খোলা বাজার২৪, বুধবার, ১১ জানুয়ারি ২০১৭: আব্দুল্লাহ আল মামুন, পার্বতীপুর(দিনাজপুর): দিনাজপুর পার্বতীপুরের ১০নং হরিরামপুর ইউনিয়নের বেলঘাট সুলতানপুর এলাকায় জমিজমা বিষয়ে পূর্ব শত্রুতার জেরে ২৮ ডিসেম্বর আনুমানিক বেলা ৩টায় জিয়ারুল ইসলাম (৩৫) তার বাড়ির প্রাচীর তৈরির সময় জোড় পূর্বক জবর দখলের উদ্যেশ্যে হাতে লাঠি সোটা, লোহার রডসহ ধারলো অস্ত্রপাতি নিয়ে বাধা দেয় তারেক হোসেনসহ তার দলবল। কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে জিয়ারুলকে লাঠি দিয়ে মাথায় আঘাত করলে মাথা ফেটে যায় এবং তাকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। এসময় তারা বাড়ির মহিলাদের শরীরে হাত তোলে, তাদের কানের স্বর্ণালংকার ছিনিয়ে নেয় এবং সদ্য গোড়ে তোলা ইটের তৈরি ঘরের দেয়ালে আঘাত করায় তাতে ফাটল ধরেছে। পরে জিয়ারুল বাদী হয়ে ১১জনের বিরুদ্ধে পার্বতীপুর মডেল থানায় এজাহার দাখিল করেন।
জিয়ারুল ইসলাম বলেন, যেহেতু আমাদের বাস্ত বাড়ি এখানে তাই বাড়ির চারপাশে প্রাচীর দিতে হবে। তাই আমি ইটের প্রাচীর দিতে প্রস্তুত হলে তারা আমাদের বাধা প্রদান করে এবং আমি বলি যে আপস মীমাংসা যা হবে তা আমরা মেনে নেব কিন্তুু আপনারাই তো আসেন না। আপনারা এখান থেকে একটু সরা সরি হন । এক পর্যায়ে বাবু নামের একজন এসে আমার মাথায় আঘাত করে আমি টের পাই নি । যখন আমার মাথা থেকে রক্ত পড়ছিলো তখন আমায় কয়েকজন ধরে হাসপাতাল নিয়ে যায়। যারা আমায় মারছে তারা হলো- ভেট্টু, বাবু, নালু, এন্তাজুল, নজরুল ইসলাম, আইবুদ্দী, কান্দুরী সবাই আমাকে মারার জন্য ধস্তাধস্তি করছিলো এবং এমন প¬ান করেছিল যে একে (আমাকে) মেরে ফেলবে। শুধু একবার নয় কয়েকবার তারা আমাদের মারছে।
এব্যাপারে বাড়ির বউ দুলালী খাতুন বলেন, আমাদের এই যায়গা টা ফুট (গর্ত) ছিল। অনেক কষ্টে আমরা তা পুরণ করেছি। পরে ঘর বাড়ি করেছি।তখন আমাদের মানা করে নি। পাশে কবর স্থান থাকায় চলাফেরার সমস্যার জন্য প্রাচীর তৈরী করতে শুরু করলে ওরা অনেকগুলো লোক এসে বাধা দেয়। মূলত এখন রাস্তার পাশে জায়গার দাম বেশি তাই ওরা এই টা নিতেচায়। নালু, রফিকুল গায়ে হাত তুলেছে এবং ওনার ছোট ছেলে বলেছে এই বইতালি বলে গালি দিছে এবং আমাক নিকা করতে চাইছে সে শিক্ষিত রংপুরে পড়ে। আমিম কিছু বলি নাই। পরে লাঠি দিয়ে আমার মাথায় মারলে কপালে ফেটে যায়। আমার পিছনেও মারছে তা একদম জখম হয়ে আছে। ওরা প্রায় ৩০/৪০জন আসছিল। হামার দলবল কেউ নাই ৫ভাই আর মহিলা।
ঘটনা সমন্ধে জিয়ারুল এর মা মানেজা বেগম বলেন, ইট গাথোছে ( প্রাচীর তুলছে) ভিত্তি দিচ্ছে তা থেকে ডাঙ্গাডাঙ্গী লাগছে হামার ভাগী (আমার) পাগালু, আইবুদ্দি, বাসেরসহ আরো অনেকে।ওরা আমাদের এই জমিতে আসতে চাচ্ছে। আমার স্বামী ওদের এক জায়গায় ২০শতক জমি দিয়ে গেছে। এখন ওরা ২ জায়গায় নিছে। যেখানে ২০শতক দিছে সেখানে ওখানে ১৪শতক এবং এখানে ৬শতক জমি তুলে নিছে। এ ব্যাটারা (ছেলেরা) এখানে ১১শতকে বাড়ি করে আছে। ২০বছরের বেশি থেকে এ বাড়ি আছে।
জিয়ারুল এর ভাবী শেফালী বেগম বলেন, ওরা বাড়ি থেকে টানি নিয়ে গেছে । হুরা হুরি করতে আমার শারী ছিরে ফেলেছে। ওরা বেটা ছৈল (পুরুষ মানুষ) অনেক গুলা আই ছিলো। পুরুষ মানুষ আমার গায়ে হাত দিছে এবং ডাঙ্গাইছে ।
এ বিষয়ে এলাকার জন প্রতিনিধি ১০নং হরিরামপুর ইউনিয়নের আওয়ামিলীগের সভাপতি সাহাব উদ্দীন সাহা বলেন,
গত ২৯ তারিখে খলিলের ছেলেদের সাথে প্রতিপক্ষের একটা মারামারি হয় বসতবাড়ি বিষয়ে এবং বাড়ি ভাঙ্গচুর করে। এটা আমি শুনেছি। আমাকে বলেছে এবং তারা যে আহত হয়েছে আমি তাদের দেখেছি। রোগীকে তাড়াতাড়ি হসপিটালে পাঠানোর জন্য পরামর্শ দিছি। এর পরে মামলা করার জন্য পার্বতীপুরে আমাকে নিয়ে গেছে। আমি ওসি সাহেব কে মামলা রেকর্ড করার জন্য বলেছি। উনি রেকর্ড না করে অভিযোগ নিয়ে রাখছে। তদন্ত সাপেক্ষে রেকর্ড করবে। উনি এসে দেখে গেছেন। এখন পর্যন্ত মামলা রেকর্ড হয়নি। তবে বাদীগন প্রতিকার পাবার হকদার
১০নং হরিরামপুর ইউনিয়নের আওয়ামিলীগের সিনিয়র সহ সভাপতি জুলফিকার আলী বলেন, যেখানে ঘটনা ৬নং ওয়ার্ডে আমার বাসা। এ ব্যাপারটা ওদের দীর্ঘ দিন ধরে বাড়িঘর নিয়ে গন্ডগল। আমরা থানায় শালিশ নিয়ে বসেছিলাম সমাধান হয়নি। মারামারিতে আহত হলে মেডিকেল এ ভর্তি হয়। আইনগত ভাবে বাড়ি উচ্ছেদ করা যায় কিন্তু যে কারো হোক বাড়ি হুট করো বাড়ি ভা্গংার অধিকার কারো নাই। এটা তারা অন্যায় করেছে। তদন্ত সাপেক্ষে আইনগত ব্যাবস্থার গ্রহণের জন্য আমি আহবান করছি। আমি এর প্রতিকার চাই।
এজাহার দাখিলের পর থানায় মামলা না হওয়ার কারণ সমন্ধে জানতে চাইলে অফিসার ইনচার্জ মোস্তাক আহাম্মেদ বলেন এটা ওদের নিজেদের ভিতরে ঘটনা বিষয়টি নিয়ে আমরা চিন্তা ভাবনা করতেছি।