Thu. Mar 13th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলা বাজার২৪। শুক্রবার, ২২ ডিসেম্বর, ২০১৭: ব্রিটিশ রাজপরিবার ঐতিহ্যের পাশাপাশি বিশেষভাবে আর্কষণীয় রক্ষণশীলতা, কঠোর নিয়ম-কানুন ও গোপনীয়তার জন্য। রাজপরিবারের প্রতিটি সদস্য অত্যন্ত কঠোরভাবে কিছু গোপন নীতিমালার দ্বারা আবদ্ধ।
১. জনসম্মুখে দম্পতিরা দুরুত্ব বজায় রাখেন, বিশেষ করে ভ্রমণকালীন সময়ে, তারা একে অপরের হাত ধরেন না। এছাড়া রাজদম্পতিদের এক সন্তান বেছে নেয়ার সুযোগ নেই।
২. দুই উত্তরাধিকারীর এক সঙ্গে কোথাও সফর বা ভ্রমণের অনুমতি নেই। ১২ বছর পার হলেই বাবা প্রিন্স উইলিয়ামের থেকে আলাদা হয়ে যাবেন প্রিন্স জর্জ। এখনকার মত দু’জনে একসঙ্গে আর বিমানে উঠতে পারবেন না।
৩. রাজপরিবারের প্রত্যেক সদস্যসহ প্রিন্স জর্জেরও আছে ড্রেস কোড। তাকে দর্জির সেলানো শার্টই পরতে হয়। রাজপরিবারের কোন সদস্যকে সাধারণ কোন পোশাক পরতে দেখা যায় নি। মৃত্যু কিংবা কোন সদস্যের কোন দূর্ঘটনায় তাদের অবশ্যই পোশাকের নীতিমালা অনুসরণ করতে হয়। আগে লোমের মত পশমি পোশাক ব্যবহারে নিষেধাজ্ঞা থাকলেও এখন তা নেই। প্রতিটি আনুষ্ঠানিকতায় নারীদের হ্যাট পরতে হয়। তবে সন্ধ্যা ছয়টার পর হ্যাট খুলে ৪৫ ডিগ্রী কোণে টায়রা পরতে হয়। যদিও এই টায়রা খুবই সংরক্ষিত। রাণীর পোশাক হয় উজ্জল,যাতে রাণীকে ভিড়ের মাঝেও আলাদা করে শনাক্ত করা যায়। নারীদের শালীনভাবে দুই পা ভাঁজ করে বসতে হয়, তাদের বড় গলার জামা পরার অনুমতি নেই।
৪. রাণী তার স্টাফদের গোপন সিগনাল দেন। যদি তিনি তার বাম হাত ডান হাতের দিকে এগিয়ে নেন তার মানে তিনি কথোপকথন শেষ করতে চাচ্ছেন। ডিনারে যদি রাণী তার ব্যাগ খাবার টেবিলে রাখেন তার মানে পাঁচ মিনিটের মধ্যে তিনি খাবার শেষ করতে চাচ্ছেন। ডিনারে রাণী প্রথমে তার ডান পাশের ও পরে বাম পাশের ব্যক্তির সঙ্গে কথা বলেন।
৫. রাজপরিবারের পুরুষরা মাথা নত করে ও নারীরা হাঁটু গেড়ে রাণীকে কুর্নিশ করে থাকেন। কথোপকথনের পর আগে রাণী সরে যাবেন ,অন্যকেউ রাণীর দিকে পৃষ্ঠপ্রদর্শন করতে পারবেন না। এমনকি শিশুদের কাছ থেকেও আনুগত্য আশা করা হয়। প্রিন্স ফিলিপেরও রাণীর সঙ্গে হাঁটার সময় একটু পেছনে হাঁটতে হয়। এমনকি পরিবারের সদস্যদের সঙ্গে খাবার খাওয়ার সময় রাণীর খাবার শেষ হওয়ার পর আর কোন সদস্য খাবার খেতে পারবেন না। রাণী যখন দাঁড়াবে, সবাইকে দাঁড়াতে হবে। রাণীর ড্রাইভিং লাইসেন্স বা গাড়ির নম্বর প্লেট নেই।
৬. বিয়ের পর রাজপরিবারের সদস্যদের নতুন নাম দেয়া হয়। ডাক নাম অনেকে ভুলেই যায়। কেট মিডলটনের (ক্যাথরিন) নামটির এখন প্রায় অস্তিত্বই নেই। ১৯৭২ সালের রাজকীয় বিয়ে আইন অনুসারে কাউকে বিয়ের প্রস্তাব দেয়ার আগে অবশ্যই রাণীর অনুমতির প্রয়োজন হয়। বিয়ের সময় কনেকে গুলমেদি গাছ অবশ্যই ধরে রাখতে হয়। রাজকীয় প্রতিটি বিয়েতে অবশ্যই শিশুদের একটি গ্রুপ থাকে। ২০১১ সাল পর্যন্ত রোমান ক্যাথলিকদের বিয়ে করতে নিষেধ ছিল। এখন রাজপরিবারে সদস্যরা যে কোন বিশ্বাস অবলম্বনকারীদেরই বিয়ে করতে পারেন।

৭. রাজপরিবারের সদস্যদের ভোট দেয়ার বা জনসম্মুখে রাজনৈতিক কোন কথা বলার অনুমতি নেই। তাদের কোন রাজনৈতিক পক্ষ অবলম্বনের সুযোগ নেই।
৮. রাজপরিবারের সদস্যরা ‘শেলফিশ’ নামের মাছ খান না কারণ এর থেকে পেট খারাপ হতে পারে। রাণীর রসুনে এলার্জি থাকায় বাকিংহাম প্যালেসে রসুন ব্যবহারের অনুমতি নেই। ডিনারে আলু, ভাত ও পাস্তা খাওয়ার বিষয়ে রাণীর কঠোর নিষেধাজ্ঞা আছে।
৯. রাজপরিবারের সদস্যদের বাহিরের কারোর তাদের স্পর্শ করার অনুমতি নেই। রাজপরিবারের সদস্যরা অটোগ্রাফ দিতে বা সেলফি তুলতে পারেন না। তবে তাদের অবশ্যই জনগণের দেয়া উপহার গ্রহণ করতে হয়।
১০. তাদের বিভিন্ন ভাষা জানতে হয়। প্রিন্স জর্জ ইতোমধ্যে কিছুটা স্প্যানিশ শিখেছেন। চায়ের কাপ ধরা নিয়েও আছে নিয়ম-কানুন।