খােলা বাজার২৪। মঙ্গলবার, ২৮ নভেম্বর, ২০১৭: মোবাইল অ্যাপ থেকেই জাল আধার কার্ড বানিয়েছিল কলকাতায় আটক বাংলাদেশি জঙ্গিরা। জিজ্ঞাসাবাদে এমনই চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে। উল্লেখ্য, জাল আধার কার্ড থেকে শুরু করে প্যান কার্ড, ড্রাইভিং লাইসেন্স, এমনকী পাসপোর্টও জাল করা হচ্ছে মোবাইল স্টোরে পাওয়া অ্যাপের মাধ্যমে। প্রাথমিকভাবে অনুসন্ধান করে দেখা গিয়েছে, বিভিন্ন অপারেটিং সিস্টেমের স্টোরে এরকম অন্তত শতাধিক অ্যাপ রয়েছে। যেখান থেকে অনায়াসে কয়েক মিনিটের মধ্যে ‘জাল’ পরিচয়পত্র তৈরি হচ্ছে।
জিজ্ঞাসাবাদে আরও জানা গেছে, উত্তর ২৪ পরগনার বনগাঁয় একটি ঘাঁটি তৈরি হয়েছে, যেখানে এরকম জাল পরিচয়পত্র তৈরি করা হচ্ছে। আটককৃতদের দাবি, সীমান্ত পার হওয়ার পর বসিরহাট, হাবরা এলাকায় পৌঁছে দালালদের সঙ্গে যোগাযোগ করছে জঙ্গিরা। দালালরা জঙ্গিদের ছবি তুলে তা পাঠিয়ে দিচ্ছে বনগাঁর ঘাঁটিতে। সেখানে মোবাইল অ্যাপ থেকে সবরকম জাল পরিচয়পত্র তৈরি হয়ে পৌঁছে যাচ্ছে জঙ্গিদের হাতে। গোয়েন্দারা আরও জেনেছেন, বনগাঁর প্রধান ঘাঁটি ছাড়াও তার আশেপাশে আরও ছোট ছোট অন্তত ৩০-৪০টি ঘাঁটি রয়েছে। সেখানে একইভাবে জাল পরিচয়পত্র তৈরি করা হচ্ছে।
আটককৃতদের জিজ্ঞাসাবাদ করে আরও জানা গিয়েছে, শুধু বনগাঁ নয়, অতি-সম্প্রতি মালদহতেও একইরকম একটি সেন্টার খোলা হয়েছে। সীমান্ত পেরিয়ে যারা বিহার-উত্তরপ্রদেশ যাবে, তাদের জন্যই মালদহে এই নতুন সেন্টার খোলা হয়েছে। এত কম খরচে এবং দ্রুত জাল পরিচয়পত্র বানানো সম্ভব হওয়ায়, জঙ্গি অনুপ্রবেশের সংখ্যা আরও বাড়বে বলেই আশঙ্কা গোয়েন্দাদের।
অন্যদিকে, উত্তরপ্রদেশ এসটিএফ থেকে সম্প্রতি কলকাতা এসটিএফকে জানানো হয়েছে, গত আগস্ট মাসে উত্তরপ্রদেশের মুজাফ্ফরনগর চারথাওয়ালের কুটেসারা গ্রাম থেকে আনসারুল্লা বাংলা টিমের (এবিটি) সদস্য আবদুল্লা আল মামনকে গ্রেফতার করা হয়। তার কাছ থেকে ১২টি জাল আধার কার্ড, পাসপোর্ট এবং ড্রাইভিং লাইসেন্স উদ্ধার হয়েছিল। সবই মোবাইল অ্যাপের মাধ্যমে তৈরি করা।
উল্লেখ্য, ময়মনসিংহের বাসিন্দা মামন ২০১১ সালে অসম দিয়ে ভারতে প্রবেশ করেছিল। তারপর থেকে এদেশে এবিটি’র নেটওয়ার্ক তৈরি করার সঙ্গে সঙ্গে সদস্যদের জাল পরিচয়পত্র তৈরি করে দিত এই মামন। দেওবন্দে একটি মাদ্রাসায় শিক্ষক হিসাবে চাকরি করার সময় তাকে গ্রেফতার করা হয়। মামনের কাছ থেকে নাম পেয়ে মহম্মদ ইমরান, রাজিউদ্দিন এবং ফিরদৌস নামে যশোরের আরও তিনজনকে গত সেপ্টেম্বরে গ্রেফতার করা হয়। এদের মধ্যে রাজিউদ্দিন একটি মাদ্রাসায় শিক্ষক হিসাবে এবং বাকিরা মাদ্রার ছাত্র হিসাবে এদেশে থেকে এবিটি’এর বাংলা মডিউল তৈরি করছিল। এদের কাছ থেকে ফৈজান নামে আরও একজনের নাম পাওয়া গিয়েছে। যে বর্তমানে উত্তরপ্রদেশ, বিহার, পশ্চিমবঙ্গ এবং অসমে এবিটি’র নেটওয়ার্ক তৈরির কাজ করছে।