বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেছেন, দেশ আজ দুঃশাসন কবলিত। বর্তমান দুঃসময়ে জনগণকে সংগঠিত করার কোনো বিকল্প নেই। বিএনপির ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী উপলক্ষে আজ সোমবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বাণীতে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর এ কথা বলেন।বিএনপির মহাসচিব বলেন, ‘আজ থেকে ৪২ বছর আগে দেশের এক চরম ক্রান্তিকালে রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তম এ দেশের মানুষকে একদলীয় দুঃশাসনের অন্ধকার যুগ থেকে রক্ষার জন্য বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি প্রতিষ্ঠা করেন। আমি তাঁর প্রতি আন্তরিক শ্রদ্ধা জানাচ্ছি এবং তাঁর বিদেহী আত্মার মাগফিরাত কামনা করছি। বারবার দেশ ও গণতন্ত্রের সংকটকালে অসীম সাহসিকতার সঙ্গে জুলুম-নির্যাতনকে সহ্য করেও দুর্বার আন্দোলনে যিনি নেতৃত্ব দিয়েছেন, আমি সেই অদম্য সাহসের প্রতীক বিএনপি চেয়ারপারসন দেশনেত্রী খালেদা জিয়ার প্রতি জানাই গভীর শ্রদ্ধা। এই দিনে দলের প্রতিষ্ঠালগ্ন থেকে এখন পর্যন্ত যেসব নেতা মৃত্যুবরণ করেছেন, তাঁদের প্রতিও জানাই গভীর শ্রদ্ধা।মির্জা ফখরুল আরো বলেন, ‘বিএনপিকে প্রতিষ্ঠা করতে গিয়ে এবং গণতন্ত্র ফিরিয়ে আনার আন্দোলনে এখন পর্যন্ত যেসব নেতাকর্মী আত্মদান করেছেন, তাঁদের প্রতিও জানাই আমার অকৃত্রিম শ্রদ্ধা। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর শুভদিনে আমি দলের সব পর্যায়ের নেতাকর্মী, সমর্থক, শুভানুধ্যায়ী এবং দেশের জনগণকে জানাচ্ছি আন্তরিক শুভেচ্ছা ও অভিনন্দন। জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি দেশ ও মানুষের উন্নয়ন এবং বিশ্বের সব রাষ্ট্রের সঙ্গে সমমর্যাদার ভিত্তিতে সৌহার্দ্য ও বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক স্থাপনে নিরলস কাজ করে যাচ্ছে। বিএনপির ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই মহান দিনে দলের সব পর্যায়ের নেতা-কর্মীদের দলকে আরো গতিশীল করার ক্ষেত্রে মনেপ্রাণে কাজ করার জন্য প্রস্তুত থাকার আহ্বান জানাচ্ছি।মির্জা ফখরুল বলেন, ‘বর্তমান দুঃসময়ে জনগণকে সংগঠিত করার কোনো বিকল্প নেই। দেশ আজ দুঃশাসন কবলিত। এর ওপর করোনা মহামারির আক্রমণে জীবন-মৃত্যুর সন্ধিক্ষণে আতঙ্ক ও ভয়ের মধ্যে দিনাতিপাত করছে দেশের মানুষ। গুম-খুনের আতঙ্ক মানুষের নিত্য সঙ্গী। আইন, বিচার ও প্রশাসনকে সরকার কব্জার মধ্যে রাখার চেষ্টায় মরিয়া। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে বেআইনি কাজ করতে বাধ্য করা হচ্ছে। ফলে সমাজে দেখা দিয়েছে বিপজ্জনক বিশৃঙ্খলা। খুন-খারাবি, নারী-শিশু নির্যাতন, অপহরণ, গুপ্তহত্যা ইত্যাদি অনাচারের মাত্রা জ্যামিতিক হারে বৃদ্ধি পেয়েছে। কারণ সরকার যেখানে জনগণের প্রতিপক্ষ, সেখানে মানুষের জানমালের কোনো নিরাপত্তা থাকতে পারে না। সুতরাং জনগণের নিরাপত্তা বিধানের জন্যই গণতন্ত্রকে ফিরিয়ে আনতে হবে।মির্জা ফখরুল আরো বলেন, ‘বিএনপির চেয়ারপারসন দেশনেত্রী খালেদা জিয়া এবং ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান তারেক রহমানের ওপর জুলুম-নির্যাতন চালিয়ে হয়রানির খড়গ ঝুলিয়ে রাখা হয়েছে। বেগম খালেদা জিয়া প্রতিহিংসার শিকার। কারণ তিনিই গণতন্ত্রের প্রতীক এবং জনগণের নাগরিক ও বাক ও ব্যক্তি স্বাধীনতার পক্ষে প্রধান কণ্ঠস্বর। পাশাপাশি দেশের যেকোনো ক্রান্তিলগ্নে সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থেকে অন্যায় ও জুলুমের বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ানোর প্রতি গুরুত্বারোপ করতে হবে। বিএনপির ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীর এই দিনে আমি দেশবাসীকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপির পতাকাতলে ঐক্যবদ্ধ থাকার জন্য উদাত্ত আহ্বান জানাই।
খােলাবাজার২৪, সোমবার, ৩১ আগস্ট, ২০২০:বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর।