
ফেরদৌস আলম, গাইবান্ধা প্রতিনিধিঃ গাইবান্ধার হরিপুর-চিলমারী সংযোগ সড়কের তিস্তা নদীর উপর নির্মিত মওলানা ভাসানী সেতু উদ্বোধনের মাত্র দ্বিতীয় রাতেই চরম নিরাপত্তাহীনতার শিকার হয়েছে। দুর্বৃত্তরা সেতুর ল্যাম্পপোস্টের বিদ্যুৎ সংযোগের তার চুরি করায় পুরো সেতুটি এখন রাতের বেলা অন্ধকারে ঢেকে যায়। এতে যানবাহন ও পথচারীদের চলাচল মারাত্মক ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে এবং দুর্ঘটনার আশঙ্কা বহুগুণ বেড়েছে।
গাইবান্ধা এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জল চৌধুরী শুক্রবার সকালে এ ঘটনার সত্যতা নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, উদ্বোধনের পরদিনই দুর্বৃত্তরা সেতুর ল্যাম্পপোস্টের বৈদ্যুতিক তার চুরি করেছে। এতে সেতুর আলোকসজ্জা সম্পূর্ণভাবে বন্ধ হয়ে যায়।
বৃহস্পতিবার রাত থেকেই সেতুটি অন্ধকারে নিমজ্জিত হয়। স্থানীয় যাত্রী ও পথচারীরা এই অন্ধকার অবস্থার ছবি তুলে সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে প্রকাশ করেন। ফেসবুকে তার কাটা ল্যাম্পপোস্টের ছবিগুলো দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে, যা সাধারণ মানুষের মধ্যে ক্ষোভ ও হতাশার সৃষ্টি করে।
পথচারী, যানচালক ও স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, আলো না থাকায় সন্ধ্যার পর থেকে সেতুতে চলাচল করা খুবই কঠিন হয়ে পড়েছে। দুর্ঘটনার ভয়ে তারা নিরাপত্তাহীনতাবোধ করছেন। তাদের দাবি, দ্রুততম সময়ের মধ্যে সেতুর ল্যাম্পপোস্টে নতুন বিদ্যুৎ সংযোগ দিয়ে আলো ফিরিয়ে আনা হোক। পাশাপাশি, ভবিষ্যতে এ ধরনের চুরি বা নাশকতা রোধে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেওয়া প্রয়োজন।
এলজিইডির নির্বাহী প্রকৌশলী উজ্জল চৌধুরী বলেন, “বিষয়টি আমরা রাতেই জানতে পারি। আমরা দুষ্কৃতকারীদের শনাক্ত করে তাদের বিরুদ্ধে কঠোর আইনগত ব্যবস্থা নেব।” তিনি আরও জানান, দ্রুত নতুন করে বিদ্যুৎ সংযোগ দেওয়ার কাজ শুরু হবে এবং সেতুতে সার্বক্ষণিক পুলিশি নিরাপত্তা দেওয়ার বিষয়টিও বিবেচনা করা হচ্ছে।
সুন্দরগঞ্জ থানার ওসি আব্দুল হাকিম আজাদ বলেন, কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে চুরির অভিযোগ পেলে তা গুরুত্বের সাথে তদন্ত করে দুর্বৃত্তদের শনাক্ত করে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে। তিনি আরও জানান, সেতুর শৃঙ্খলা রক্ষায় ইতিমধ্যেই সেখানে পর্যাপ্ত পুলিশ সদস্য মোতায়েন করা হয়েছে। খুব শিগগিরই একটি অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প স্থাপন করা হবে এবং স্থায়ী ক্যাম্পের জন্য কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদনও জমা দেওয়া হয়েছে, যা এক মাসের মধ্যেই অনুমোদনের আশা করা হচ্ছে।
উল্লেখ্য, গত ২০ আগস্ট উত্তরাঞ্চলের মানুষের দীর্ঘ প্রতীক্ষার অবসান ঘটিয়ে মওলানা ভাসানী সেতু উদ্বোধন করেন সরকারের স্থানীয় সরকার, পল্লী উন্নয়ন ও সমবায় মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ সজীব ভূঁইয়া। উদ্বোধনের পর থেকেই প্রতিদিন হাজার হাজার মানুষ সেতুটি দেখতে ভিড় করছেন। দর্শনার্থীদের প্রত্যাশা, সেতুটি যেন নিরাপদ ও আলোকোজ্জ্বল পরিবেশে উপভোগ করা যায়।