খােলাবাজার২৪, মঙ্গলবার , ০১ সেপ্টেম্বর , ২০২০: পৃথিবীতে প্রত্যেক মানুষের ঠিকানা থাকে। ঠিকানা বিহীন মানুষ উদ্বাস্তু বা বাস্তুহারা, রোহিঙ্গা, পরাশ্রিত, ভাসমান ইত্যাদি হয়ে থাকে। ঠিকানাশ্রিত মানুষের সঠিক ভাবনাগুলো অধিকার সম্বলিত হলে ব্যক্তি, পরিবার, সমাজ সর্বোপরি সার্বিক উন্নয়ন যথার্থই হয়। আর মানুষের সঠিক ভাবনাগুলো অধিকার বলীয়ান না হলে উন্নয়ন অনেকটাই প্রশ্নবিদ্ধ হয়ে যায়। ১,৪৭,৫৭০ বর্গকিলোমিটার ঠিকানার এই দেশে প্রায় ১৭ কোটি মানুষেরও আছে ভাবনা। ঠিকানা এবং ঠিকানাশ্রিত মানুষের ভাবনাগুলো অধিকার সম্বলিত হয়ে উন্নয়নের ব্যাপ্তি এবং জনজীবনে তার যথার্থতার প্রতিফলনই কতটুকু তা কিছুটা তুলে ধরার প্রয়াস পাঠকদের জন্য এই লেখায়।
দেশভাগের পর থেকেই পূর্ব পাকিস্তানের জনগণ পাকিস্তানের শাসকগোষ্ঠী দ্বারা শাসন, শোষণ, লাঞ্ছনা, বঞ্চিত হয়ে আসছিল প্রায় ২৩ বছর ধরে। শাসন, শোষণ, লাঞ্ছনা, বঞ্চনার ফলে এদেশের জনগণ (তৎকালীন পূর্ব পাকিস্তান) সংগঠিত হয়ে তৎকালীন রাজনৈতিক দলগুলোর সাথে তাদের ভাবনাগুলো মিলিত করে অধিকার বলে বলীয়ান হয়ে উঠছিল-ফলে এসেছিল ছয় দফা, ’৬৯ এর গণ আন্দোলন। এক পর্যায়ে Legal frame work order (এল এফ ও) বা আইনগত কাঠামো আদেশ মেনে ১৯৭০-এ রাজনৈতিক দলগুলোর নির্বাচন এবং সে নির্বাচনে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন আওয়ামীলীগ জয়লাভ করলে ক্ষমতা নিয়ে পশ্চিম পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠীর সাথে আওয়ামীলীগ প্রধান শেখ মুজিবুর রহমানের দেনদরবার চলতে থাকে। পাকিস্তানের ক্ষমতা দ্বন্দ্বে কোন পক্ষই ছাড় না দেয়াই পশ্চিম পাকিস্তানী শাসকগোষ্ঠী ১৯৭১ এর ২৫ মার্চ রাতে শেখ মুজিবুর রহমানকে বন্দী করে নিয়ে যায় এবং এদেশের জনগণের উপর নির্বিচারে গুলিবর্ষণ করে হত্যাযজ্ঞ চালায়। এসময় তৎকালীন আওয়ামীলীগ নেতারা কেউ আত্মগোপন করেন, কেউ ভারতে পালিয়ে যান। এ জাতি দিশেহারা হয়ে পড়েন। দিশেহারা জাতির মাঝে আলোকবর্তিকা হয়ে আসেন কারগিল যুদ্ধের বিজয়ী বীর মেজর জিয়াউর রহমান। চট্টগ্রামে অষ্টম ইস্ট বেঙ্গল রেজিমেন্ট থেকে মেজর জিয়াউর রহমান রিভোল্ট ঘোষণা করে ১৯৭১ এর ২৬ মার্চ কালুরঘাট বেতার কেন্দ্র থেকে বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন এবং সে ঘোষণা শুনে এদেশের কৃষক, শ্রমিক, যুবক, বৃদ্ধ, বণিতা সব শ্রেণীর মানুষ যে যার অবস্থান থেকে যুদ্ধ শুরু করেন। মেজর জিয়াউর রহমান নিজেও যুদ্ধ ময়দানে সেক্টর কমান্ডারের দ্বায়িত্ব পালন করেন এবং যুদ্ধকে বেগবান করে কাঙ্খিত লক্ষ্যে পৌঁছার জন্য যুদ্ধসময়ে ‘জেড-ফোর্স’ এরও সফল নেতৃত্ব দেন। ফলে দেশ স্বাধীন হয়। এদেশের জনগণ ১,৪৭,৫৭০ বর্গকিলোমিটার ভূ-খন্ডের এই স্বাধীন ঠিকানা পান। দেশ স্বাধীনের পর দুর্নীতি-লুটপাট সীমাহীন বেড়ে যায়। ফলে ১৯৭৪ আসে ভয়াবহ দুর্ভিক্ষ। ৪টি পত্রিকা বাদে সব পত্রিকা বন্ধ করে দেয়া হয় এবং সকল রাজনৈতিক দল নিষিদ্ধ করে একদল ‘বাকশাল’ শাসন কায়েম করা হয়। ফলে সৃষ্ট অরাজকতায় শাসক প্রধান শেখ মুজিবুর রহমান পরিবার (দু’মেয়ে ছাড়া) সহ নিহত হন এবং তৎপরবর্তী সৃষ্ট পরিস্থিতিতে ‘বিপ্লব ও সংহতি’র মাধ্যমে সিপাহী জনতা রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত করেন মহান স্বাধীনতার ঘোষক মেজর জিয়াউর রহমানকে।
রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে জিয়াউর রহমান পূর্বের শাসকের বাকশাল কায়েমের মাধ্যমে রেখে যাওয়া রাষ্ট্র-যেখানে মানুষের অধিকার ও মর্যাদা ভূ-লুণ্ঠিত, গণতন্ত্র নির্বাসিত, বিশৃঙ্খলাপূর্ণ ও শান্তিশৃঙ্খলাহীন বিরাজমান ছিল সেখানে একদলীয় শাসনব্যবস্থা ‘বাকশাল’ বিলুপ্ত করে বহুদলীয় গণতন্ত্র এর প্রবর্তন করেন অর্থাৎ গণতন্ত্রের ভিত গড়েন এবং নতুন যুগোপযোগী রাজনীতির সূচনা করেন। যার ফলে আওয়ামী লীগও আবার নতুনভাবে আওয়ামী রাজনীতি করার সুযোগ পায়। অর্থাৎ জিয়াউর রহমান দেশবাসীর জন্য নতুন রাজনৈতিক ঠিকানা “বহুদলীয় গণতন্ত্র” প্রবর্তন করেন।
জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হয়ে বাংলাদেশে বসবাসরত সকল নাগরিকদের জন্য জাতীয় পরিচয়গত ঠিকানা “বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ” প্রতিষ্ঠিত করেন। তিনি বাংলাদেশের বাঙালি-অবাঙালি, বেদে-সাঁওতাল, চাকমা, গাড়ো, খাসিয়া, মণিপুরি প্রভৃতি সকল জাতি-উপজাতির জনগোষ্ঠীকে ভাষা, কৃষ্টি-সংস্কৃতি, ধর্ম-বর্ণ, জাত-পাত এর সব কিছুর ঊর্র্ধ্বে সকল নাগরিকের প্রথম রাষ্ট্রীয় পরিচয় “বাংলাদেশী” পরিচয়কে তুলে ধরেন এবং দেশের মানুষের আশা-আকাঙ্খা ও প্রত্যাশাকে সম্মান করে “বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ” সংবিধানে প্রতিস্থাপন করেন-যেখানে আমাদের নৃ-তাত্ত্বিক পরিচয় অক্ষুণœœ থাকে।
রাষ্ট্রীয় দ্বায়িত্বভার গ্রহণ করার পর জিয়াউর রহমান দেশকে সমৃদ্ধশালী, স্ব-নির্ভর, ও উন্নতির ঠিকানায় নিয়ে যাওযার লক্ষে ১৯ দফা কর্মসূচি ঘোষণা করেন। দুর্ভিক্ষ-দারিদ্র্যপীড়িত এ দেশে প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান যে “১৯ দফা” পেশ করেছিলেন-তা ছিল এদেশের গণমানুষের মুক্তির সনদ; দেশে আজ অবধি যতো উন্নয়ন বা উন্নতিই হোক না কেন তা আজো মনেহয় সেই “১৯ দফা’রই বহিঃপ্রকাশ? প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান গণতন্ত্রায়ন ও উন্নয়নের জন্য একের পর এক কাজ করে গেছেন এবং একটা ভালো ভিত গড়ে দিয়েছেন। ১৯৭৮ সালে জাতীয়তাবাদী গণতান্ত্রিক দল (জাগদল) এবং আরো কয়েকটি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে গঠিত জাতীয় ফ্রন্টের মনোনীত প্রার্থী হিসেবে জিয়াউর রহমান রাষ্ট্রপতি বা প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেন। ১৯৭৮ সালে ৩ রা জুনের এ নির্বাচনে তিঁনি ৭৬.৬৭ % ভোট পেয়ে বিজয়ী হন এবং পুনঃরায় রাষ্ট্রপতি বা প্রেসিডেন্ট পদে নিয়োজিত থাকেন এবং স্বাধীন দেশের জনগণের স্বতঃস্ফুর্ত প্রত্যক্ষ ভোটের ভিত্তিতে নির্বাচনের মাধ্যমে জিয়াউর রহমান বাংলাদেশের নির্বাচিত প্রেসিডেন্ট হন এবং তারপর বিভিন্ন দলের মোর্চা এই ফ্রন্ট একীভূত করে ১৯৭৮ সালে ০১ সেপ্টেম্বর শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি গঠন করেন-যার মূল চেতনা ছিল বাংলাদেশী জাতীয়তাবাদ। জিয়াউর রহমান জনগণকে রাজনীতি করার জন্য এই ঠিকানা দেন।
ক্ষমতায় থেকে কৃষি, শিল্প, শিক্ষা, বাণিজ্য, বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, কারিগরি, রাজনীতি, অর্থনীতি, সংস্কৃতি, আর্ন্তজাতিক এমন কোন সেক্টর নেই যে, অল্প সময়ের মধ্যেই সেখানে জিয়াউর রহমান এর হাত লাগে নি। এভাবে দেশ ও জাতি যখন এগিয়ে যাচ্ছিল তখনই ১৯৮১ সালের ৩০ মে জিয়াউর রহমান নিহত হন।…………….এরপর বিচারপতি আব্দুস সাত্তারকে সরিয়ে বন্দুকের নলের মুখে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসেন স্বৈরাশাসক হু. মু. এরশাদ। স্বৈরাচারী এরশাদ ৯ বছর ক্ষমতায় থাকেন। এই ৯ বছরে এক পর্যায়ে আওয়ামী লীগ সমর্থন জানালেও রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমান শহীদ হওয়ার পর গৃহবধূ থেকে রাজনীতিতে আসা বেগম খালেদা জিয়া’র নেতৃত্বাধীন বিএনপি ও এই জোট কোন সমর্থন জানান নি অর্থাৎ বেগম খালেদা জিয়া ছিলেন আপোসহীন। আর এই আপোসহীস আন্দোলন-সংগ্রামের ফলেই ‘’৯০-এ’ স্বৈরাচারী হু. মু. এরশাদের পতন ঘটে। এরপর ভোটরদের প্রত্যক্ষ ভোটে নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতায় আসেন বেগম খালেদা জিয়া’র নেতৃত্বাধীন বিএনপি এবং বেগম খালেদা জিয়া বাংলাদেশের প্রথম মহিলা প্রধানমন্ত্রী ও মুসলিম বিশে^র ২য় মহিলা প্রধানমন্ত্রী হিসেবে ইতিহাসে জায়গা করে নেন। বেগম খালেদা জিয়ার শাসনামল ছিল স্বর্ণযুগ এবং গণতন্ত্রের মজবুত কাঠামো। এরপর তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে পালাক্রমে বিএনপি ও আওয়ামীলীগ ক্ষমতায় আসেন। এক পর্যায়ে ১/১১ সরকার আসেন এবং অসাংবিধানিকভাবে ২ বছর ক্ষমতায় থাকেন। এই ১/১১ সরকারকে আওয়ামী লীগ তাদের আন্দোলনের ফসল বলেন এবং ১/১১ সরকারের অনুষ্ঠিত নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসেন। আ’লীগ ক্ষমতায় আসার পর পিলখানা ট্রাজেডী, বিশ^জিৎ হত্যা, নারায়নগঞ্জে ৭ খুন, হলমার্ক-সোনালী ব্যাংক কেলেংকারী, শেয়ার বাজার ধ্বস, বাংলাদেশ ব্যাংকের রির্জাভ চুরি, গ্যাস-বিদ্যুৎসহ দ্রব্যমূল্যের ক্রমাগত উর্ধ্বগতি, ঘুষ-দুর্নীতি, গুম, অপহরণ চলতে থাকে এবং তত্ত্বাবধায়ক সরকার পদ্ধতি বাতিল করার পর ক্ষমতাসীনদের অধীনে নির্বাচনে ভোটাররাও তাদের ভোট সঠিকভাবে প্রয়োগে বাঁধার সন্মুখীন হন এবং মৃত মানুষের ভোটও কাউন্ট হতে দেখা যায়-যা বিভিন্ন গণমাধ্যমের রির্পোটের ভিত্তিতে মানুষ জানতে পায়। আর এসবের প্রতিবাদে বেগম খালেদা জিয়া ও বিএনপি সোচ্চার হতে থাকেন। ফলে বেগম খালেদা জিয়াসহ বিএনপি’র লক্ষ লক্ষ নেতা-কর্মীদের ওপর আসে মামলা-হামলা, জেল-জুলুম, অত্যাচার-নির্যাতন। ………….এমনি অবস্থায় গুম-খুন-অপহরণ, দুর্নীতি, চাঁদাবাজ, সন্ত্রাস নির্মূল করে টেকশই উন্নতিশীল দেশ গড়ার লক্ষ্যে এবং দেশের মানুষের স্থিতিশীল নিরাপত্তা, মানবাধিকার, ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনার জন্য মামলা-হামলা, জুলুম-অত্যাচার সহ্য করে বেগম খালেদা জিয়া কোন আপোস ছাড়াই লড়াই করে যান। নিরাপদ, অধিকারসমৃদ্ধ সুখী-সম্প্রীতি, স্থিতিশীল, টেকশই উন্নতি’র গণতান্ত্রিক দেশ গড়ার লক্ষ্যে-গণতন্ত্র, জাতি গঠন, সুশাসন, প্রতিরক্ষা, পররাষ্ট্রনীতি, নৈতিকতার শক্তি পুনরুদ্ধার, পরিষেবা, সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনী, মুক্তিযুদ্ধ ও মুক্তিযোদ্ধা, সন্ত্রাস-জঙ্গিবাদ ও উগ্রবাদ, অর্থনীতি, গবেষণা ও উন্নয়ন, জনমিতিক লাভ্যাংশ, শিক্ষা ও মানব সম্পদ, তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি, ক্রীড়া, সংস্কৃতি, বিদেশে কর্মসংস্থান ও প্রবাসী কল্যাণ, মিডিয়া ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা, স্থানীয় সরকার, কৃষি ও কৃষক, শ্রমিক কল্যাণ, নগরায়ন ও আবাসন, নিরাপদ খাদ্য ও ঔষধ, স্বাস্থ্যসেবা, যুব-নারী ও শিশু, জলবায়ুর পরিবর্তন, পানি সম্পদ, নীল অর্থনীতি ও পরিবেশ সংরক্ষণ, বিদ্যুৎ ও জ্বালানি, শিল্প, যোগাযোগ, পর্যটন, সম্পদ সংরক্ষণ, সামাজিক ব্যাধির সমস্যা, ভুমিকম্প, র্পাবত্য চট্টগ্রাম ও অনগ্রসর অঞ্চল এবং সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি সমৃদ্ধ বিষয়াবলী ইত্যাদির ভিত্তিতে “ভিশন ২০৩০” জাতির সামনে বেগম খালেদা জিয়া ১০ মে ২০১৭ তারিখে তুলে ধরেন। এরফলে তার প্রতি ক্ষমতাসীনদের প্রতিহিংসা ও আক্রোস যেনো বেড়ে যায়। বেগম খালেদা জিয়াকে সাজানো মামলায় রায় দিয়ে ০৮ ফেব্রুয়ারী ২০১৮ইং তারিখে কারাবন্দী করা হয়। দলের হাল শক্ত হাতে ধরেন ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান। এরপর বেগম খালেদা জিয়া’র মুক্তির জন্য বিএনপি শান্তিপূর্ণ আন্দোলন চালিয়ে যেতে থাকেন এবং দেশের জনগণ ও দলীয় নেতাকর্মীরা বেগম খালেদা জিয়া’কে ‘মাদার অব ডেমোক্রেসি’ অর্থাৎ ‘গণতন্ত্রের মা’ উপাধি দেন।…. বেগম খালেদা জিয়া কারাবন্দী অবস্থায় ৩০ ডিসেম্বর ২০১৮ ক্ষমতাসীনরা জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত করেন। এ নির্বাচনে কেমন ভোট হয় তা বুঝি পাঠককুলসহ দেশের জনগণের অজানা নয়। ……তারপর এর মাঝে দেশে বৈশি^ক মহামারী করোনা ভাইরাস এর আগমন দেখা যায় এবং সরকারী নির্বাহী আদেশে বেগম খালেদা জিয়া’কে ২ টি শর্তে ২৫ মার্চ ২০২০ইং তারিখে জামিন দেয়া হয় (যদিও জামিনযোগ্য হলেও আদালত বেগম খালেদা জিয়া’কে পূর্বে জামিন দেন নাই বরং আবেদনই খারিজ করে দিয়েছিলেন)।
………..আর এমন নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় আসার পর দুর্নীতির মহোৎসব যেনো অব্যাহত-যা বিভিন্ন গণমাধ্যমের মাধ্যমে জনগণ জানতে পারেন। ক্যাসিনো কেলেংকারী এখন কারো অজানা নয়; আরিফ-সাবরিনা, শাহেদ, পাপিয়াদের কাহিনীও কারো অজানা নয়। পরিকল্পিত বা কাঠামোগত যাই বলি-সে দুর্নীতির চিত্রও গণমাধ্যমের কল্যাণে আজ ঢাকা নেই। নিচের উদাহরণেই ক্রয়খাতের দুর্নীতির চিত্র বুঝা যায়। যেমনঃ এক বালিশের দাম ৭ হাজার টাকা, এক পর্দার দাম ৩৭ লাখ টাকা, ১টি অক্সিজেন জেনারেটিং প্ল্যান্টের দাম ৫ কোটি ২৭ লাখ টাকা, ১ টি লিফটের দাম ২ কোটি টাকা, ১টি টেলি ফোন রিসিভারের দাম ১৫ লাখ টাকা, হৃদস্পন্দন মাপা ডাক্তারী ১ টি হেডকার্ডিয়াক স্টেথোস্কোপ এর দাম ১ লাখ ১২ হাজার টাকা, ১টি এসি’র দাম ৫২ লাখ টাকা, ১ টি বই এর দাম ৮৫ হাজার টাকা, ১টি ডিজিটাল ব্লাড পেশার মেশিনের দাম ১০ লাখ ২৫ হাজার টাকা, ১টি ল্যাপটপের দাম ৩ লাখ টাকা, ১টি টেবিলের দাম ১২ লাখ টাকা, ১ টি চেয়ারের দাম ৫০ হাজার টাকা-(সুত্রঃ বিভিন্ন গণমাধ্যম ও সোস্যাল মিডিয়া)। ক্রয়ের এই দাম আর বাজারের বাস্ততসম্মত দাম এর পার্থক্য জনগণের ভাবনার সাথে অচেনা-অজানা।
এই অবস্থায় দেশের জনগণ আজও জাতীয় বা স্থানীয় যে কোন পর্যায়েই হোক না কেনো শাসক নির্বাচনে ভোটারদের ভোটাধিকার প্রয়োগে প্রবল বাঁধার সন্মুখীন হন-বহুভোটার ভোট দিতে পারেন না। সেই ভোটাধিকার প্রয়োগের জন্য জনগণ কাঙ্খিত ঠিকানার ও সময়ের প্রত্যয়ে চেয়ে আছেন। ও দিকে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি’কে জনগণের কাঙ্খিত ঠিকানায় শতভাগ পরিণত করতে অর্থাৎ জনগণকে নিরাপদ ও সুস্থির পরিবেশ, ভোটাধিকার তথা গণতন্ত্র ফিরিয়ে দেওয়ার লক্ষে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল-বিএনপি এর ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান অক্লান্ত পরিশ্রম করে যাচ্ছেন, দলকে সুসংগঠিত করতেছেন। জনগণের আকাঙ্খা পূরণে গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠার লক্ষে ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান দিন-রাত যে কাজ করে যাচ্ছেন–তার সাথে জনগণের সঠিক ভাবনার বা আকাঙ্খার মিশ্রিত ঐক্যবদ্ধ সময়ান্তে একাকার হওয়ার অপেক্ষায়; তখনই সুফল আর দেরি নয়। …….. এমন সময় আসছে বিএনপি’র ৪২তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী। সফল হোক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান জনাব তারেক রহমান এর লক্ষ বা উদ্দেশ্য, মুক্তি পাক-সুস্থ থাকুক-জনগণের মাঝে ফিরে আসুক গণতন্ত্রের মা দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া, অমর হোক রাষ্ট্রপতি শহীদ জিয়াউর রহমান বীর উত্তম। সফল হোক বিএনপি’র ৪২ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী।
লেখকঃ মোঃ মিজানুর রহমান-সাংবাদিক ও কলামিস্ট।