Sun. Jun 22nd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলা বাজার২৪। মঙ্গলবার, ১৪ নভেম্বর, ২০১৭:নরসিংদী প্রতিনিদি মো: রাসেল মিয়া: নরসিংদী জেলার তিনটি উপজেলা  রায়পুরা, বেলাব ও শিবপুরে মৌসুম অনুযায়ী শিম চাষ করেন চাষিরা। শীতকাল আসতেই জেলার বিভিন্নস্থানে ব্যাপকভাবে শিম চাষ শুরু হয়েছে। গাছে গাছে ফুল শোভা পাচ্ছে। তার মাঝে গাছে থোকায় থোকায় শিম ধরেছে। প্রতিদিনই শিমগুলো গাছ থেকে সংগ্রহ করে বিক্রির জন্য বাজারে নিয়ে যাচ্ছেন চাষিরা।

ভাল উৎপাদন এবং লাভ পাওয়ায় হাসি ফুটেছে শিম চাষিদের মুখে। শিমের চাহিদা বেড়ে যাওয়ায় ও লাভজনক হওয়ায় প্রতি বছরই এ জেলায় বাড়ছে শিমের আবাদ। জেলায় উৎপাদিত শিম শুধু দেশেই নয়, প্রতিবেশি দেশ ভারতে ও মধ্যপ্রাচ্যে রপ্তানী হচ্ছে। বলা যায়, নরসিংদীর শিম চাষিদের সুদিন ফিরে এসেছে।

মাত্র ১ হাজার টাকা খরচ করে একেক জন কৃষক মৌসুমে আয় করছেন অন্তত ১০ হাজার টাকা। ফলে এখানকার কৃষকরা খুবই খুশী। জেলার বাহুবল, রায়পুরা, বেলাব ও শিবপুর উপজেলাসহ বিভিন্নস্থানে শিম চাষ হচ্ছে। এ বছর চাষিরা প্রতি কেজি শিম ৭০ টাকা হারে বাজারে বিক্রি শুরু করেন।

বর্তমানে পাইকারী বাজারে ৪০/৫০ টাকা হারে বিক্রি হচ্ছে। খুচরা বাজারে এর মূল্য প্রায়ই দ্বিগুণ হয়।কৃষকরা জানান, বছরের মে/জুন মাসে শিমের আগাম চাষ শুরু হয়। এ সময় শিমের কেজি ৭০/৮০ টাকায় বিক্রি হয়। এদিকে সাধারণত মৌসুম ভিত্তিক আগস্ট/সেপ্টেম্বর মাসে শিমের আবাদ শুরু হয়। আবার শুরুর ৯০ দিনের মধ্যে ফলন আসে এবং তা বাজারজাত করা হয়। এ উৎপাদন বিরামহীনভাবে মার্চ মাসে গিয়ে শেষ হয়।

নরসিংদীতে আশ্বিনা, কাকিয়া, বোয়ালগাদা, বারি-১, বারি-২ সহ কয়েকটি জাতের শিমের আবাদ বেশি হয়। তবে শিমের কাঁচা ও শুকনো বীজের চাহিদাও বেশি। তেমনি শিমের মৌসুমে কাঁচা বীজ খুচরা বাজারে ১০০ থেকে ৮০ টাকায় বিক্রি হচ্ছে। তবে মৌসুম শেষে শুকনো বীজের কেজি ১০০ থেকে ১২০ টাকায় বিক্রি হয়।

জেলায় প্রায় ১০ হাজারেরও বেশি চাষি শিমের আবাদ করে থাকে। এর মধ্যে কমপক্ষে ৫ হাজার চাষি রয়েছেন যারা বাণিজ্যিকভাবে শিম চাষ করে আসছেন। তাদের খামারে কমপক্ষে ১ থেকে ২ হাজার শ্রমিক প্রতিনিয়িত কাজ করছে। কৃষি বিভাগের দাবী, তারা কৃষকদের এই সাফল্যে যথাসময়ে সঠিক পরামর্শ দিয়ে সাহায্য করছেন। জেলার সবচেয়ে বড় শিমের বাজার বসে শিবপুর উপজেলার যশোর বাজারে, বেলাব উপজেলায় বারৈচা বাজারে, রায়পুরা উপজেলায় মরজাল বাজারে। জানা যায়, ঢাকা বিভাগের সবচেয়ে বেশি পরিমাণে কাঁচা মাল এই বাজারগুলোতে বিক্রি হচ্ছে। শিম ছাড়াও এ বাজারে নানা ধরনের সবজি পাওয়া যায়। প্রায় ৩০ বছর ধরে এ বাজার বসে আসছে। এ বাজারের পাশেই শিম বাগান রয়েছে। প্রতি বছর এর চাষ বৃদ্ধি পাচ্ছে।

কৃষকরা ভাল ফলনে খুশী হলেও কিছু দাবীর কথা বললেন তারা। সরকারি ঋণ প্রদানে ব্যাংকগুলোর চরম হয়রানী ও সেচ সুবিধা না পাওয়ার সমস্যায় ভূগছেন তারা। ব্যাংক ঋণ ও সেচ সুবিধা পেলে তাদের এই আবাদ আরও প্রসারিত হতো। এমনকি অনেক চাষি মহাজনের কাছ থেকে চড়া সুদে অর্থ এনে ক্ষতিগ্রস্থ হওয়ার হাত থেকে রক্ষা পেতেন।