Wed. Sep 17th, 2025
Advertisements

 খােলা বাজার২৪, রবিবার, ১৯ ফেব্রুয়ারি ২০১৭: 21 রাণীনগর উপজেলার কুজাইল-আতাইকুলা নামক স্থানে ছোট যুমনা নদীর উপর নির্মিত বাঁশের সাঁকোই একমাত্র ভরসা। উপজেলার তিন ইউনিয়নের প্রায় ২৫ হাজার মানুষের যোগাযোগের মাধ্যম এটি। একটি ব্রীজের অভাবে দীর্ঘ দিন ধরে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বর্ষার সময় নৌকা ও শুষ্ক মৌসুমে বাঁশের সাঁকো দিয়ে প্রতিদিন পারাপার হতে হয়। একটি ব্রীজ নির্মাণের দাবী জানিয়েছেন স্থাণীয়রা।

জানা গেছে, রাণীনগর উপজেলার সদর থেকে প্রায় আট কিলোমিটার পশ্চিম-দক্ষিনে কাশিমপুর-মিরাট ইউনিয়নের মধ্য দিয়ে বয়ে গেছে ছোট যুমনা নদী। স্বাধীনতার ৪৫বছর পেরিয়ে গেলেও উপজেলার কুজাইল-আতাইকুলা ব্রীজ না থাকায় নদী পারাপারে স্থানীয়দের ভোগান্তী পোহাতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। স্থানীয় ইজারাদারের উদ্যোগে তৈরি বাঁশের সাঁকোই একমাত্র যোগাযোগের ভরসা হয়ে দাঁড়ায়। মিরাট, কালিকাপুর, হাটকালুপাড়া, গোনা ও কাশিমপুর ইউনিয়নের সর্বস্তরের মানুষের মাঝে যোগ হয়েছে নিবিড় বন্ধন এই সাঁকো।

প্রায় ১৩টি গ্রামে সর্বরামপুর, কাশিমপুর, ডাঙ্গাপাড়া, এনায়েতপুর, মঙ্গলপাড়া, ভবানীপুর, পীরেরা, বয়না, বেতগাড়ী, দূর্গাপুর, কৃষ্ণপুর, মালঞ্চি, ঘোষগ্রাম, নান্দাইবাড়ি, বেতগাড়ী, আতাইকুলা, কুনৌজ, হামিদপুর, জালালগঞ্জ গ্রামসহ প্রায় ২৫হাজার লোকের যোগাযোগের মাধ্যম। এসব এলাকার যোগাযোগের ব্যবস্থা তেমন উন্নয়ন না হওয়ায় রাষ্ট্রের অনেক জরুরী সুযোগ-সুবিধা ও সেবা থেকে বঞ্চিত রয়েছে বাসিন্দারা।

তিন ইউনিয়নের বসবাসকারি জনসাধারণ প্রয়োজনের তাগিদে জেলা ও উপজেলা সদরে যেতে হয়। কিন্তু যোগাযোগের মাধ্যম ব্রীজ না থাকায় স্থানীয় কৃষকরা তাদের উৎপাদিত ধানসহ অন্যান্য কৃষি পন্যসামগ্রী সহজ ভাবে বাজারজাত করতে পারেনা। ফলে নায্য মূল্য থেকে বঞ্চিত হতে হয়। নদীর উপর একটি ব্রীজ নির্মাণে এলাকাবাসির দীর্ঘদিনের প্রাণের দাবী। সরকারি পর্যায়ে উন্নয়নের অনেক প্রকল্প আসে প্রকল্প যায়। কিন্তু এলাকাবাসির ভাগ্য উন্নয়নের কারো যেন মাথা ব্যাথা নাই। একটি ব্রীজ নির্মাণ হলে যাতায়াতের জন্য নতুন দিগন্তের উন্মোচন ঘটবে। বিশেষ করে ইরি-বোরো মৌসুমে ধান কাটাসহ আনা নেওয়া সুবিধা হবে।

স্থানীয় আফছার আলী বলেন, বাঁশের সাঁকোটি সংস্কার না করায় মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাবাসী ও স্কুলগামী কমলমতী ছাত্র-ছাত্রীসহ নানান ধরণের অসুবিধার সম্মুখিন হতে হয়। বর্ষা মৌসুমে বৃষ্টিপাত শুরু হলেই নদীর দুই পাড়ে কাঁদা-পানিতে সাঁকো থেকে পিছলে নদীতে পড়ে গুরুত্বর আহত হওয়ার মত ঘটনাও ঘটেছে। আতাইকুলা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক দেওয়ান আনোয়ার হোসেন জানান, প্রায় তিনশ ছাত্র-ছাত্রী জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বর্ষা মৌসুমে নৌকাতে এবং শুষ্ক মৌসুমে সাঁকো দিয়েই পারাপার হয়। একটি ব্রীজ নির্মাণ হলে শিক্ষা প্রতিষ্ঠানসহ এলাকার উন্নয়ন হবে।

রাণীনগর উপজেলা প্রকৌশলী অধিদপ্তরের উপ-সহকারি প্রকৌশলী মকলেছুর রহমান জানান, কুজাইল-আতাইকুলা নামক স্থানে একটি ব্রীজ নিমার্ণের জন্য মাপ-যোগ ও ডিজাইন করে স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রধান কার্যালয়ে অনুমোদনের জন্য ইতোমধ্যে প্রেরণ করা হয়েছে। অনুমোদন স্বাপেক্ষে প্রয়োজনীয় সকল প্রক্রিয়া সম্পূর্ণ করে কাজ শুরু করা হবে।