স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণমন্ত্রী মোহাম্মদ নাসিম নির্বাচন কমিশন (ইসি) গঠনপ্রক্রিয়া স্বচ্ছ ও গ্রহণযোগ্য হয়েছে মন্তব্য করেছেন। তিনি বলেন, ‘রেফারি যখন ঠিক হয়ে গেছে, খেলা হবে। যদি উন্নয়ন চান, বিদ্যুৎ চান, স্বাস্থ্যসেবা চান, তাহলে আগামী নির্বাচনে শেখ হাসিনাকে ভোট দিন। তা না হলে দেশে আবার হাওয়া ভবন হবে, জঙ্গিবাদ-সন্ত্রাসবাদের জন্ম হবে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী আজ মঙ্গলবার দুপুরে নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে আবদুল মালেক উকিল মেডিকেল কলেজ-সংলগ্ন জননেতা নুরুল হক আধুনিক হাসপাতালের ভিত্তিপ্রস্তর স্থাপন শেষে এক সুধী সমাবেশে এসব কথা বলেন। সমাবেশে সভাপতিত্ব করেন নোয়াখালী-৩ আসনের সাংসদ মামুনুর রশিদ কিরণ।
বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার উদ্দেশে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, ‘বেগম জিয়াকে বলব যদি সাহস থাকে মাঠে আসেন, খেলা হবে। মাঠ ছেড়ে পালিয়ে যাবেন না। গত নির্বাচনের আগে খালেদা জিয়া বলেছিলেন যে নির্বাচন হবে না। নির্বাচন বন্ধ করতে জ্বালাও-পোড়াও ও মানুষ হত্যা করেছেন। কিন্তু তারপরও নির্বাচন হয়েছে।’
স্বাস্থ্যমন্ত্রী বলেন, গত বছর গুলশানে জঙ্গি হামলার মধ্য দিয়ে দেশে নতুন করে জঙ্গিবাদের উত্থান হয়েছিল। শোলাকিয়ায় ঈদের জামাতে হামলা চালানো হয়েছিল। পুলিশ জীবন দিয়ে সেই হামলা প্রতিহত করেছিল। শুধু তা-ই নয়, এক মাসের মধ্যে জঙ্গি দমন করা হয়েছে। তিনি দলীয় নেতা-কর্মীদের নির্বাচনের প্রস্তুতি নেওয়ার আহ্বান জানিয়ে বলেন, আগামী ২০১৯ সালে নির্ধারিত সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। তাই নির্বাচন ঘরের কাছে এসে গেছে। এখন থেকে প্রস্তুতি নিতে হবে। কারণ, আগামী নির্বাচন হবে অপশক্তির বিরুদ্ধে। এ সময় তিনি বিএনপির উদ্দেশে বলেন, ‘জ্বালাও-পোড়াও করবেন না। চক্রান্ত না করে নির্বাচনে আসুন। জনগণ যাকেই নির্বাচিত করবে, তা আমরা মেনে নিব।’
সরকারের উন্নয়নের কথা বলতে গিয়ে মোহাম্মদ নাসিম বলেন, বিশ্বব্যাংক পদ্মাসেতু প্রকল্পে টাকা দেয়নি। কিন্তু বঙ্গবন্ধুকন্যা শেখ হাসিনার দৃঢ়তায় জনগণের অর্থে পদ্মাসেতুর কাজ শুরু হয়েছে। এর সঙ্গে তিনি যোগ করেন, বিএনপির সরকার ১৪ হাজার কমিউনিটি ক্লিনিকসহ স্বাস্থ্যসেবার অনেকগুলো খাত বন্ধ করে দিয়েছিল। বর্তমান সরকার কমিউনিটি ক্লিনিকগুলো সচল করেছে। হাসপাতালগুলোতে চিকিৎসক ও নার্সসহ জনবল নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। এতে গ্রামে গ্রামে স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা হয়েছে।
নোয়াখালীর মানুষের উদ্দেশে আওয়ামী লীগের এই নেতা বলেন, জননেতা নুরুল হক আধুনিক হাসপাতাল নির্মাণের জন্য ৪০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। বেগমগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স নির্মাণ, ২৫০ শয্যার জেনারেল হাসপাতালের অবকাঠামো উন্নয়ন, সিভিল সার্জন কার্যালয়ের ভবন নির্মাণ, সেনবাগ উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবারকল্যাণ কেন্দ্র নির্মাণে আরও প্রায় ১০০ কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। নৌকায় ভোট দিতে হবে। তা হলে আরও উন্নয়ন হবে।
অনুষ্ঠানে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন নোয়াখালী-২ আসনের সাংসদ মোরশেদ আলম, লক্ষ্মীপুরের সাংসদ শাহজাহান কামাল, জেলা পরিষদের চেয়ারম্যান এ বি এম জাফর উল্যাহ, জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এ এইচ এম খায়রুল আনম চৌধুরী, সাবেক সভাপতি মো. হানিফ, মেডিকেল কলেজের অধ্যক্ষ মলয় কান্তি চক্রবর্তী, চৌমুহনী পৌরসভার মেয়র আক্তার হোসেন প্রমুখ।
সুধী সমাবেশ শেষে স্বাস্থ্যমন্ত্রী বিকেলে জেলা শহরে ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতাল পরিদর্শন করেন। এর আগে তিনি দুপুরে বেগমগঞ্জে পৌঁছে চৌমুহনী পৌরসভা চত্বরে মরহুম জননেতা নুরুল হকের কবর জিয়ারত করেন।