Mon. Jun 16th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

‘বাবার স্মৃতি মুছে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে’

খােলাবাজার ২৪,মঙ্গলবার,১৬এপ্রিল ২০১৯ঃ ১৯৯০ সালের ৫ এপ্রিল এলআরবি প্রতিষ্ঠা করেন আইয়ুব বাচ্চু। শুরুতে এই ব্যান্ডের নাম ছিল ‘লিটল রিভার ব্যান্ড’ (এলআরবি)। ১৯৯৭ সালে নাম বদলে রাখা হয় ‘লাভ রানস ব্লাইন্ড’ (এলআরবি)। প্রায় ২২ বছর পর এসে ফের পরিবর্তন করে নতুন ভোকাল নিয়ে ব্যান্ডটির নাম হলো ‘বালাম অ্যান্ড দ্য লিগ্যাসি’।

এদিকে, ৫ এপ্রিল এলআরবির প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে রাজধানীর একটি রেস্তোরাঁয় আয়োজিত অনুষ্ঠানে এলআরবির নতুন লাইনআপ ঘোষণা করা হয়। সেখানে কণ্ঠশিল্পী বালামকে এলআরবির মূল ভোকাল হিসেবে পরিচয় করিয়ে দেওয়া হয়।

আইয়ুব বাচ্চুর পরিবারের পক্ষ থেকে জানানো হয়, ব্যান্ডের লাইনআপ পরিবর্তন করার ব্যাপারে পরিবারের কারও সঙ্গে ব্যান্ডের সদস্যরা কোনো যোগাযোগ কিংবা আলোচনা করেনি। এই ঘটনার ঠিক ১০ দিন পর ব্যান্ডের নাম পরিবর্তন করেছেন সদস্যরা। আর সেটাও হয়েছে পরিবারের আপত্তির কারণেই।

পরিবারের সদস্যরা বলছেন, এলআরবি যে নতুনভাবে গঠন করা হয়েছে, এসবের নাকি কিছুই জানেন না তারা। এমনকি গত কয়েক মাসে এলআরবি নামে বিভিন্নজনকে দিয়ে স্টেজ পারফরম্যান্স করেছে, এ বিষয়টিও ছিল তাদের অজানা।

তবে ব্যান্ডের অন্যতম সদস্য মাসুদ দাবি করেন, ‘এলআরবির ব্যাপারটি নিয়ে আমরা বারবার বসের (আইয়ুব বাচ্চু) পরিবারের সঙ্গে বসতে চেয়েছি। ব্যান্ডের নানা বিষয় নিয়ে আলোচনা করতে চেয়েছি। কিন্তু তারা কেউ বসতে চাননি। বসের কোনো অসম্মান হোক, তাকে নিয়ে কাঁদা ছোড়াছুড়ি হোক, তা আমরা চাইনি।’

এই প্রসঙ্গে আইয়ুব বাচ্চুর মেয়ে ফাইরুজ সাফরা জানান, আইয়ুব বাচ্চু তার অবর্তমানে এলআরবি ব্যান্ডের কী হবে, তা নিয়ে দুই সন্তানকে কিছু নির্দেশনা দিয়ে গেছেন। অস্ট্রেলিয়ার সিডনি থেকে ফাইরুজ সাফরা গণমাধ্যমের সাথে এ নিয়ে কথা বলেন।

সাফরা বলেন, এলআরবি না থাকলে আইয়ুব বাচ্চুকে সবাই একদিন ভুলে যাবে, এটা ভাবা মোটেও ঠিক না। মানুষ বেঁচে থাকে তার কাজের মধ্যে। আইয়ুব বাচ্চুর নাম যত দিন থাকবে, তার সঙ্গে এলআরবিও উচ্চারিত হবে। এ দুটি সমার্থক শব্দ। বাবার ব্যান্ড যদি আর না চলে, তারপরও ভক্ত-শ্রোতারাই এটাকে বাঁচিয়ে রাখবেন। কারণ এটা বাবার সৃষ্টি।

অনেকটা হতাশা নিয়ে তিনি বলেন, কিন্তু ব্যাপারগুলো এত আজব হয়ে যাচ্ছে, যা আমাদের কাছে মোটেও স্বাভাবিক বলে মনে হচ্ছে না। এ কারণে তাদের সঙ্গে কথা বলেছি। আসলে তাদের সঙ্গে না, একজনের সঙ্গে কথা বলেছি। তাকে সবকিছু বুঝিয়ে বলেছি। এরপরও ব্যান্ডের কোনো সদস্য আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেনি।

এদিকে লিজেন্ড এই সঙ্গীতশিল্পীর ফেসবুক হ্যাক নিয়ে বেশ বিমর্ষ একমাত্র মেয়ে ফাইরুজ সাফরা। তিবি বলেন, বাবা মারা যাওয়ার পর প্রতিদিন রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে তার ফেসবুকটা দেখি। বাবার সঙ্গে ইনবক্সে বলা কথাবার্তা দেখে একটু শান্তি খোঁজার চেষ্টা করি। মনে হয়, আব্বু এখনো আমার সঙ্গে আছেন। একদিন দেখি, বাবার ফেসবুক প্রোফাইল নাই। মানুষটা নাই, তার ফেসবুক হ্যাক করার কী মানে! যারা করেছেন, তাদের উদ্দেশ্য মোটেও সৎ ছিল না। ফেসবুকে আমার বাবার অনেক স্মৃতি ছিল। বিভিন্ন শোর উল্লেখযোগ্য মুহূর্ত ছিল। আমি তো বলব, বাবার স্মৃতি মুছে দেওয়ার চেষ্টা করা হয়েছে।

তবে চুপ করে বসে থাকেননি বাচ্চু কন্যা। ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে মেইল করেছেন। ফিরে পাওয়ার চেষ্টা করছেন বাবার স্মৃতি।