Wed. Aug 27th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

 

খােলাবাজার২৪ বুধবার ২৭ আগস্ট, ২০২০: করোনা মহামারির কারণে চলতি বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে আয় কমে গেছে দেশের শীর্ষস্থানীয় মোবাইল অপারেটর ও ডিজিটাল সার্ভিসেস কোম্পানি রবির। প্রথম প্রান্তিকের তুলনায় দ্বিতীয় প্রান্তিকে কোম্পানির আয় সাড়ে ৯ শতাংশ কমে দাঁড়িয়েছে ১ হাজার ৭৬৩ কোটি টাকায়।

তবে মহামারির আঘাত থেকে রক্ষায় পরিচালন ব্যয় কমিয়ে আনার উদ্যোগের ফলে দ্বিতীয় প্রান্তিকে ৫৮ কোটি ৪০ লাখ টাকা কর পরবর্তী মুনাফা অর্জন করতে সক্ষম হয়েছে রবি।বৃহস্পতিবার (২৭ আগস্ট) অপারেটরটির পাঠানো এক প্রেসবিজ্ঞপ্তিতে জানায়, রবির কর পরবর্তী মুনাফার চিত্রটি খতিয়ে দেখলেই বোঝা যায়, বৈষম্যমূলক ২ শতাংশ ন্যূনতম টার্নওভার কর কীভাবে কোম্পানির সার্বিক মুনাফায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলছে। এ করের কারণে টেলিযোগাযোগ শিল্পের ছোট কোম্পানিগুলোকে অন্যান্য শিল্পের তুলনায় দ্বিগুণ হারে কর দিয়ে যেতে হচ্ছে।রাজস্ব আয় কমার পাশাপাশি করোনার কারণে সক্রিয় গ্রাহক সংখ্যায়ও বড় আঘাত এসেছে। আগের প্রান্তিকের চেয়ে এ প্রান্তিকে সক্রিয় গ্রাহক সংখ্যা ৩ দশমিক ৫ শতাংশ কমে ৪ কোটি ৮০ লাখে ঠেকেছে। তবে গত বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকের চেয়ে এ বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে গ্রাহক সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে শূন্য দশমিক ১ শতাংশ। অন্যদিকে গত বছরের একই প্রান্তিকের চেয়ে এ বছরের প্রান্তিকে ৫ দশমিক ২ শতাংশ রাজস্ব আয় কমেছে।ভয়েস সেবা থেকে রাজস্ব আয় কমেছে আগের প্রান্তিকের চেয়ে ১৪ দশমিক ২ শতাংশ এবং গত বছরের একই প্রান্তিকের চেয়ে ১৮ দশমিক ৬ শতাংশ। এটি টু-জি ভিত্তিক ভয়েস কল সেবা নেওয়া কম আয়ের গ্রাহকদের অর্থনৈতিক কষ্টে থাকার প্রতিই ইঙ্গিত দেয়।গত প্রান্তিকের চেয়ে ইন্টারনেট ডেটা ব্যবহার ১৮ দশমিক ৯ শতাংশ বাড়লেও করোনা মহামারি পরিস্থিতিতে এর দরপতন হয়েছে। ফলে ডেটা বিক্রি থেকে আয়ও প্রথম প্রান্তিকের চেয়ে দ্বিতীয় প্রান্তিকে ১ দশমিক ৫ শতাংশ কমেছে। আর গত বছরের একই প্রান্তিকের চেয়ে ডেটা রাজস্ব আয় বৃদ্ধি পেয়েছে ২৩ দশমিক ৭ শতাংশ।বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, মহামারি পরিস্থিতিতে ডেটা ব্যবহার আকস্মিক বৃদ্ধির ফলে নেটওয়ার্কের ওপর যে চাপ তৈরি হয়েছিল সেটা সামাল দিতে ছোট অপারেটররা জরুরিভিত্তিতে স্বল্প সময়ের জন্য তরঙ্গ বরাদ্দ চেয়ে আবেদন করেছিল। এটি অনুমোদন দেওয়া হলে নেটওয়ার্কের ওপর তৈরি হওয়া অস্বাভাবিক চাপ এড়ানো সম্ভব হতো।রবির সক্রিয় গ্রাহক সংখ্যা এ প্রান্তিকে ১৭ লাখ কমিয়ে ৪ কোটি ৮০ লাখে পরিণত করেছে। এটি দেশের মোট গ্রাহকের ২৯ দশমিক ৭ শতাংশ। ৪ কোটি ৮০ লাখ গ্রাহকের মধ্যে ৩ কোটি ২২ লাখ ইন্টারনেট ব্যবহারকারী, যা রবির মোট গ্রাহক সংখ্যার ৬৭ শতাংশ। কঠোর ব্যয় শৃঙ্খলা নিশ্চিত করার ফলে এ বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে ইবিআইটিডিএ (আর্নিংস বিফোর ইন্টারেস্ট, ট্যাক্সেস, ডেপ্রিশিয়েশন অ্যান্ড অ্যামোর্টাইজেশন) ৮৮২কোটি টাকায় দাঁড়িয়েছে।চলতি ২০২০ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিকে রবি রাষ্ট্রীয় কোষাগারে ৮০৪ কোটি ৩০ লাখ টাকা জমা দিয়েছে। দ্বিতীয় প্রান্তিকে রবির মূলধনী বিনিয়োগ ৩১১ কোটি টাকা।কোম্পানির আর্থিক কার্যক্রম ও সক্ষমতা সম্পর্কে রবির ম্যানেজিং ডিরেক্টর অ্যান্ড সিইও মাহতাব উদ্দিন আহমেদ বলেন, আমাদের জীবনকালের যেকোনো প্রান্তিকের চেয়ে ২০২০ সালের দ্বিতীয় প্রান্তিক আলাদা। মহামারির কারণে আমাদের ব্যবসা কতোটুকু ক্ষতিগ্রস্ত হবে সে সম্পর্কে আমাদের সুস্পষ্ট কোনো ধারণা ছিল না। কঠিন এ সময়েও এসএমপি নীতিমালা নিয়ে বিটিআরসি কার্যকর কিছু পদক্ষেপ গ্রহণ করেছে যা আমাদের জন্য আশাব্যঞ্জক, যত শিগগির সম্ভব এসএমপি নীতিমালার পূর্ণ বাস্তবায়ন আমরা দেখতে চাই।মাহতাব বলেন, মহামারির কারণে ব্যবসায় যে নেতিবাচক প্রভাব পড়েছে তা আরও শোচনীয় হয়েছে সম্প্রতি ঘোষিত জাতীয় বাজেটে সম্পূরক শুল্ক ৫ শতাংশ বৃদ্ধির সিদ্ধান্তে। বাজেট দেওয়ার সময় ধরে নেওয়া হয় টেলিযোগাযোগ খাতে অর্থের বন্যা বইছে; কিন্তু অন্যান্য অপারেটরের প্রকাশিত আর্থিক ফলাফলেও দেখা গেছে এ ধারণাটি ভুল। এছাড়া মহামারির হাত থেকে এ শিল্পকে রক্ষা করতে সরকারের দিক থেকে কোনো সহায়তা আমরা পাইনি, যা পরিস্থিতিকে আরও কঠিন করে তুলেছে।মহামারি মোকাবিলায় রবির সামাজিক বিভিন্ন উদ্যাগ সম্পর্কে তিনি বলেন, কঠিন ব্যবসায়িক পরিস্থিতির মধ্যেও অংশীজনদের পাশে আমরা সবটুকু নিয়ে দাঁড়িয়েছি। ডেটা অ্যানালিটিকসের দক্ষতাকে কাজে লাগিয়ে আমরা করোনা সংক্রমণ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ এবং ব্যবস্থাপনায় সরকারকে সাফল্যের সঙ্গে সহযোগিতা করেছি। এ পুরো প্রান্তিক আমাদের কর্মীরা ঘরে থেকে কাজ করেছেন। এ সময় উদ্ভাবনী নানা উদ্যোগের মাধ্যমে গ্রাহক সেবা অব্যাহত রেখেছি। এটি একটি দুঃস্বপ্নময় অভিজ্ঞতা হলেও এ প্রান্তিক ভবিষ্যতের ডিজিটাল বিশ্বের আগাম চেহারা আমাদেরকে দেখিয়েছে।