
বাংলাদেশের ঋতুবৈচিত্র্যের অবস্থানগত কারণেই হেমন্ত কিছুটা প্রচ্ছন্ন। শরৎকাল বর্ষারই প্রলম্বিত পর্যায়। শরতের শেষ ভাগে এসে বৃষ্টিবাদল কমতে থাকে। পেঁজা পেঁজা মেঘ ভেসে বেড়ানো ঝলমলে আকাশের গায়ে এসে লাগে কুয়াশার মলিন স্পর্শ। হেমন্তের শুরুটা সেখান থেকেই।
যদিও শহরাঞ্চলে হেমন্তের প্রকৃতি আপন বৈশিষ্ট্যে স্পষ্ট হয়ে ওঠে না। দিনগুলো ধীরে ধীরে ছোট হয়ে আসে। বেলা ছুটে যায় সন্ধ্যা ঘনিয়ে আসে দ্রুত। রোদ তার তেজ হারিয়ে ফেলে। এসব দেখেই শহুরে লোকেরা অনুভব করে—বদলে যাচ্ছে ঋতু। শীত আসছে। হেমন্তের মাঝপথে শিশির পড়া শুরু হয়। দুর্বার ডগায় আটকে থাকা শিশিরবিন্দুতে ঝিকিমিকি করে ভোরের কিরণ। মেঠোপথে হাঁটতে গেলে পা ভিজে যায়। এ রকম কোনো পথ ধরে হেঁটে যাওয়ার স্মৃতি, শিশিরভেজা শিউলি কুড়োনো ভোর—আজীবন সযতনে বুকে আগলে রাখেন অনেকে।
হেমন্তের অন্য নাম নবান্নের ঋতু। হেমন্তের পরিণতি শীতের আগামনী গানে। কুয়াশার চাদরে ঢাকা শীতের দরজা খুলে দিয়ে শরতের বিদায়ের পালা।