Thu. May 1st, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলা বাজার২৪।। শনিবার, ২৭ মে, ২০১৭: 3ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইসলামের ইতিহাস ও সংস্কৃতিক বিভাগের অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ ইব্রাহিম বলেছেন, ইসলাম সৌন্দর্যের চর্চা করে। আল্লাহ স্বয়ং সুন্দর এবং তিনি সৌন্দর্য পছন্দ করেন। এছাড়া স্থাপত্য-শিল্পকলার চর্চার দিক থেকে ইসলাম সবচেয়ে বেশি সমৃদ্ধ। হযরত আদম (আ.) থেকে শুরু করে এখন পর্যন্ত মানুষের যত কীর্তি আছে ইসলাম সবই সংরক্ষণের পক্ষে।
সুপ্রীমকোর্টের প্রাঙ্গণ থেকে ভাস্কর্য অপসরণ নিয়ে বিবিসি বাংলার সাঙ্গে এক সাক্ষাৎকারে ড. মোহাম্মদ ইব্রাহিম এসব কথা বলেন।
বেশ কিছুদিন থেকেই সুপ্রীমকোর্ট প্রাঙ্গণ থেকে ভাস্কর্য সরিয়ে ফেলার দাবি তোলার প্রেক্ষিতে ভাস্কর্য সরিয়ে ফেলার পর নতুন করে সারদেশের সকল ভাস্কর্য সরিয়ে ফেলার দাবি তুলেছেন হেফাজতে ইসলামের ক’জন নেতা। কিন্তু ইরান, মালয়েশিয়া, ইন্দোনেশিয়া বা তুরস্কের মতো বিশ্বের অনেক মুসলিম দেশেই নানা ধরনের ভাস্কর্য রয়েছে। ইসলাম ধর্মের সঙ্গে স্থাপত্য-ভাস্কর্যের কী কোন দ্বন্দ্ব রয়েছে?
এ প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ইসলাম যেকোনো স্থুলতা, নোংরামী, অসুন্দরের পরিপন্থী। অর্থাৎ ইসলাম সৌন্দর্যে বিশ্বাসী। স্থাপত্য-শিল্পকলার চর্চার দিক থেকে সবচেয়ে সমৃদ্ধ ইসলাম। ভাস্কর্য শিল্প সব সময়ই ইসলামের পৃষ্ঠপোষকতা পেয়েছে। খৃষ্ট সপ্তম শতাব্দী থেকে বিগত দেড় হাজার বছরের ইসলামের ইতিহাস, বিশ্বের বিভিন্ন জায়গার মুসলমানদের শিল্পকর্ম অন্যতম মূল্যবান নিদর্শন হয়ে আছে। পৃথিবীর প্রায় সকল উন্নত দেশে ইসলামী শিল্পকলা নিয়ে পড়াশোনা পর্যন্ত আছে। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ে এ বিষয়ে পড়াশোনা আছে। এছাড়া বিভিন্ন গ্যালারিতে ইসলামী শিল্পকর্মগুলো ব্যাপকভাবে খ্যাত। সৌন্দর্যকে একেকজন একেকভাবে দেখে। তারপরেও একটি সাধরণ সংজ্ঞায় বলা যায়, সৌন্দর্য হলো সব রকম সংকীর্ণতার উর্ধ্বে একটি দৃষ্টিভঙ্গির নাম।
বিশ্বের সবচেয়ে বড় মুসলিম দেশ ইন্দোনেশিয়ায় বৌদ্ধ মন্দির আছে, ইরানের মতো দেশেও বিশিষ্ট ব্যক্তিবর্গের প্রচুর ভাস্কর্য আছে। বিশ্বের বিভিন্ন দেশই তা লক্ষ্য করা যায়। সেসব দেশের প্রেক্ষাপটে ভাস্কর্য এবং মুসলিম বিশ্বাসের সহাবস্থান কীভাব?
তিনি বলেন, যেসব দেশে ইসলামসহ আরও অন্য ধর্মাবলম্বী মানুষ আছেন তারা তাদের ধর্মীয় উপাসনালয়েও মূর্তি রাখেন, সেখানে মুসলামন আপত্তি করে তাহলে কী চলবে? ভাস্কর্য ইতিহাসের একটি বিশেষ নিদর্শন এবং ইতিহাসের উপকরণও। যেমন আদি মানুষরা গুহায় চিত্রাঙ্কন করতেন, সেগুলো তো আমাদের ইতিহাসের অংশ। সেগুলো কীভাবে বাদ দেয়া যাবে?
ভাস্কর্য নিয়ে বাংলাদেশে তৈরি হওয়া বিরোধী পরিস্থিতির কারণ সম্বন্ধে তিনি বলেন, বাংলাদেশে সাধারণত এরকম দ্বন্দ্ব নেই।দ্বন্দ্বটি সম্পূর্ণ ধর্মীয় দৃষ্টিভঙ্গিতে। একটি জাতীয় ঈদগাহর পাশে, বিচারালয়ের সামনে মূর্তি স্থাপন করা হলো। এটির প্রাসঙ্গিকতা কী? এই মূর্তিটি যদি কোন পাহাড়ে স্থাপন করা হতো তাহলে ইসলামপন্থীদের আপত্তির কোন প্রসঙ্গই থাকে না। তাহলে বিতর্কিত স্থানে মূর্তি স্থাপনের প্রাসঙ্গিকতা আসলে কী? অন্যদিকে গ্রীক দেবীর মূর্তির প্রাসঙ্গিকতা কী? আমরা তো কোন সময় গ্রীক সংস্কৃতিতে ছিলাম না। আমাদের দেশে কোন সময় গ্রীক সংস্কৃতির চর্চাও হয়নি আর আলেকজেন্ডারও তো কখনো বাংলাদেশে আসেননি। এখানে প্রশ্ন দাঁড়াচ্ছে, দেবীর মূর্তি কেন সুপ্রীমকোর্ট ও ঈদগাহর কাছাকাছি আসলো?