Mon. Jun 9th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements
খােলাবাজার২৪, সোমবার,১৪ সেপ্টেম্বর,২০২০: সীমান্তে উত্তেজনা। তারই মধ্যে বেইজিংয়ের নজরে ১০ হাজার ভারতীয়। চীনা সরকার ও চীনা কমিউনিস্ট পার্টির সঙ্গে সংযুক্ত শেনজেন ভিত্তিক প্রযুক্তি সংস্থা এই নজরদারির কাজ করছে। ‘হাইব্রিড ওয়ারফেয়ার’ এবং ‘চীনা জাতির মহান পুনর্জাগরণের’ লক্ষ্যেই এই কাজ করা হচ্ছে বলে দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিবেদনে উঠে এসেছে।
নজরে রয়েছেন, ভারতের রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ, প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি, কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী ও তাদের পরিবার। এমনকি তালিকায় নাম রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়েরও।

নজরে একাধিক কেন্দ্রীয় মন্ত্রী, বিভিন্ন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী, ন্যূনতম ভারতীয় নিরাপত্তা বাহিনীর অবসরপ্রাপ্ত ১৫ অফিসার, সিডিএ বিপিন রাওয়াত, দেশটির প্রধান বিচারপতি এস এ বোবদে সহ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা।

এছাড়াও লোকপালের বিচারপতি, ক্যাগ প্রধান জি সি মুর্মূ, শিল্পপতি রতন টাটা, গৌতম আদানি, বিনিয়োগকারী নিপুন মেহেরা, ভারত পে’র প্রতিষ্ঠাতা সহ ভারতের বিশিষ্ট শিল্পপতিরা।

ভারতের রাজনৈতিক, সরকারি প্রতিষ্ঠান বা অর্থনৈতিক ক্ষেত্রের প্রথম সারির ব্যক্তিত্বরাই শুধু নন, নজরদারির তালিকায় রয়েছেন বিভিন্ন ক্ষেত্রের গণ্যমান্যরা। আমলা, বিচারপতি, বিজ্ঞানী, শিক্ষাবিদ থেকে শুরু করে চীনা নজরদারিতে রয়েছেন সাংবাদিক, ক্রীড়া ব্যক্তিত্ব, ধর্মীয় ব্যক্তিত্ব, সামাজিক অধিকারের আন্দোলনকারীরা।

এমনকি, একশরও বেশি অর্থনৈতিক অপরাধ, দুর্নীতি, সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপ, মাদক-সোনা ও অস্ত্র পাচারকারীও চীনা নজরদারির তালিকায় অন্তর্ভুক্ত।

খেলাধুলা, সংস্কৃতি এবং ধর্মীয় ব্যক্তিত্বদের মধ্যে তালিকায় নাম রয়েছে, সাবেক ক্রিকেটার শচিন টেন্ডুলকার, চলচ্চিত্র পরিচালক শ্যাম বেনগাল, ধ্রুপদী নৃত্যশিল্পী সোনাল মানসিং, প্রাক্তন অকাল তখত জেঠেদার গুরুবচন সিং, চার্চের বেশ কিছু বিশপ এবং আর্চবিশপ, রাধে মা, দ্বিতীয়বারের মতো শিরোমণি গুরুদ্বার নিবন্ধ কমিটিতে নির্বাচিত মহিলা জগির কৌর এবং নিরঙ্কারী মিশনের হরদেব সিংয়ের।

নিয়ন্ত্রণরেখায় উত্তেজনা চরমে। মুখোমুখি দাঁড়িয়ে ভারতীয় ও চীনা সেনা। তখন জেনহুয়া ডেটা ইনফরমেশন টেকনোলজি কোঃ এই নজরদারি অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। উল্লেখ্য এই সংস্থার দাবি, তারা চীনা গোয়েন্দা বাহিনী, সেনা ও নিরাপত্তা সংস্থার সঙ্গে যুক্ত।

সংস্থার ডাটাবেসে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ব্রিটেন, জাপান, অস্ট্রেলিয়া, কানাডা, জার্মানি, আরব আমিরাতের তথ্যও রয়েছে। গুয়াংডং প্রদেশের শেনঝেন শহরে সংস্থার নেটওয়ার্ক রিসার্চ থেকে এগুলো পেয়ে থাকে।

জেননহুয়া ২০-১৮ সালের এপ্রিলে সংস্থা হিসেবে নিবন্ধিত হয়েছিল এবং চীনে ২০টি প্রসেসিং কেন্দ্র স্থাপন করেছিল। সংস্থা তার ক্লায়েন্ট হিসাবে চীন সরকার এবং সেনা গণ্য করে থাকে।

এ সংক্রান্ত বিষয়ে সংস্থার ওয়েবসাইটে উল্লেখিত ই-মেইলে গত ১ সেপ্টেম্বর প্রশ্ন করা হলে তার কোনো জবাব মেলেনি। এমনকি ৯ সেপ্টেম্বর থেকে ওয়েবসাইটটি অকার্যকর করে দেওয়া হয়েছে। এরপর জেনহুয়ার প্রধান কার্যালয় দ্য ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের প্রতিনিধি পৌঁছালে সংস্থার তরফে কর্মীরা কোনো প্রশ্নের উত্তর দেননি। তা ‘ট্রেড সিক্রেট’ বলে জানানো হয় সংস্থার তরফে।

যদিও দ্য ইন্ডিয়ার এক্সপ্রেস দিল্লির চীনা দূতাবাস সূত্রে জানতে পেরেছে যে, কোনো প্রযুক্তি সংস্থার কাছে অন্যদেশের কোনো ব্যক্তি, সংস্থা তথ্য থাকলে তা চীনা গোয়েন্দা ও সেনাকে দেওয়ার কথা চীনা সরকার বলেনি।