Mon. Sep 15th, 2025
Advertisements

খোলা বাজার২৪ ॥ মঙ্গলবার, ১৫ সেপ্টেম্বর ২০১৫
22বাংলাদেশ এয়ারলাইন্সের এমডি ব্রিটিশ নাগরিক কাইল হেউড ১৭ দিন ধরে উধাও । নিয়ম অনুযায়ী তার ছুটি ছিল মাত্র ৩ দিন। কিন্তু ১৭ দিন পার হলেও তিনি কর্মস্থলে যোগ দেননি। এছাড়া তিনি এখন কোথায় অবস্থান করছেন সে বিষয়ে বিমান কর্তৃপক্ষের কেউ কিছুই জানেন না। বিমান বাংলাদেশ সূত্রে এ তথ্য জানা গেছে। সূত্র জানায়, ব্যক্তিগত কারণ দেখিয়ে দুবাই যাওয়ার কথা বলে ৩ দিনের ছুটি নিয়ে ২৭ আগস্ট সস্ত্রীক ঢাকা ছাড়েন কাইল হেউড। এর পর থেকে তার আর খোঁজ মেলেনি। এর আগের ২১ কর্মদিবসের মধ্যে মাত্র একদিন অফিস করার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। কাইলের দীর্ঘ অনুপস্থিতিতে বিমানের গুরুত্বপূর্ণ অনেক ফাইল আটকে রয়েছে। ফলে ভোগান্তিতে পড়েছে বিমান কর্তৃপক্ষ। কিন্তু সরকারের কর্তাব্যক্তিদের সঙ্গে সখ্য থাকার কারণে প্রকাশ্যে এ নিয়ে কেউ মুখ খুলতে সাহস পাচ্ছে না। বিমানের কর্মকর্তা কর্মচারীরা জানান, জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্মরণসভায় খোদ বিমানমন্ত্রী, পরিচালক পর্ষদ চেয়ারম্যান উপস্থিত থাকলেও দেখা মেলেনি কাইল হেউডের। এ নিয়ে নানা মুখরোচক আলোচনা শোনা যায়। অনেকেই বলছেন, এত বড় স্পর্ধা অতীতে আর কেউই দেখানোর সাহস পাননি। এছাড়া জাতির জনককে অসম্মান করেছেন বলেও মন্তব্য করছেন অনেকেই। জানা গেছে, হজ ফ্লাইট চলাকালীন সময়ে বিমানের সব কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ছুটি বাতিলের প্রজ্ঞাপন জারি করা হলেও কাইল সেই আদেশের তোয়াক্কা করেনি। গত ১৬ আগস্ট থেকে হজ ফ্লাইট শুরু হলেও মন্ত্রণালয়ের আদেশ অমান্য করে মাত্র ৩ দিন অফিস করেছেন তিনি। এ প্রসঙ্গে সাবেক বৈমানিক ক্যাপ্টেন নাসিম বলেন, কাইল হেউডকে আনা হয়েছে বিমানকে লাভজনক করতে। কিন্তু মনে হচ্ছে, লাভ তো হবেই না, বরং তার কারণে লোকসান গুনতে হবে বিমানকে। এমন একজন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তি যদি অফিস না করেন, তাহলে স্বাভাবিকভাবেই বিমানে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হবে। এর দায়ভার পড়বে সরকারের ওপর। অপর একটি সূত্র জানিয়েছে, কাইলের নানা কেলেঙ্কারি বিমানে এখন আলোচিত বিষয়। তার আশ্রয় প্রশ্রয়ে থাকা বিমানের কার্গো শাখার জিএম আলী আহসান বাবু ও জেদ্দার স্টেশন ম্যানেজার আবু তাহেরও দুর্নীতিতে জড়িয়ে পড়েছেন। সম্প্রতি জেদ্দায় কর্মরত তাহেরের বিরুদ্ধে বিমানের তহবিল আত্মসাতের সুনির্দিষ্ট অভিযোগ তদন্তে প্রমাণিত হয়। এরপর তাকে প্রত্যাহারের জন্য নির্দেশ দেয় বিমান বোর্ড। কিন্তু কাইল তাকে জেদ্দা থেকে আনতে রাজি হননি। উল্টো তাহেরের মতো দক্ষ ও গুণী কর্মকর্তা বর্তমানে বিমানে নেই বলে সাফাই গান কাইল। এছাড়া তাহেরকে প্রত্যাহার করা হলে জেদ্দা স্টেশন অচল হয়ে যাবে বলেও জানান কাইল। অথচ বিমানের লন্ডন স্টেশনের দক্ষ কর্মকর্তা মিজানুর রহমানকে তুচ্ছ ঘটনায় প্রত্যাহার করে ঢাকায় আনা হয়। বিমানের একাধিক কর্মকর্তা বলেন, পাহাড়সম দুর্নীতি আর অভিযোগ নিয়ে এখনও কিভাবে কাইল স্বপদে বহাল রয়েছেন তা বোধগম্য নয়। আশা করি সরকার বিষয়টি গভীরভাবে পর্যবেক্ষণ করবে। প্রয়োজনে দুর্নীতি দমন কমিশন (দুদক) কিংবা বিনিয়োগ বোর্ডের মাধ্যমে তদন্ত করার উদ্যোগ নেবে সরকার।