খোলা বাজার২৪ ॥ শুক্রবার, ২৩ অক্টোবর ২০১৫: বাংলা চলচ্চিত্র জগতের কিংবদন্তি চলচ্চিত্র নির্মাতা চাষী নজরুল ইসলামের ৭৫তম জন্মদিন আজ। তিনি ১৯৪১ সালের ২৩ অক্টোবর বিক্রমপুরের শ্রীনগর থানাধীন সমষপুর গ্রামে জন্মগ্রহণ করেন।
চাষী নজরুল ইসলাম ১৯৬১ সালে চলচ্চিত্রকার সৈয়দ মোহাম্মদ আওয়ালের মাধ্যমে চলচ্চিত্র অঙ্গনে পদার্পণ করেন। সে সময়ের খ্যাতিমান চলচ্চিত্রকার, অভিনেতা ফতেহ লোহানী এবং বরেণ্য সাংবাদিক, চলচ্চিত্রকার ওবায়েদুল হকের সহকারী পরিচালক হিসেবে তিনি চলচ্চিত্র পরিচালনার সঙ্গে যুক্ত হন। বাংলাদেশের মুক্তিযুদ্ধনির্ভর প্রথম পূর্ণদৈর্ঘ্য কাহিনীচিত্র ‘ওরা ১১ জন’ এবং মুক্তিযুদ্ধভিত্তিক চলচ্চিত্র ‘সংগ্রাম’ (১৯৭৪) তিনি নির্মাণ করেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হওয়ার পর মুক্তিযুদ্ধ নিয়ে পরপর দুটি চলচ্চিত্র পরিচালনার কারণে চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালকদের মধ্যে আলোচিত হয়ে উঠেছিলেন।
এর পর তিনি একে একে নির্মাণ করেন ‘সংগ্রাম’, ‘বাজিমাত’, ‘দেবদাস’, ‘চন্দ্রনাথ’, ‘শুভদা’, ‘বিরহ ব্যথা’, ‘রঙিন বেহুলা লক্ষ্মীন্দর’, ‘ভালো মানুষ’, ‘লেডি স্মাগলার’, ‘মিয়া ভাই’, ‘তিন কন্যা’, ‘বাসনা’, ‘পদ্মা মেঘনা যমুনা’, ‘দাঙ্গা ফ্যাসাদ’, ‘আজকের প্রতিবাদ’, ‘মহাযুদ্ধ’, ‘শিল্পী’, ‘হাঙ্গর নদী গ্রেনেড’, ‘মেঘের পরে মেঘ’, ‘হাছন রাজা’, ‘শাস্তি’, ‘সুভা’, ‘ধ্রুবতারা’, ‘দুই পুরুষ’, ‘রঙিন দেবদাস’ ইত্যাদি। সর্বাধিক মুক্তিযুদ্ধের ছবি এবং সাহিত্যনির্ভর ছবির খ্যাতিমান নির্মাতা চাষী নজরুল ইসলাম ১৯৮৬ সালে ‘শুভদা’ এবং ১৯৯৭ সালে ‘হাঙ্গর নদী গ্রেনেড’ ছবির জন্য শ্রেষ্ঠ পরিচালকের জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কার লাভ করেন। পাশাপাশি চাষী নজরুল ইসলাম পরিচালিত ‘শুভদা’ (১৯৮৬), ‘পদ্মা মেঘনা যমুনা (১৯৯১), ‘হাছন রাজা’ (২০০২) ছবিগুলো শ্রেষ্ঠ চলচ্চিত্রের জাতীয় পুরস্কার লাভ করে। চলচ্চিত্রে অসামান্য অবদানের জন্য চাষী নজরুল ইসলাম একুশে পদক লাভ করেন।
এই বরেণ্য চলচ্চিত্রকারের পরিবারের সদস্যরা জানান, জন্মদিন উপলক্ষে মুন্সীগঞ্জের সমেষপুর গ্রামে তাঁর কবরে পুষ্পমাল্য অর্পণ, দিনব্যাপী কোরআনখানির আয়োজন করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, ১১ জানুযারি-২০১৫ রাজধানীর ল্যাবএইড হাসপাতালে চিকিৎসাধীন অবস্থায় তিনি মারা যান। তিনি দীর্ঘদিন ধরে লিভার ক্যানসারে ভুগছিলেন।