খােলা বাজার২৪। মঙ্গলবার, ০৬ মার্চ, ২০১৮: বাংলাদেশ প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (বুয়েট) ইভটিজিংয়ের অভিযোগকে কেন্দ্র করে দেওয়া শাস্তি কর্তৃপক্ষ প্রত্যাহার করায় তিন ছাত্রীও তাদের করা রিট মামলা তুলে নিয়েছেন।
তবে ওই শাস্তির বিষয়টি ভবিষ্যতে কোনো প্রকার রেফারেন্স হিসেবে উল্লেখ না করার কথা বলে সোমবার (৫ মার্চ) রিট আবেদনগুলোর নিষ্পত্তি করেছেন বিচারপতি গোবিন্দ চন্দ্র ঠাকুর ও বিচারপতি এ কে এম সাহিদুল হকের হাইকোর্ট বেঞ্চ।
তিন ছাত্রীর পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার এ বি এম আলতাফ হোসেন বলেন, আদালতের কাছ থেকে সময় নিয়ে শিক্ষকরা ছাত্রী এবং তাদের অভিভাবকদের সঙ্গে এ বিষয়ে আলাপ-আলোচনা করে শাস্তি প্রত্যাহার করেছেন। বিষয়টি শিক্ষকরা আদালতে অবহিত করার পর ছাত্রীরা তাদের শাস্তির বিরুদ্ধে করা রিট মামলাও প্রত্যাহার করে নিয়েছেন। তবে আদালত বলেছেন, ভবিষ্যতে এ শাস্তির বিষয়ে কোনো প্রকার রেফারেন্স যেন বুয়েট ব্যবহার না করে।
২০১৫ সালে র্যাগিংয়ে ইভটিজিংয়ের অভিযোগকে কেন্দ্র করে তিন ছাত্রীকে বিশ্ববিদ্যালয়ের বোর্ড অব রেসিডেন্স অ্যান্ড ডিসিপ্লিন আবাসিক হল থেকে স্থায়ী বহিষ্কার ও পরীক্ষায় অংশ নেওয়া বিষয়ক একটি শাস্তি দেওয়া হয়। এর বিরুদ্ধে ওই সময় তিন ছাত্রী হাইকোর্টে রিট করেন।
তাদের আইনজীবী আলতাফ হোসেন জানান, র্যাগিংয়ের সময় ওই তিন ছাত্রী এক ছাত্রের বিরুদ্ধে ইভটিজিংয়ের অভিযোগ দায়ের করেন। ওই ঘটনায় বিশ্ববিদ্যালয় একটি তদন্ত কমিটিও গঠন করে। ওই কমিটি একই বছরের ৩ জুন তদন্ত প্রতিবেদন দেয়।
এদিকে, তারা বিভিন্ন চাপে অভিযোগ প্রত্যাহার করে নিলেও ২৭ জুলাই তাদের শাস্তি দেওয়া হয়। ফলে শাস্তির বৈধতা চ্যালেঞ্জ করে রিট করলে ওই বছরের আগস্টেই হাইকোর্ট তাদের শাস্তি স্থগিত করে রুল জারি করেন।
সেই রুলের শুনানি শেষে ১৮ জানুয়ারি রায়ের জন্য দিন ধার্য ছিল। কিন্তু বুয়েটের আইনজীবীর উপস্থাপিত ওই তদন্ত প্রতিবেদনে ইভটিজিংয়ের ঘটনায় সত্যতা মেলে। এ কারণে প্রতিবেদনের বিষয়ে তদন্ত কমিটির তিন সদস্যকে তলব করেন হাইকোর্ট।
সেই আদেশ অনুসারে ২৪ জানুয়ারি শিক্ষকরা হাজির
হন হাইকোর্টে। তিন শিক্ষক হলেন, তড়িৎ ও ইলেক্ট্রনিক প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও কমিটির আহ্বায়ক ড. মো. কামরুল আহসান, যন্ত্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ও কমিটির সদস্য ড. মো. মাকসুদ হেলালী এবং পুরকৌশল বিভাগের অধ্যাপক ড. রওশন মমতাজ।
পরবর্তীতে বিষয়টি আদালতের বাইরে নিষ্পত্তির জন্য সময় নেন তিন শিক্ষক। সে অনুসারে আদালতের বাইরে সমঝোতার পর তিন শিক্ষক আদালতকে ছাত্রীদের শাস্তি প্রত্যাহারের বিষয়টি লিখিতভাবে জানান। এরপর ছাত্রীরাও তাদের রিট প্রত্যাহার করে নেন। ফলে সোমবার চূড়ান্তভাবে বিষয়টির নিষ্পত্তি হয়।
উৎসঃ বাংলানিউজ