Wed. Nov 12th, 2025
Advertisements

ইন্দুরকানী (পিরোজপুর) প্রতিনিধি: পিরোজপুরের ইন্দুরকানী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে তথ্য চাইতে গেলে সাংবাদিকের সঙ্গে অশোভন আচরণের অভিযোগ উঠেছে এক ডাটা এন্ট্রি অপারেটরের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার সকালে উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে পানিশোধনাগারের তথ্য সংগ্রহ করতে গেলে উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. ননী গোপাল সংশ্লিষ্ট ডাটা এন্ট্রি অপারেটর মিঠুনকে তার কক্ষে ডেকে সাংবাদিককে প্রয়োজনীয় তথ্য দিতে নির্দেশ দেন।

তবে কর্মকর্তার সামনেই মিঠুন সাংবাদিককে বলেন, “পরে দেব।” সাংবাদিক অনুরোধ করে বলেন, “ভাই, দুই–তিনটি কাগজ দিলেই হয়ে যায়, পরে কেন?” জবাবে মিঠুন বলেন, “আপনার ইচ্ছামতো দিতে পারব না, এখন কিছুই দেব না।”

সাংবাদিক তখন স্বাস্থ্য কর্মকর্তাকে বিষয়টি জানালে তিনি অসহায়ভাবে বলেন, “আপনি নিউজ করেন, ওরা আমার কথাও শোনে না।”

উল্লেখ্য, হাসপাতালের পানিশোধনাগারটি গত ২৫ আগস্ট থেকে বন্ধ রয়েছে। ২০২২ সালে পিরোজপুর জেলা স্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর প্রায় ২২ লক্ষ টাকার ব্যয়ে এই প্লান্টটি স্থাপন করেছিল। এটি হাসপাতাল ও আশপাশের মানুষের বিশুদ্ধ পানির চাহিদা পূরণে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখত। রোগীরা প্রতি লিটার পানি এক টাকায় সংগ্রহ করতে পারতেন।

কিন্তু প্লান্টটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় রোগীরা এখন পানির জন্য চরম ভোগান্তিতে রয়েছেন। চিকিৎসা নিতে আসা কয়েকজন রোগী বলেন,

“এখানে এলে পানি কিনে খেতে হয়। অনেক সময় আমাদের কাছে টাকা থাকে না। এত গুরুত্বপূর্ণ প্রকল্পটি তিন মাস ধরে বন্ধ পড়ে আছে, এটি কর্তৃপক্ষের অবহেলার ফল।”

এ বিষয়ে পানিশোধনাগারের অপারেটর সুরঞ্জিত জানান, “এপর্যন্ত আমরা আড়াই লক্ষ লিটার পানি শোধন করেছি। আমাদের ফান্ডে এক লক্ষ টাকা আছে। মেমব্রেনের দাম ৯৬ হাজার টাকা।”

তাকে প্রশ্ন করা হলে—আড়াই লক্ষ লিটার পানি বিক্রি করে ফান্ডে মাত্র এক লক্ষ টাকা কেন—তিনি বলেন, “সিস্টেমলেস,” তবে আর কোনো সদুত্তর দিতে পারেননি।

এলাকাবাসী ও চিকিৎসা নিতে আসা রোগীরা জানান, হাসপাতালে কর্মরত কিছু স্থানীয় কর্মচারী চান না পানিশোধনাগারটি পুরোপুরি চালু থাকুক। তাদের ধারণা, “পুরোপুরি চালু হলে কাজের চাপ বেড়ে যাবে। এখন তো দিন গেলেই হাজিরা, মাস গেলে বেতন।”

জেলা সিভিল সার্জন ডা. মতিয়ার রহমানের কাছে বিষয়টি জানতে চাইলে তিনি বলেন, “আমি এ বিষয়ে কিছু জানি না। টিএইচও সাহেবকে বলি, তিনি আমাকে বিস্তারিত জানাবেন।”

 

অন্যদিকে জেলা উপসহকারী স্বাস্থ্য প্রকৌশলী মঈনুল ইসলাম বলেন, “তারা আমাদের কাছে চিঠি দিয়েছিল। আমরা জানিয়েছি—প্লান্টের মেমব্রেন আমাদের রেটলিস্টে নেই। তাদের ফান্ডে পানি বিক্রয়ের টাকা ছিল, সেখান থেকে মেমব্রেন কিনে প্লান্টটি চালু করা সম্ভব ছিল। এত সময় লাগার কথা নয়।”

স্থানীয়দের অভিযোগ, হাসপাতালে কর্মরত কিছু স্টাফ বছরের পর বছর একই কর্মস্থলে রয়েছেন। তাদের প্রশ্ন, “৬–৭ বছর ধরে একই প্রতিষ্ঠানে বদলি ছাড়া চাকরি করছেন কীভাবে?”

অভিযোগ রয়েছে, উপরমহলে মোটা অঙ্কের অর্থ লেনদেনের মাধ্যমে তারা একই স্থানে বছরের পর বছর ধরে দায়িত্ব পালন করছেন এবং সাধারণ মানুষের সঙ্গে অশোভন আচরণ করছেন।