খােলা বাজার২৪, বুধবার, ১ মার্চ ২০১৭ : কুমিল্লার লাকসাম উপজেলায় কয়েক’শ গ্রাম পুলিশের দূর্বিসহ বিচিত্র জীবন নিয়ে এখন কেউ ভাবে না। অথচ তাদের কর্মযজ্ঞে শতভাগ দায়িত্বশীল কর্মকান্ডে গ্রামীণ এ প্রতিষ্ঠানের সদস্যরা নানাহ ভাবে অবহেলিত।
চলমান ডিজিটাল যুগে সময় পাল্টাচ্ছে, আর পাল্টে যাচ্ছে মানুষের দৈনন্দিন চলার গতিপথ। এ অঞ্চলের মানুষগুলো সবাই নিজেদের আপন কর্মে ব্যস্ত থাকেন ঠিক যেন ডিজিটাল প্রযুক্তির মতো। শুধুমাত্র গ্রাম পুলিশের কল্যানে একটু সহানুভুতি যেন আমাদের বিবেক-বুদ্ধি দায়বদ্ধতার পরিসরে হারিয়ে গেছে। দারিদ্রের কঠিন আঘাতে নিস্পেষিত ওই বাহিনীর সদস্যরা তাদের বিচিত্র জীবন কাটাচ্ছে অবর্ননীয় ভাবে। এতে কারো যেন ওদের জন্য কিছুই করার নাই। একটা সময়ে দেখা যেতো পাড়া-গাঁয়ে গ্রাম পুলিশরা রাত জেগে এলাকা পাহারা দিতো। এলাকার আইন শৃঙ্খলা রক্ষায় স্থানীয় থানা পুলিশের পাশাপাশি গ্রাম পুলিশরাও দিচ্ছেন শতভাগ নিরাপত্তা সেবা। দীর্ঘদিনের ঐতিহ্য গ্রাম্য এ বাহিনীর কর্মযজ্ঞ নিয়ে এখন আর কেউ ভাবে না।
কয়েক দশক যাবত জাগ্রত পাহারার দায়িত্বে থাকলেও পৌর এলাকাসহ উপজেলার ৭টি ইউনিয়নের কয়েকশত গ্রাম পুলিশের এখনো ভাগ্যের চাকায় স্বচ্ছলতা আসেনি। তাদের পর্যাপ্ত বেতন ও সুযোগ-সুবিধা না থাকায় বর্তমান ডিজিটাল যুগে এসেও দারিদ্রতা ঘূছেনি। উপনেসিক আমলে এলাকায় শান্তি শৃঙ্খলা রক্ষায় গ্রাম পঞ্চায়েত, মহল্লার সর্দার, গ্রাম চৌকিদার ও দফাদার প্রচলন গড়ে উঠে। বিভিন্ন মহল থেকে সামান্য সম্মানী ভাতা ভোগকারী ওইসব বাহিনীর সদস্যরা বংশানুক্রমে আজকের এ বাহিনীই গ্রাম্য পুলিশ। পুরানোদের কাউকে কাউকে এখন অনেকেই চৌকিদার- দফাদার হিসাবে ডাকেন।
গ্রাম পুলিশের কল্যানে তৎকালীন পাকিস্তান সরকার উদ্যোগ নিলেও মাঝপথে থেমে যায়। ১৯৮৬ সালে সরকার তাদের মাসিক সম্মানী ভাতা ৫’শ টাকা থেকে ৭’শ টাকা নির্ধারন করেন। ১৯৯৫ সালে গড়ে ৭’শ টাকা থেকে আরও ১’শ টাকা বাড়িয়ে বছরে ২ ঈদে মাসিক ভাতার সমপরিমান বোনাস প্রচলন করেন। তবে সরকারী নির্ধারিত বেতনের পাশাপাশি স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদসহ নানাহ মাধ্যমে কিছূ কিছু সম্মানী পেয়ে আসছেন। ওদের নেতৃত্বে থাকা কতিপয় ব্যাক্তির কর্মকান্ড নিয়ে উঠে এসেছে নানাহ বির্তক। এছাড়া মাসের পর মাস বেতন বাকী, বিশেষ বিশেষ কর্মযজ্ঞে তাদের উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের পকেট বানিজ্যে কর্মফলের সুফল পাচ্ছে না তারা। গ্রাম পুলিশের দৈনন্দিন পোষাক, জুতা, বেল্ট, টুপিসহ বিভিন্ন নিরাপত্তা সরঞ্জাম নিয়েও অভিযোগ উঠেছে। স¤প্রতি বর্তমান সরকার রাজধানী ঢাকায় গ্রাম্য পুলিশ সমাবেশে তাদের কল্যানে অনেক কিছুই ঘোষনা আসলেও যা অনেকটাই আজ অনুপস্থিত। রাষ্ট্র ও এলাকার মানুষের নিরাপত্তা বিধানে গ্রাম পুলিশকে আধুনিক বাহিনী রূপে গড়ে তুলতে নিরাপত্তা সরঞ্জাম ও সরকারী গ্রেডে বেতন-ভাতা সহ অন্যান্য সুযোগ- সুবিধার কোন বিকল্প নেই।