Wed. Jun 18th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

23kখােলা বাজার২৪, শুক্রবার, ২৭ জানুয়ারি ২০১৭: ময়মনসিংহে আওয়ামী লীগ দলীয় সাংসদের বিরুদ্ধে একই ব্যক্তির দ্বিতীয়বার মানবতাবিরোধী অপরাধে অভিযোগে মামলা দায়েরে ক্ষুদ্ধ হয়ে উঠেছে স্থানীয় আওয়ামী লীগ। তারা এটিকে দলের ভাবমুর্তি ক্ষুন্নের অপচেষ্টা হিসেবে দেখছে। অন্যদিকে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারা বলছেন ফুলবাড়ীয়া থেকে নির্বাচিত পাঁচবারের সাংসদ মোসলেম উদ্দিন মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন। প্রথমবার ট্রাইব্যুনাল তদন্ত শেষে আদালতে মামলা খারিজ হলে জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী ইন্ধনে হলেও দ্বিতীয়বার আবারো একই ব্যক্তি অসৎ উদ্দেশ্যে এ মামলাটি দায়ের করেছেন বলে দাবি মুক্তিযোদ্ধাদের।

২০১০ সালে ফুলবাড়ীয়ার মুক্তিযোদ্ধা জালাল উদ্দিন আওয়ামী লীগ দলীয় স্থানীয় সাংসদ এডভোকেট মোসলেম উদ্দিনের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের অভিযোগ এনে আদালতে একটি মামলা দায়ের করেন। তদন্ত শেষে আদালত এ মামলাটি খারিজ করে দেন। গত ২২ জানুয়ারী একই ব্যক্তি আবারো একই অভিযোগে ঐ সাংসদের বিরুদ্ধে মামলা করেন। তবে স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা আনোয়ারুল হক খালেক বলছেন, ৭০এর নির্বাচনে প্রাদেশিক পরিষদের সদস্য সদস্য মোসলেম উদ্দিন মুক্তিযুদ্ধের প্রথম পর্যায়ে মুক্তিযুদ্ধের সংগঠক ছিলেন। পরে তিনি পাক বাহিনীর কাছে ধরা পড়লে প্রভাবশালী শশুরের হস্তক্ষেপে জানে রক্ষা পান। যুদ্ধের সময় তিনি ময়মনসিংহ শহরে পাক বাহিনীর নজর বন্ধী ছিলেন। যুদ্ধ শেষে বিষয়টি তদন্তে বাংলাদেশের প্রথম অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম তার বিরুদ্ধে কোন রকম মানবতা বিরোধী কর্মকান্ডে সম্পৃক্ততা পাননি।

সম্প্রতি ফুলবাড়ীয়ায় এক জনসভায় কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকী বলেন স্থানীয় সাংসদ মোসলেম উদ্দিন যুদ্ধাপরাধী, কেউ তার বিরুদ্ধে মামলা করলে তিনি সাক্ষী হবেন। তার এক আহবানের পরই তাকে সাক্ষী করে সাংসদের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের মামলা দায়েরে তার সহচর মুক্তিযোদ্ধার দাবি কয়েকদিন আগেও কাদের সিদ্দিকি মোসলেম উদ্দিনকে বুকে জড়িয়ে নিয়েছিলেন। তার সাথে বিভিন্ন অনুষ্ঠানেও যোগ দিয়েছিলেন। তার প্রশ্ন যে কাদের সিদ্দিকি হানাদার বাহিনীর প্রধান জেনারেল রিয়াজীর সাথে হাত মেলাননি, মোসলেম উদ্দিন রাজাকার হলে সেই কাদের সিদ্দিকি তাকে বুকে জড়ালেন কিভাবে। এমনটাই প্রশ্ন তুলেন সাবেক উপজেলা ডেপুটি কমান্ডার মুক্তিযোদ্ধা নুরুল ইসলাম।

স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধারাও বলছেন তারা যুদ্ধশেষে বাড়ী ফিরে মোসলেম উদ্দিনের মানবতা বিরোধী অপরাধের সংশ্লিষ্টতা শুনতে পাননি। এতো বছর পর এ মামলাকে উদ্দেশ্যমূলক বলছেন তারা।

দায়েরকৃত মামলার ১১নং সাক্ষি গোলাম মওলা ও বলছেন মোসলেম উদ্দিনের মানবতা বিরোধী অপরাধের সংশ্লিষ্টতা নেই বলে ক্যামেরার সামনে বক্তব্য প্রকাশ করেছেন।

মামলার এজাহারের বর্ণনা মতে মোসলেম উদ্দিনের নির্দেশে তালেব আলী, সেকান্দর আলী এবং আলতাব আলীকে ৭১ সালের ২৯ নভেম্বর মেরে নদীতে ভাসিয়ে দেয়ার কথা বলা হয়েছে। অথচ শহীদ তালেব আলীর ছেলে খোরশেদ আলী জানান ৭১ সালে পাকিস্থানী বাহিনী আমার বাবা ও দুই চাচাকে হত্যা করে। আমি আমার মা, চাচি এবং এক নানার কাছ থেকে জেনেছি এর সাথে সাংসদ মোসলেম উদ্দিন জড়িত ছিলেন না। ঐ মামলাটি আর্ন্তজাতিক অপরাধ ট্রাইবোনালে বিচারাধীণ রয়েছে এবং একজন আসামী হাজতে রয়েছে। আমার দায়ের করা মামলার ৪ জনকে অ এই মামলায় আসামী দেখানো হয়েছে।

মামলার বাদী মুক্তিযোদ্ধা জালাল উদ্দিন জানান, আগে দায়ের করা মামলাটি খারিজ হওয়ায় ভালো ফল পাওয়ার আশায় তিনি আবারো মামলাটি দায়ের করেন।

ময়মনসিংহ আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক এডভোকেট মোয়াজ্জেম হোসেন বাবুল মামলার অন্যতম সাক্ষি বঙ্গবীর কাদের সিদ্দিকিকে মিথ্যা কথার বাক্স উল্লেখ করে বলেন, দলের ভাবমুর্তি ক্ষুন্ন করতে আওয়ামী লীগ থেকে ৭বার মনোনয়ন পেয়ে ৫বার নির্বাচিত এমপিকে জড়িয়ে এ ধরনে নোংরা খেলায় মেতেছে। এমপি মোসলেম উদ্দিন রাজনৈতিক প্রতিহিংসার স্বীকার।

তবে স্থাণীয়রা মনে করেন স্থানীয় রাজনৈতিক দ্বন্ধে সাংসদের বিরুদ্ধে এধরনে মামলা দায়েরের কারন হতে পারে।