খােলা বাজার২৪। শুক্রবার, ০৯ মার্চ, ২০১৮: ছুরিকাহত হয়ে সিএমএইচ হাসপাতালে চিকিৎসাধীন ড. জাফর ইকবাল একটি দেশ বা রাষ্ট্রের জন্য কতোটা গুরুত্বপূর্ণ একজন ব্যাক্তি তা নিয়ে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের গণসংযোগ ও সাংবাদিকতা বিভাগের সহকারী অধ্যাপক আর রাজী তার ফেসবুকে একটি স্ট্যাটাস দিয়েছেন যা আমাদের সময় ডট কমের পাঠকদের জন্য হুবুহু তুলে ধরা হলো।
আর রাজী লিখেছেন, ‘অসংখ্য অযোগ্য-অদক্ষ-অজ্ঞ মানুষকে ছলে-বলে-কৌশলে, চরম অসৎ ও অসঙ্গত পন্থায় ক্ষমতা ও ধনার্জনে সফল দেখতে পেয়ে এই দেশের সব পর্যায়ের সংখ্যাগরীষ্ঠ মানুষের মনের মধ্যে নানান উৎকট উচ্চাভিলাষ তৈরি হয়েছে। বিদ্যার সাথে সম্পর্ক নাই অথচ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক, শিক্ষা গ্রহণের সাথে সম্পর্ক নাই অথচ শিক্ষার্থী, জোর-জবরদস্তি-নিগ্রহ-নির্যাতন জারি রাখতে পারা ছাড়া আর কোনোভাবেই মানুষের সাথে সম্পর্ক নাই অথচ রাজনীতিবিদ, সততার সাথে সম্পর্ক নাই অথচ সাংবাদিক, বই-পত্রের সাথে সম্পর্ক নাই অথচ লেখক-কবি-সাহিত্যিক, সেবার কোনো মনোভাবই নাই অথচ সে চিকিৎসক-উকিল-প্রকৌশলী-ব্যবসায়ী, টেলিভিশনে খেলা দেখা ছাড়া খেলার সাথে কোনো সম্পর্ক নাই অথচ ক্রিড়াসমালোচক! এই দেশের মানুষ রবীন্দ্রনাথকে উড়িয়ে দেয়, শেখ মুজিবকে মাটি চাপা দেয়, ইউনূসকে সুদখোর ঘোষণা করে, সাকিবকে ক্রিকেট শেখায় -কী যে বিচিত্র অবস্থা এই দেশের!’
‘আকাঙ্ক্ষার এই বিকারগ্রস্ত বিপর্যয়ের ফলাফল হচ্ছে: বাংলাদেশের মানুষের মূল্যবোধ, তূল্যমূল্যজ্ঞান এখন বানের জলের মতোই নিম্নগামী। সুতরাং একজন অধ্যাপক মুহম্মদ জাফর ইকবাল একটি দেশ বা রাষ্ট্রের জন্য কতো বড় আর্শীবাদ সেটুকু বোঝার মতো বোধ-বুদ্ধি-কাণ্ড-জ্ঞান এদেশের অধিকাংশ মানুষের কাছ থেকে আশা করা বৃথা। পরিস্থিতি এখন যা দাঁড়িয়েছে, কোনো একটা সমস্যা সৃষ্টি হলে তা সমাধানের যোগ্য মানুষ এদেশে আর একটিও খুঁজে পাওয়া যাবে কি না সন্দেহ! এই চূড়ান্ত বিপর্যয়ের মুখেই দাঁড়িয়ে আছে এই দেশের ষোল কোটি মানুষ। কিন্তু এতোই নির্বোধ আমরা সমূহ-বিপদের সামনে দাঁড়য়েও নির্বিকার-নিশ্চেষ্ট রয়েগেছি। নিজেদের অবিমৃষ্যকারিতা দিয়ে বিশ্বকে যদি বিপদাপন্ন করে তুলি তাহলে বিশ্বমোড়লরা আমাদের ছেড়ে দেবে না, তারা বাংলাদেশকেও লিবিয়া-সিরিয়া-ইরাক বানিয়ে ছাড়বে। সেই দিন কি সমাগত?’