খােলা বাজার২৪।। সোমবার, ৩ এপ্রিল ২০১৭: হাওরের জেলা সুনামগঞ্জের দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলার সর্ববৃহৎ দুটি হাওরের ফসল রক্ষা বাঁধ ভেঙ্গে কয়েক হাজার হেক্টর বোর জমির ফসল তলিয়ে যাওয়ার ঘটনায় উপজেলার হাজারো কৃষকরা রবিবার দুপুর ২ টা থেকে বিকাল ৫ টা পর্যন্ত সিলেট সুনামগঞ্জ আঞ্চলিক সড়কের আস্তমা রাস্তার সামনে আস্তমা, কামরুপদলং, পার্বতীপুর, তালুকগাঁও, সুলতানপুর, সদরপুর,তেঘরিয়া, পাগলা, কান্দিগাঁও, আসামপুর, ইনাতনগর, ডুংরিয়া, উজানীগাঁও, জয়কলস এলাকার ৫ হাজার জনতা সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ মিছিল করে ঠিকারদার ও পানি উন্নয়ন বোর্ড কর্মকর্তাদের গ্রেফতার করে কঠোর শাস্তি প্রদানের দাবী জানান। খবর পেয়ে সুনামগঞ্জ জেলার অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা মো: শফিউল আলম,দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান হাজী আবুল কালাম, সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ফারুক আহমদ, দক্ষিণ সুনামগঞ্জ থানার ওসি আল আমিন ঘটনাস্থলে উপস্থিত হলে বিক্ষুব্দ জনতা বেরিবাঁধের কাজের ঠিকাদার, পিআইসি ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের কর্মকর্তাদের গাফিলতি খতিয়ে দ্রৃত বিচারের আওতায় আনা, দেখার হাওর ও জামখলা হাওর সহ উজেলার সবকয়টি হাওরের ঝুকিপূর্ণ বেরিবাধে সুইচ গেইট ও রাবার ড্যাম নির্মাণ করা, ছয়মাস এলাকাবাসীর খাদ্যের ব্যবস্থা করা ও দক্ষিণ সুনামগঞ্জকে দূর্গত এলাকা ঘোষনা করার দাবী জানান তারা। অবশেষে বিক্ষুব্দ জনতার তোেেপর মুখে পড়ে অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক শিক্ষা মো: শফিউল আলমসহ প্রশাসনের কর্মকর্তারা এসব দাবী জেলা প্রশাকের মাধ্যমে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে প্রেরণের আশ^াস দিলে অবরোধ তুলে নেন কৃষক ও জনতা। তবে দাবী বাস্তবায়ন না হলে আবারো অবরোধে নামবেন বলে হুশিয়ারী উচ্চারণ করেন তারা।
শনিবার রাতে জামখলা হাওরের শল¬া দাইড় ও দেখার হাওরের হলদিখাড়া আফার দিয়ে পানি প্রবেশ করে এই বাঁধ ভাঙ্গার ঘটনা ঘটে। এলাকার কৃষকদের অভিযোগ সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ড (পাউবোর) গাফিলতি ও সংশি¬ষ্ট বাঁধের ঠিকাদার, পিআইসি কমিটির সভাপতিদের উদাসীনতা বিল না পেলে কাজ করবেন না, শুধু বিলের জন্য অপেক্ষা করে দেরীতে কাজ শুরু করায় এবং বাঁধের পুরো কাজ বাস্তবায়ন না করার কারণেই কৃষকের স্বপ্নের সোনার ফসল তলিয়ে গেছে। খোঁজ নিয়ে দেখা গেছে একেকটি বাঁধে যে পরিমান বরাদ্দ দেওয়া হয় তার অর্ধেকের ও কম কাজ করানোর ফলেই ফসল ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে,এছাড়া চৈত্র মাসে তড়িঘড়ি করে মাটি খাটানোর ফলে ও বাঁধের নিকট থেকে মাটি উত্তোলনের ফলে একটু বৃষ্টি হলেই মাটি গলে যায় ও বাঁধে ফাটল ধরে বাঁধ ভেঙ্গে যায়। পাউবো ও পিআইসি কমিটির লোকজন মিলেমিশে কৃষকের সোনার ফসল নিয়ে চিনিমিন খেলে মোটা অংকের টাকা আতœসাৎ করার কারণেই প্রতিবছর সামান্য বৃষ্টিাপাত হলেই বাঁধ ভেঙ্গে পানি হাওরে প্রবেশ করে। কৃষকদের ফসলের ক্ষতিপূরণ ও বেরিবাঁধের সাথে জড়িতদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য হাওর পাড়ের হাজার হাজার ক্ষতিগ্রস্ত কৃষকের আহাজারি। দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার মোঃ আলমগীর কবির জানান: আমরা প্রশাসনের পক্ষ থেকে বেরিবাঁধ রক্ষার জন্য সর্বাত্বক চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি। সার্বক্ষনিকভাবে সবগুলো হাওরের খোঁজ খবর রাখছি।
এ ব্যপারে দক্ষিণ সুনামগঞ্জ উপজেলা চেয়ারম্যান হাজী আবুল কালাম জানান: ডিসেম্ভর জানুয়ারী মাসে বেরিবাঁধের কাজ টেকসইভাবে না করিয়ে চৈত্র মাসে তড়িঘড়ি করে কাজ করানোর ফলেই কৃষকরা প্রতিবছরই এই ধরনের ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে। তিনি আরও বলেন উর্দ্ধতন কর্তৃপক্ষের কাছে আমার সুপারিশ নির্ধারিত সময়েই যেন বরাদ্ধ অনুযায়ী দূর্নীতি জালিয়াতি না করে পুরো কাজ করানো হয়। কাজের বিল নিয়ে পাউবোর কালক্ষেপনের কারণেই পিআইসি সঠিক সময়ে কাজ করে না ,এটি ফসলহানির আরেকটি মারাত্বক কারণ।