খােলা বাজার২৪।। রবিবার, ১১ জুন, ২০১৭: একাদশ শ্রেণির ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে ভর্তির আবেদনের ক্ষেত্রে ভর্তিচ্ছুদের সহযোগিতা করতে সংশ্লিষ্ট ওয়েবসাইটে ‘হেল্প লাইন’ হিসেবে কিছু সহায়ক ফোন নম্বর দেওয়া রয়েছে। তবে ভর্তির আবেদন সংক্রান্ত কাজে নানা সমস্যার সম্মুখীন হয়েও ওই সব নম্বরে ফোন করে কোন সহযোগিতা পাচ্ছেন না ভর্তিচ্ছু এবং তাদের অভিভাবকরা। ফলে বিপাকে পড়া এসব শিক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকরা বিভিন্ন কম্পিউটারের দোকানে গিয়ে উচ্চ মূল্য দিয়ে সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করছেন বলে অভিযোগ করেছেন অনেকে।
জানা যায়, ২০১৭-১৮ শিক্ষাবর্ষে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকারের শিক্ষা মন্ত্রনালয় ও শিক্ষাবোর্ড কর্তৃক অনুমোদিত কলেজ/সমমান প্রতিষ্ঠান সমূহে একাদশ শ্রেণিতে এসএমএস ও অনলাইনে ভর্তির ১ম পর্যায়ে আবেদন প্রক্রিয়া গত ৯ মে থেকে শুরু হয়ে ২৬ মে শেষ হয়। আবেদন প্রক্রিয়া শেষে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তির জন্য ১ম পর্যায়ে নির্বাচিতদের তালিকা বা ফলাফল ০৫ জুন প্রকাশ করা হয়েছে। তবে আবেদন করার সময় যেসব মোবাইল নম্বর দেওয়া হয়েছিল ফলাফল সেসব নম্বরে ক্ষুদে বার্তায় পাঠানোর কথা থাকলেও অনেকেই তা পাননি বলে অভিযোগ করেছেন। ফলে নির্বাচিতদের তালিকা জানতে বাধ্য হয়েই বাজারের কম্পিউটারের দোকানগুলোতে ভীড় করেন অনেক ভর্তিচ্ছু ও তাদের অভিভাবকরা।
এদিকে যেকোন সমস্যায় ভর্তির আবেদন সংক্রান্ত ওয়েবসাইটে দেওয়া হেল্প লাইনে ফোন করেও কাউকে পাওয়া যাচ্ছেনা বলে বাংলাদেশ প্রতিদিনের কাছে অভিযোগ করেছেন অনেকে। টাঙ্গাইল সদরের সাদিয়া আফরিন বৃষ্টি জানান, ছোট ভাইয়ের ভর্তির জন্য ৫টি কলেজ নির্বাচন করে তিনি তার মুঠোফোনের নম্বরটি দিয়ে আবেদন করেছিলেন। ফলাফল ঘোষণা হলে অনেকেই মুঠোফোনে ক্ষুদেবার্তা পেলেও তিনি কোন বার্তা পাননি। পরে বাধ্য হয়েই বাজারের কম্পিউটারের দোকানে গিয়ে ফলাফল জেনেছেন। তবে ভর্তির প্রাথমিক কার্যক্রম সম্পন্ন করার জন্য রেজিস্ট্রেষন কোড মুঠোফোন পাওয়ার কথা থাকলেও তিনি তা পাননি। বৃষ্টি অভিযোগ করে বাংলাদেশ প্রতিদিনকে বলেন, রেজিস্ট্রেশন কোডটি কিভাবে পাওয়া যাবে তা জানার জন্য ওয়েবসাইটের নিচে দেওয়া ৪টি নম্বরে একাধিক বার চেষ্টা করেও কাউকে পাওয়া যায়নি। পরে বাধ্য হয়ে কম্পিউটারের দোকন থেকে ৩০০টাকা দিয়ে কোডটি বের করতে হয়েছে।
এদিকে হবিগঞ্জের ফাতেমা জাহান নামের এক ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী জানান, কমপক্ষে ৫-৬টা নাম্বারে ফোন দিয়েছি কিন্তু সবকটাই নট ইন সার্ভিস অথবা বন্ধ দেখায়। প্রয়োজনের সময় কাজে না লাগলে এসব নাম্বার এখানে দেওয়ার কি দরকার।
এসব অভিযোগের সত্যতা যাচাই করতে গত বুধবার থেকে (০১৭৫১৬২৪৯০০, ০১৭২৭২৩৩৫২৪, ০১৭৫১৬২৪৪৪৪ ও ০১৭৩২৪৮৭৩৩৪) এসব নম্বরে কয়েক দফা যোগযোগের চেষ্টা করেও কাউকে পাওয়া যায়নি। বরং কখনো কখনো দু’একটি নম্বর বন্ধ দেখিয়েছে। এছাড়া আজ সকাল ৯টার পর থেকে কয়েক বার চেষ্টা করা হলে সবগুলো নাম্বারই ব্যস্ত দেখিয়ে সংযোগ বিচ্ছিন্ন হয়েছে।
অন্যদিকে একাদশ শ্রেণিতে ভর্তিতে প্রকাশিত প্রথম মেধা তালিকায় ১২ লাখ ৪৯ হাজার ৮৪৮ জন ছাত্রছাত্রী কলেজ মনোনয়ন পেলেও ভর্তি নিশ্চায়ন করেনি দুই লাখ ৯ হাজারের বেশি শিক্ষার্থী। শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত ১০ লাখ ৪০ হাজারের কিছু বেশি শিক্ষার্থী কলেজ নিশ্চায়ন করেছে।
জানা গেছে, গত ৬ থেকে ৮ জুন রাত ১২টা পর্যন্ত কলেজ নিশ্চায়নের সময় নির্ধারিত থাকলেও আশানুরূপ নিশ্চায়ন না হওয়ায় সময় বাড়িয়ে শনিবার দুপুর ১২টা পর্যন্ত করা হয়। যারা কোনো কলেজ মনোনয়ন পায়নি বা পছন্দমতো কলেজ না পাওয়ায় ভর্তি নিশ্চায়ন করেনি তারা পুনরায় কলেজ মনোনয়ন চেয়ে আবেদন করতে পারবে। ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের কলেজ পরিদর্শক মো. আশফাকুস সালেহীন এসব তথ্য জানান।
আসন ফাঁকা সাপেক্ষে আগামী ১৩ জুন দ্বিতীয় মেধা তালিকা প্রকাশ করা হবে। ১৪ ও ১৫ জুনের মধ্যে দ্বিতীয় মেধা তালিকায় মনোনীতদের নিশ্চায়ন সম্পন্ন করতে হবে। কলেজ না পাওয়া শিক্ষার্থীরা তৃতীয় পর্যায়ে আবেদন করতে পারবে ১৬ ও ১৭ জুন। ১৮ জুন সর্বশেষ বা তৃতীয় মেধা তালিকা প্রকাশ করা হবে। তৃতীয় তালিকায় মনোনীতদের নিশ্চায়ন করতে হবে ১৯ জুনের মধ্যে। আগামী ১ জুলাই একাদশে প্রথম বর্ষে ক্লাস শুরু হবে।
এদিকে হেল্প লাইন নিয়ে অভিযোগের ব্যাপারে ঢাকা শিক্ষা বোর্ডের সিনিয়র সিস্টেম অ্যানালিস্ট প্রকৌশলী মো. মনজুরুল কবির বলেন, ১২ লাখ শিক্ষার্থীর চাপে ফোন ব্যস্ত থাকতেই পারে। তবে কোন ফোন বন্ধ থাকার কথা নয়। খবর আমাদের সময়.কমের