাকবে, শুধু পেটটা অনেক বেশি সময়ের জন্য ভরা থাকার অনুভূতি দেবে।
চিনি বর্জন করুন : চিনি আপনার শরীরে শক্তির মাত্রা হঠাৎ বাড়ায়, বা কম হলে, শক্তির মাত্রা হঠাৎ করে কমিয়ে দিতে পারে। যখন চিনির মাত্রা পড়ে যায়, তখন আমাদের খিদে পায়ে। তাই চিনি থেকে দূরে থাকাই ভাল।
ফাইবার যুক্ত খাবার খান : খাবারে থাকা ফাইবার ভেঙে, হজম হতে সময় লাগে। তাই, আপনি যখন কোনো ফাইবার সমৃদ্ধ খাবার খান, সেটা আপনাকে অনেক বেশি সময়ের জন্য পেট ভর্তি থাকার অনুভূতি দেয়।
মাঝে মধ্যে চা বা কফির কাপে চুমুক : চা ও কফি, এমন পানীয় যা খিদে মেরে ফেলে। নিয়মিত রুপে যদি চা বা কফির কাপরে চুমুক দেন, তাহলে আপনার খিদে পাবে না খুব। খেয়াল রাখবেন, এই পানীয়গুলোয় যেন অল্প চিনি দেওয়া থাকে।
প্রোটিনযুক্ত খাবার রাখুন : খাদ্যতালিকায় মূলত প্রোটিনযুক্ত খাবার রাখুন আপনার খাদ্য তালিকায়, মুরগির মাংস, পোড়ানো (গ্রিল) বা হালকা আঁচে সেঁকা (ব্রেইসড) করা অবস্থায়। মানুষের সাধারণত, প্রোটিনের থেকে কার্বহাইড্রেট বেশি খাওয়ার ক্ষমতা থাকে। আপনি মুরগির ঝোলের সাথে, দুকাপ ভাত খেয়েও, আরও খেতে চান। কিন্তু যদি পোড়ানোর মুরগির বুকের মাংসের সাথে, সেদ্ধ করা কিছু সবজি খান, সেটা আপনার পেট একদম ভরে দেবে।
অল্প খান : দিনে ৩-বার খাওয়ার থেকে, সারাদিনে ৬-৮বার খাওয়ার ব্যবস্থা করুন। বার বার খান, কিন্তু অল্প খান, মাঝে মাঝে, যাতে কোনো সময়ই প্রচণ্ড ক্ষিধে পেয়েছে এমন না হয়। কখনও সকালের নাস্তা বাদ দেবেন না, এটা বৈঞ্জানিক গবেষণায় প্রমাণিত হয়েছে, যে সকালে সঠিকভাবে নাস্তা খেলে, আপনাকে সারাদিন বেশ পেট ভরে থাকার অনুভূতি দেয়। যদি কোনো কারণে সকালের নাস্তা না হয়, তাহলে খুব ভারি দুপুরের খাওয়ার প্রবণতা বেড়ে যায়।