খোলা বাজার২৪, মঙ্গলবার, ৬ অক্টোবর ২০১৫
আসিফ আকবার বাংলাদেশের একজন জনপ্রিয় পপ ধাঁচের সঙ্গীত শিল্পী। নাম খ্যাতি সব কিছুই যেন নিজের ঝুড়িতে করে নিয়েছেন। গানের জগতে নিজেকে এখন মেলে রেখেছেন ডানাহীন আসিফ। আসিফ মানেই হিট, আর শ্রোতাদের অফুরন্ত ভালবাসা। সব মিলিয়ে যেন অনেক ভালই আছে আসিফ। তবে হঠাৎ করে আসিফ তার নিজের স্ট্যাটাসে লিখেছেন, সতেরো বছরের ক্যারিয়ারে আজ পর্যন্ত ফিল্মের গান বাবদ কোন রেভিনিউ পাইনি। সিলিকন ভ্যালী থেকে উঠে আসা সিনথেটিক মিউজিক ডিক্টেটরদের দাপটে কোনঠাসা গুনী এবং শ্রদ্ধাভাজন সঙ্গীত পরিচালকরা।
আসিফের কথার ভাষ্যঅনুযায়ী বোঝা যাচ্ছে দেশের গানের বাজারো চোর ঢুকেছে। পাঠক আসুন আসিফ আকবরের দেওয়া স্ট্যাটাসটি দেখে নেওয়া যাক।
আসিফ পাগল গান প্রিয়দের জন্য স্ট্যাটাসটি হুবুহু তুলে ধরা হচ্ছে:
চলচ্চিত্রের গান মানেই পর্দা কাঁপানো গান। এখন আর পর্দা কাঁপছে না ,এখন হচ্ছে বেসরকারী টিভির আন্তঃ লবিং পর্দা,তথা কথিত ঋগ জধফরড় আর ফেসবুক কাঁপানো গান । সিলিকন ভ্যালী থেকে উঠে আসা সিনথেটিক মিউজিক ডিক্টেটরদের দাপটে কোনঠাসা গুনী এবং শ্রদ্ধাভাজন সঙ্গীত পরিচালকরা। স্বাধীনতার পর থেকে চলচ্চিত্রের সঙ্গীত পরিচালক শিল্পী এবং গীতিকাররা নিয়মিত পারিশ্রমিকের বাইরে মেধাসত্ত্বের কিছুই পাননি। যখন পাওয়ার চেষ্টা করেছেন,ততক্ষনে অনেক দেরী হয়ে গেছে। কপিরাইট আইনের মারপ্যাচে উল্টো স্বত্ত্ব হারাচ্ছেন তারা ।
অতীতে রেডিও, টিভির গান থেকেই চলচ্চিত্রে বহু গান সংযুক্ত হয়েছে। এমনকি আমার এ্যালবাম ‘ও প্রিয়া তুমি কোথায়’ নামে ব্যবসা সফল ছবিও হয়েছে। সতেরো বছরের ক্যারিয়ারে আজ পর্যন্ত ফিল্মের গান বাবদ কোন রেভিনিউ পাইনি। অশ্লীল, নকল গান এবং অনুমতিবিহীন এ্যালবাম প্রকাশের প্রতিবাদে ফিল্মের গানে অনুপস্থিত ছিলাম সাতবছর,ফলাফল শূন্য, কিন্তু হতোদ্যম হওয়ার প্লেয়ার আমি না ।
দেশবরেন্য সঙ্গীতজ্ঞ আহমেদ ইমতিয়াজ বুলবুল ভাই, শ্রদ্ধেয় মানাম আহমেদ ভাই, শ্রদ্ধেয় শওকত আলী ইমন ভাই এবং বন্ধু প্রতীম সঙ্গীত পরিচালক আলী আকরাম শুভ সহ আমরা সবাই একাট্টা হয়েছি। আমার যদি ফিল্মে গাইতে হয় তাহলে সঙ্গীতের নীল রক্তবাহী এই শ্রদ্ধা ভাজনরাই কাজ করবেন। ফিল্মের পরিচালক ,প্রযোজক এসে গান পছন্দ করে নিয়ে যাবেন। ফিল্মের অলিগলি আমাদের চিরচেনা।
অতীতে দেখেছি ছবির পরিচালকরা হিন্দী গানের ক্যাসেট ধরিয়ে দিয়েছেন,এখন ধরিয়ে দিচ্ছেন তামিল ছবির গান,সঙ্গীত পরিচালক অসহায়,নইলে আবার কাজ ছুটে যাবে, আরেকজন নকলবাজ প্রস্তুত । পৃথিবীর সব তামিল গান আমি জানিনা, গাওয়ার পড়ে শুনি নকল ছিলো, এখন থেকে এগুলো আর চলবে না । আমরা শ্রোতাদের হাতে গান তুলে দিতেই থাকবো, হয়তো নায়ক নায়িকার ঠোঁট মেলানো বঞ্চিত হবেন দর্শক, কিন্তু গান ঠিকই পেয়ে যাবেন শ্রোতা, স্বত্ত আমাদের কাছেই থাকবে। বাজারে শিয়ালের সংখ্যা অত্যাধিক বৃদ্ধি পাওয়াতে মুরগীর জন্য অভয়ারন্য তৈরী করতেই হচ্ছে।