খােলা বাজার২৪।। শনিবার, ২৯ এপ্রিল ২০১৭: সরকার হাওরবাসীকে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে বলে অভিযোগ করে বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান শামসুজ্জামান দুদু বলেছেন, হাওর অঞ্চলের দুর্গতি সরকারের দুর্নীতির অংশ, ব্যর্থতার নগ্ন ইতিহাস। হাওরবাসী সরকারের এই ব্যর্থতা তাদেরকে চোখে আঙ্গুল দিয়ে দেখিয়ে দিয়েছে। তারপরেও সরকার অসহায় হাওরবাসীকে এড়িয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে।
শনিবার জাতীয় প্রেসক্লাবের সামনে “হাওরের মহাবিপর্যয়কে জাতীয় দুর্যোগ ঘোষণা এবং হাওরবাসীকে রক্ষায় দ্রুত রাষ্ট্রীয় পদক্ষেপ গ্রহনের দাবীতে” বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি-বাংলাদেশ ন্যাপ ঢাকা মহানগর আয়োজিত নাগরিক মানববন্ধনে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
ন্যাপ ঢাকা মহানগর সদস্য সচিব মোঃ শহীদুননবী ডাবলু’র সভাপতিত্বে ও যুগ্ম আহ্বায়ক অধ্যক্ষ নজরুল ইসলামের সভাপতিত্বে মানববন্ধন কর্মসচীতে প্রধান বক্তা হিসাবে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ ন্যাপ মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া, সংহতি প্রকাশ করে বক্তব্য রাখেন বাংলাদেশ জাতীয় দলের চেয়ারম্যান এডভোকেট সৈয়দ এহসানুল হুদা, এনপিপি মহাসচিব মোস্তাফিজুর রহমান মোস্তফা, বিএনপি নেতা খালিদ সাইফুল্লাহ সোহেল, কল্যাণ পার্টি ভাইস চেয়ারম্যান সাহিদুর রহমান তামান্না, এনডিপি প্রেসিডিয়াম সদস্য মোঃ মঞ্জুর হোসেন ঈসা, বিএনপি ঢাকা মহানগর দক্ষিনের সহ-সভাপতি মোহাম্মদ ফরিদউদ্দিন, জিনাফ সভাপতি মিয়া মোঃ আনোয়ার, ন্যাপ ভাইস চেয়ারম্যান কাজী ফারুক হোসেন, সম্পাদক মোঃ কামাল ভুইয়া, দেশবাঁচাও মানুষ বাঁচাও আন্দোলনের সভাপতি কেএম রাকিবুল ইসলাম রিপন, যুবনেতা আবদুল্লাহ আল কাউছারী, ছাত্রনেতা সোলায়মান সোহেল প্রমুখ।
সরকারের ব্যর্থতা প্রমাণ হয়ে যাবে যার কারণ তারা এখনও হাওর অঞ্চলকে দুর্গত ঘোষণা করছে না এমন অভিযোগ করে শামসু্জ্জামান দুদু বলেন, আওয়ামী লীগ, যুবলীগের নেতাকর্মীরা টেন্ডার নিয়ে ঐ সমস্ত এলাকায় কাজ করেছেন। তাদের দুর্নীতির প্রমাণ হওয়ার ভয়েই সরকার এখনও হাওর অঞ্চলকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করছে না।
এ সময় তিনি সরকারের প্রতি হাওর অঞ্চলগুলোকে অনতিবিলম্বে দুর্গত এলাকা ঘোষণার জোড় দাবি জানিয়ে বলেন, এখন বিভেদের সময় নয়। কেন আপনারা বিরোধীদলকে ত্রাণ তৎপরতায় সহযোগিতা না করে প্রধানমন্ত্রী যাবেন বলে বাধা দিচ্ছেন? বাধা না দিয়ে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করে বিরোধীদলগুলোর ত্রাণ তৎপরতায় সহযোগিতা করুন।
হাওর অঞ্চলে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া না যাওয়ায় প্রশ্ন তোলেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদেরের সমালোচনা করে দুদু বলেন, সর্ব প্রথম হাওর অঞ্চলে বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর গিয়েছিলেন, তার আগে ২০ দলীয় জোটের নেতাকর্মীরা ছাড়া কেউ যায়নি। তিনি ওবায়দুল কাদের আমাদের অগ্রজ বড় ভাই একটু বেশি কথা বলেন, কিন্তু বেশি কথা বললে যে বেশি ভুল হয় তিনি মাঝে মধ্যে ভুলে যান। আমরা তার কাছে জ্ঞান সমৃদ্ধ দায়িত্বশীল কথা আশা করি।
প্রধান বক্তার বক্তব্যে এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া বলেছেন, হাওর এলাকার অবস্থা অত্যন্ত সংকটাপন্ন। কিন্তু এ ব্যাপারে সরকারের তেমন কোনো তৎপরতা পরিলতি হচ্ছে না। সরকারের একজন সচিব বলেছেন, কোনো এলাকার অর্ধেক মানুষ মারা না গেলে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করা যাবে না, যা কোনোভাবেই মেনে নেয়া যায় না।
তিনি বলেন, হাওর অঞ্চলের হাহাকারের কারণ যেমন প্রাকৃতিক, তেমন মনুষ্য সৃষ্টি। যাদের কারণে এ ঘটনা ঘটেছে তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান করতে হবে। এত বিপর্যয় ও ক্ষয়-ক্ষতির পরেও কেন এ অঞ্চলকে দুর্গত এলাকা ঘোষণা করা হলো না তা জাতির নিকট বোধগম্য নয়।
গোলাম মোস্তফা ভুইয়া আরো বলেন, হাওর এলাকা ডুবে গিয়েছে, আগামী বৈশাখের আগে ঐ এলাকা ভাসবে না। সুতরাং এই মৌসুমে আর ফসল ফলানোর সুযোগ নেই। কোনো সবজি ফলানোর সম্ভাবনাও নেই। সুতরাং এসকল এলাকায় খাদ্য সরবরাহে সরকারকেই দায়িত্ব নিতে হবে। হাওরাঞ্চলের বিষয়টি একটি জাতীয় দুর্যোগ। এসকল এলাকার মানুষকে ত্রাণ সহায়তা দিলেই হবে না, তাদের ঋণও মওকুফ করতে হবে। বাঁধ নির্মাণে যে দুনীতি হয়েছে তা তদন্ত হওয়া প্রয়োজন।