Wed. Jun 18th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

‘ক্যামেরা ট্রায়ালে খালেদা জিয়ার বিচার করলে রাষ্ট্রদ্রোহীতার মুখোমুখি হবে সরকার’

খোলাবাজার২৪. বুধবার,০৫ সেপ্টেম্বর ২০১৮ :   সরকার মঙ্গলবার প্রজ্ঞাপন জারি করে জিয়া চ্যারিটেবল ট্রাস্ট দুর্নীতি মামলার বিচার পুরোনো কেন্দ্রীয় কারাগারে আদালত বসিয়ে করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তার মানে এখন কারাগারের ভেতরেই ক্যামেরা ট্রায়ালে খালেদা জিয়ার বিচার সম্পন্ন করা হবে। কিন্তু সংবিধানে এ ধরনের মামলায় ক্যামেরা ট্রায়ালের কোন সুযোগ নেই।

এটা সংবিধানের ৩৫(৩) ও ২৭ অনুচ্ছেদের সম্পূর্ণ পরিপন্থী। তাছাড়া এটা বর্তমান সরকারেরই পাশ করা পঞ্চদশ সংশোধনীর ৭(ক) অনুচ্ছেদ মতে সংবিধান লংঘনজনিত রাষ্ট্রদ্রোহীতার অপরাধ। যার শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।

বাংলাদেশ সংবিধানের ৩৫(৩) অনুচ্ছেদ মতে, “ফৌজদারী অপরাধের দায়ে অভিযুক্ত প্রত্যেক ব্যক্তি আইনের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন ও নিরপেক্ষ আদালত বা ট্রাইব্যুনালে দ্রুত ও প্রকাশ্য বিচারলাভের অধিকারী হইবেন।”

অথচ সরকারের এই পদক্ষেপের মাধ্যমে খালেদা জিয়া প্রকাশ্য বিচারলাভের অধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন।

সংবিধানের ৩৫(৩) অনুচ্ছেদে বলা হয়েছে, ‘প্রত্যেক ব্যক্তি আইনের দ্বারা প্রতিষ্ঠিত স্বাধীন ও নিরপেক্ষ আদালত বা ট্রাইব্যুনালে বিচারলাভের অধিকারী হইবেন।’

অথচ কোনো আইন প্রনয়ন না করেই, কিংবা সংবিধান সংশোধন না করেই, খালেদা জিয়ার জন্য কেন্দ্রীয় কারাগারে আদালত বসিয়ে বিচার করার সিদ্ধান্ত নেয়া হয়েছে। যা সংবিধানের ৩৫(৩) অনুচ্ছেদের পরিস্কার লংঘন।

বাংলাদেশ সংবিধানের ২৭ নং অনুচ্ছেদ মতে, “সকল নাগরিক আইনের দৃষ্টিতে সমান এবং আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকারী।” কিন্তু শুধুমাত্র খালেদা জিয়ার জন্য অর্থাৎ শুধুমাত্র একজন মানুষের জন্য ভিন্ন আইন, ভিন্ন বিচার পদ্ধতি!! এর মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে আইনের সমান আশ্রয় লাভের অধিকার থেকে বঞ্চিত করা হবে।

সরকার যদি তার এহেন সংবিধান পরিপন্থী কাজ বন্ধ না করে, তাহলে সেটা তাদেরই পঞ্চদশ সংশোধনীতে পাশ করা ৭(ক) অনুচ্ছেদ মতে সংবিধান লংঘনজনিত রাষ্ট্রদ্রোহীতার অপরাধ বলে বিবেচ্য হবে। আর সংবিধানের ৭ক(৩) অনুচ্ছেদ মতে, যার একমাত্র শাস্তি মৃত্যুদণ্ড।

লেখক : ডক্টর তুহিন মালিক, সুপ্রিম কোর্টের আইনজ্ঞ ও সংবিধানবিশেষজ্ঞ