Wed. Mar 12th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলা বাজার২৪। সোমবার, ০৫ মার্চ, ২০১৮: বিশিষ্ট লেখক ও অধ্যপক ড. জাফর ইকবালের উপর নৃশংশ জঙ্গি হামকার প্রতিবাদে গতকাল দুপুরে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের অপরাজেয় বাংলার পাদদেশে মানববন্ধন করেছে ঢাবি শিক্ষক সমিতি। বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. আখতারুজ্জামান এ সময় উপস্থিত ছিলেন।
৩ মার্চে ড. জাফর ইকবালের উপর হামলার তীব্র নিন্দা জানিয়ে এর সাথে জরিত সকলকে ও হামলায় মদদদাতাদের কঠোরতম বিচারের দাবি জানান বক্তারা। এই হামলাকে মুক্তবুদ্ধি, মুক্তিযুদ্ধ ও সৃজনশীলতার উপর হামলা বলে আখ্যা দিয়েছেন তারা।

মানববন্ধনে এক প্রফেসর বলেন, ‘এই হামলা কেবল ব্যক্তির উপর হামলা নয়। এটা সকলের উপর হামলা। যে শক্তিটি সাম্প্রদায়িক চাদরে এদেশকে ঢেকে ফেলতে চায় তারাই বারবার মুক্তবুদ্ধি চর্চার বাধা হয়ে দাড়িয়েছে। তারাই বিশ্ববিদ্যালয়ের মুক্তমনা শিক্ষকদের উপর বারবার হামলা চালিয়েছে।’ এ সময় তিনি জঙ্গি কর্মকান্ডের প্রতি ধিক্কার জানিয়ে বাংলাদেশকে কোনো ভাবেই ব্যর্থ রাষ্ট্রে পরিনত করা যাবে না বলেও দৃঢ় প্রত্যয় ব্যক্ত করেন।
মানববন্ধনে অন্যান্যদের মধ্যে আরও বক্তব্য রাখেন বিশিষ্ট কবি ও শিক্ষক সমিতির সদস্য মোহাম্মদ সামাদ, বজলুল হক খন্দকার, চন্দ্রনাথ পোদ্দার, ড. সাদেকা হালিম, ড. আব্দুল আজিজ, প্রফেসর রোবায়েত ফেরদৌস সহ আরও অনেকে।

১৮ সালের জঙ্গি হামলায় পার্থক্য থাকবে

মানববন্ধনে একাদশ জাতীয় নির্বাচন ও বর্তমান জঙ্গি হামলা প্রসঙ্গে উপাচার্য ড. আখতারুজ্জামান বলেছেন, ‘১৮’র নির্বাচন উপলক্ষে আনেকে এই অপশক্তিকে জাগ্রত করতে চাইবে। পূর্বের জঙ্গি হামলাগুলোর সাথে তাই ১৮’র জঙ্গি হামলার কিছু পার্থক্য থাকবে। আমাদের কাউন্টার টেররিজমকে এই বিষয়ে সচেতন থাকতে হবে।’
জঙ্গি আদর্শের ভয়াবহতা তুলে ধরে তিনি বলেন, ‘জাফর ইকবালের উপর হামলাকরী তার অনুষ্ঠনে উপস্থিত ছিল। কিন্তু তাকে চেনা যায় নি। সুতরাং কে জঙ্গি আর কে জঙ্গি নয় তা চেনা খুবই দূরহ ব্যাপার। জঙ্গিরা ধরা পরলেও তাদের সহকর্মীদের নাম গোপন রাখে। এদের বিবেক অন্ধ। তাদের মধ্যে মানবপ্রেম নেই। সমাজ জঙ্গিবাদ তাই নির্মূল হয় না।’

পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তা ব্যবস্থা জোরদারের পরামর্শ

মানববন্ধনে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সভাপতি এ এম মাকসুদ কামাল সরকার ও দায়ীত্বরত আইনশৃঙ্খলা বাহীনিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়সহ সকল পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে নিরাপত্ত ব্যবস্থা আরও জোরদারের সুপারিশ করেছেন। তিনি বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয়গুলো যেহেতু জঙ্গিরা তাদের কর্মকান্ড চালানোর জন্য বেছে নিয়েছে; বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে হামলা চালাচ্ছে; তাই সকল বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাস ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে নিরাপত্ত আরও বাড়ানো দরকার।’ এ বিষয়ে সংশ্লিষ্টদের ব্যবস্থা নেওয়ার আবেদনও জানান তিনি।
জঙ্গি হামলার শিকার রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যপক ড. ইউনূস হত্যা ও বইমেলায় হুমায়ুন আজাদের উপর হামলার কথা স্মরণ করে তিনি বলেন,” জঙ্গিবাদী শক্তি মুক্তি চেতনা, মুক্ত বুদ্ধি ও মুক্তিযুদ্ধের উপর হামালা করে আসছে। তাই সমাজ এদের নির্মূল করতে হবে।”

বক্তব্যে ড. জাফর ইকবালের উপর হামলার প্রতিবাদে দেশের সকল বিশ্ববিদ্যালয় ও সব ধরনের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একই সময় জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িকতা বিরোধী সমাবেশের ঘোষনা দেন তিনি। এছাড়া ড. জাফর ইকবাল সুস্থ হলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে আলাদা সমাবেশের কথাও জানিয়েছেন ড.মাকসুদ কামাল।