খােলা বাজার২৪। শনিবার, ২৩ ডিসেম্বর, ২০১৭: ওজন কমানোর জন্য যাবতীয় পরিকল্পনা মাঠে মারা যেতে পারে, যদি না কর্মক্ষেত্রে বা অফিসেও সাবধান না হন।
ব্যায়াম ও খাদ্যাভ্যাস পরিবর্তন করে দেহের বাড়তি ওজন কমানো যায়। তবে অফিসে গিয়ে যদি কয়েকটি বিষয়ে নজরে না রাখেন তবে বৃথা যেতে পারে ওজন কমানোর সমস্ত চেষ্টা।
স্বাস্থ্যবিষয়ক একটি ওয়েবসাইটে এই বিষয়ের উপর প্রকাশিত প্রতিবেদন অবলম্বনে কোন কোন ব্যাপারের উপর নজর দেবেন সেগুলো জানানো হল এই প্রতিবেদনে-
মনরক্ষার্থে খাওয়া: কর্মীদের কর্মস্পৃহা ধরে রাখতে অফিসের বিভিন্ন আনুষ্ঠানিকতায় ভারী খাওয়া-দাওয়ার আয়োজন থাকে। এই ছোটখাট আয়োজনগুলো হরহামেশাই ঘটে। আর ওজনের লাগাম টেনে রাখতে না পারার এটা অন্যতম কারণ।
অনুষ্ঠানে বাফেটের আয়োজন থাকলে বিভিন্ন পদের মজাদার খাবারের পসরা দেখে ওজন কমানোর প্রতিশ্রুতি ধরে রাখা কষ্টকরই বটে। তবে কষ্টেই কেষ্ট মেলে, তাই এসব ক্ষেত্রে সালাদের উপর বেশি জোর দিতে হবে।
ভাবিয়া খান, খাইয়া ভাবিয়েন না: দুপুর বেলা রেস্তোরাঁয় না খেয়ে ঘরে রান্না করা খাবার খেলে স্বাস্থ্য ভালো থাকবে, একথা সবাই জানেন। হয়ত আপনি সেটাই করেছেন, তবে বিকেল বেলা কাজের চাপে যখন মাথা খারাপ হওয়ার যোগাড়, তখন চাই হালকা স্ন্যাকস বা নাস্তা। আর সেজন্য বেছে নিলেন ফাস্টফুড কিংবা ভাজাপোড়া। ফলে ঘরে তৈরি খাবার খেয়েও কোনো লাভ হল না। তাই দুপুরের খাবারের সঙ্গে বিকেলের নাস্তাও ঘর থেকে আনার চেষ্টা করতে হবে।
অফিসের পরিবেশ: গবেষণায় দেখা গেছে, অফিস কক্ষে আলো যদি কম থাকে তবে উজ্জ্বল আলোকিত পরিবেশের তুলনায় আপনার খাওয়ার মাত্রা বাড়ে। কক্ষ তাপমাত্রার ক্ষেত্রেও একই ঘটনা ঘটে। অফিসের আলো ও তাপমাত্রা যদি কম হয়, তবে কিছুক্ষণ পর পর বাইরে থেকে হেঁটে আসতে পারেন।
অফিসের সময়: অফিসে যেতে হবে নয়টার মধ্যে, কিন্তু বের হওয়ার সময় ছয়টা বলা হলেও সেটা আটটা থেকে নয়টা পর্যন্ত গড়ায় প্রায়ই। ফলে নিজের জন্যই সময় থাকে না। দিন শেষ মন বলে, চুলোয় যাক ব্যায়াম, ঘুমই যেন স্বর্গ। আবার এই দীর্ঘসময় অফিস আপনার হরমোনকেও প্রভাবিত করে, ফলে ক্ষুধা পায় ঘন ঘন। এর সমাধান হতে পারে শারীরিক নড়াচড়া। লিফটের বদলে সিঁড়ি ব্যবহার করা, কিছুক্ষণ পরপর চেয়ার ছেড়ে একটু হাঁটাহাঁটি করা ইত্যাদির মাধ্যমে সমস্যা কিছুটা এড়াতে পারবেন।
কাজের চাপে খাওয়া: পদমর্যাদায় আপনি যতই নিচে কিংবা উপরে থাকুন না কেনো, কাজের চাপ আছেই। আর এই চাপ থেকে সাময়িক মুক্তি পেতে খাবারকেই বেছে নেন কমবেশি সবাই। মানসিক চাপের সময় শরীরে নিঃসৃত হয় ‘কর্টিসল’ হরমোন যা ক্ষুধার অনুভূতি জাগায় সময়ে-অসময়ে, ফলাফল- অতিরিক্ত খাওয়া। পর্যাপ্ত ঘুম এবং ভারী ব্যায়াম এর সমাধান হতে পারে।
একসঙ্গে একাধিক কাজ: গবেষণা বলছে, মানুষের শরীর একসঙ্গে একাধিক কাজ করতে সক্ষম, তবে তা সৃষ্টি করে মানসিক চাপ, সেই সঙ্গে ক্ষুধাও। শরীর ও মন সারাদিন বিভিন্ন কাজে ব্যস্ত থাকার পর দিন শেষে অত্যন্ত ক্লান্ত হয়ে পড়ে, ফলে সস্তির আশায় খাবারের দিকে ঝুঁকে পড়তে চায়। এজন্য সঙ্গে রাখতে পারেন বিভিন্ন ধরনের বাদাম। ফলে অন্যান্য জাঙ্কফুড থেকে দূরে থাকা সহজ হবে।
পানির অভাব: পানি পান করতে ভুলে যাওয়া সকলেরই সাধারণ সমস্যা। আর কাজের চাপে থাকলে তো কথাই নেই। পানি কম আর চা-কফি বেশি পান করার কারণে ঘুমের সমস্যা দেখা দিতে পারে। ফলে বাড়তে পারে ওজন, কমতে পারে আপনার কর্মস্পৃহা। তাই অফিসে নিজের টেবিলে অবশ্যই একটি পানি ভর্তি বোতল রাখতে হবে। আর দিনে সেটা তিনবার শেষ করার চেষ্টা করুন। বিডিনিউজ।