খােলা বাজার২৪।। বৃহস্পতিবার, ৯ মার্চ ২০১৭: মোটা অংকের চাঁদা আদায়ে ব্যর্থ হয়ে গ্রাম পুলিশের নেতৃত্বে এক স্কুল ছাত্রকে নির্যাতনের ঘটনার চিত্র ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়ার পর তোলপাড় সৃষ্টি হয়েছে। নির্যাতিত ছাত্রকে সাজানো ইভটিজিং মামলায় আসামী করে ভূয়া নামে জেলহাজতে পাঠানোর অভিযোগ করেছে তার পরিবার।
হাতিয়া থানার মামলা নং- ০২, তারিখ ২/৩/১৭ইং এর আসামীর নাম মো. রিয়াদ উদ্দিন (২০) পিতা- জসিম উদ্দিন ডুবাই হলেও উক্ত মামলায় স্কুল ছাত্র আবদুল আলীম রিদয় (১৬) পিতা- আবদুল হাদীকে পুলিশ কোর্টে পাঠায়।
“মামলার আসামী মো. রিয়াদ উদ্দিন (২০) পিতা জসিম উদ্দিন ডুবাই। গ্রেফতার দেখিয়ে কোর্টে পাঠানো হয় আবদুল আলীম রিদয় (১৬) পিতা আবদুল হাদীকে”।
অভিযোগে প্রকাশ, হাতিয়া উপজেলার ৯নং বুড়ির চর ইউনিয়নের রেহানিয়া গ্রামের প্রবাসী আবদুল হাদীর শিশু পুত্র আবদুল আলীম রিদয় (১৬) স্থানীয় রেহানিয়া উচ্চবিদ্যালয় ৮ম শ্রেণীতে ছাত্র। গত ১ মার্চ বুধবার সন্ধ্যার পর ৪নং ওয়ার্ডের গ্রাম পুলিশ মহিউদ্দিন রিদয়কে উক্ত ওয়ার্ডের সাইফুল মেম্বার ডেকেছে বলে বাড়ী থেকে নিয়ে সাইফুল মেম্বারের বাড়ীর সামনে গাছের সাথে বেঁধে ফেলে। এরপর গ্রামপুলিশ মহিউদ্দিন, সাইফুল, রাশেদ, মাছুম, সেলিম, জিল্টু সহ রিদয়কে নির্যাতন শুরু করে। একপর্যায়ে তারা রিদয়কে দিয়ে মোবাইল ফোনে তার মা মিনারা বেগমের সাথে কথা বলায় এবং ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করে।
এঘটনা হাতিয়া থানার ওসিকে তাৎক্ষণিক জানানোর পরও রাতে রিদয়কে উদ্ধারে পুলিশ কোন ব্যবস্থা নেয়নি। সারারাত নির্যাতন করেও সন্ত্রাসী চক্র চাঁদা না পেয়ে পরদিন সাজানো মিথ্যা মামলায় আসামী সাজিয়ে আবদুল আলীম রিদয়কে হাতিয়া কোর্টে প্রেরণ করে। বিজ্ঞ বিচারিক ম্যাজিষ্ট্রেটের আদেশে আবদুল আলীম রিদয় (১৬) বর্তমানে নোয়াখালী জেলহাজতে রয়েছে।
এদিকে রেহানিয়া উচ্চবিদ্যালয়ের রেকর্ডপত্র যাচাই করে দেখা যায়, আবদুল আলীম পিতা- আবদুল হাদী ২০১১ সনে মধ্যহরণী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় থেকে প্রাথমিক শিক্ষা সমাপনী পরীক্ষায় পাস করে ৬ষ্ঠ শ্রেণীতে ভর্তি হয়। তার জন্মতারিখ ০১/০৭/২০০১ইং। জন্মনিবন্ধন সনদেও আবদুল আলীম এর জন্মতারিখ ০১/০৭/২০০১ইং সঠিক পাওয়া যায়।
শিশু আবদুল আলীমকে নির্যাতন করে ১০ লাখ টাকা চাঁদা না পেয়ে সাজানো ইভটিজিং মামলায় আসামী করার ষড়যন্ত্র হয়েছে বলে মনে করে মানবাধিকার কমিশন। হাতিয়া থানার মামলা নং- ০২, তারিখ- ২/৩/২০১৭ইং এর আসামী মো. রিয়াদ উদ্দিন (২০) পিতা- জসিম উদ্দিন রুবেল হয়, তাহলে উক্ত মামলায় শিশু আবদুল আলীম (১৬) পিতা- আবদুল হাদীকে আসামী দেখিয়ে কোর্টে সোপর্দ করার বিষয়টি প্রশ্নবিদ্ধ।
আবদুল আলীম রিদয় এর মা মিনারা বেগম বলেন- চকিদার মহিউদ্দিন আমার ছেলেকে সাইফুল মেম্বারের কথা বলে বাড়ী থেকে ডেকে নেয়। তারা আমার রিদয়কে সারারাত নির্যাতন করেছে। আমার কাছে ১০ লাখ টাকা চাঁদা দাবী করেছে। আমি টাকা না দেয়ায় মিথ্যা মামলা দিয়ে রিদয়কে পুলিশে দেয়। আমি ন্যায় বিচার চাই।