Fri. Sep 19th, 2025
Advertisements

4খোলা বাজার২৪ ॥ বৃহস্পতিবার, ২৯ অক্টোবর ২০১৫: বাংলাদেশে দুই বিদেশি নাগরিক হত্যা এবং পুরান ঢাকায় হোসেনি দালানে শিয়া সম্প্রদায়ের তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতিকালে বোমা হামলায় ইসলামিক স্টেট (আইএস) জড়িত বলে আবারও দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক ‘সাইট ইনটেলিজেন্স গ্রুপ’। এসব ঘটনায় আইএসের হামলার দাবিকে বাংলাদেশ সরকার প্রত্যাখান করায় সংস্থাটি বলেছে, এতে তাদের সুনাম ক্ষুন্ন করা হচ্ছে।’
একইসঙ্গে সংস্থাটি নিজ ওয়েবসাইটে মঙ্গলবার আইএসের তথাকথিত ওয়েবসাইটের লিঙ্কও তুলে দিয়েছে।
জঙ্গি তৎপরতা পর্যবেক্ষণকারী যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংস্থাটি যে বাংলা ওয়েবসাইটের লিঙ্ক দিয়েছে তার নাম ‘আততামকীন।’ কিন্তু মধ্যপ্রাচ্যের চরমপন্থী সংগঠন আইএস-ই যে এই হামলা চালিয়েছে তার উল্লেখ সুনির্দিষ্টভাবে এতে নেই। তবে উল্লেখ রয়েছে যে, তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতিকালে ‘খলিফাহর সৈনিকগণ’ হামলা চালিয়েছে।
গত ২৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় ইতালির নাগরিক তাবেলা সিজার এবং ৩ অক্টোবর রংপুরে জাপানি নাগরিক কুনিও হোশি দুর্বৃত্তের গুলিতে নিহত হন। দুটি ক্ষেত্রেই হত্যাকাণ্ড সংঘটিত হওয়ার কয়েক ঘণ্টার মধ্যে ‘সাইট’ জানায়, এর দায় আইএস স্বীকার করেছে। সর্বশেষ গত ২৩ অক্টোবর পুরান ঢাকায় হোসেনি দালানের সামনে তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতির সময় বোমা হামলা হলে ওই সাইটটি জানায়, এই হামলার দায়ও আইএস স্বীকার করেছে।
তাবেলা সিজার ও কুনিও হোশি হত্যাকাণ্ডের পর যেসব ওয়েবসাইট থেকে এ ঘটনায় আইএস জড়িত বলে দাবি করা হয়েছিল সেসব ওয়েবসাইটের বিষয়ে পুলিশের পক্ষ থেকে তথ্য চাওয়া হয়েছিল। কিন্তু সাইটটির সহযোগী প্রতিষ্ঠাতা ও পরিচালক রিটা কাৎজ ওই সময় এ ব্যাপারে পুলিশকে কোনো সহযোগিতা করেননি। এমনকি কোন সূত্র থেকে তিনি আইএসের দায় স্বীকারের বিষয়টি প্রথমে পেলেন, তা বারবার জানতে চাওয়া হলেও কোনো তথ্য তিনি দেননি ।
দুই বিদেশি হত্যার পর প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বাংলাদেশে আইএসের কোনো অস্তিত্ব নেই। একই বক্তব্য দেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল ও পুলিশ মহাপরিদর্শক এ কে এম শহীদুল হক। সর্বশেষ তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতি বোমা হামলার ঘটনায়ও আইএসের কোনো যোগসূত্র নেই বলে দাবি করা হয় সরকারের পক্ষ থেকে।
দুইটি হত্যাকাণ্ড ও একটি বোমা হামলার ঘটনায় আইএসের সংশ্লিষ্টতা কিংবা এদেশে আইএসের অস্তিত্ব নেই বলে বাংলাদেশ সরকারের দেয়া বক্তব্যের প্রতিবাদ জানিয়েছে ‘সাইট’। মঙ্গলবার ওই ‘সাইটে’ প্রকাশিত জরুরি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, বাংলাদেশে গত ২৮ সেপ্টেম্বর ঢাকায় ইতালির নাগরিক তাবেলা সিজার, রংপুরে জাপানি নাগরিক কুনিও হোশি এবং সর্বশেষ হোসেনি দালানে তাজিয়া মিছিলের প্রস্তুতিকালে বোমা হামলার ঘটনায় আইএস দায় স্বীকার করে নিয়েছিল। কিন্তু বাংলাদেশ সরকার এসব হামলার ঘটনায় আইএস-এর সম্পৃক্ততার বিষয়টি তীব্রভাবে নাকচ করে দিয়েছে। আর এই নাকচ করার মাধ্যমে তাদের আড়ালে রাখার সরকারের চেষ্টা ব্যর্থ হয়েছে ।
একই সঙ্গে সাইটটিতে দাবি করা হয় যে, বাংলাদেশ সরকার এই সাইট ও এর পরিচালক রিটা কাৎজের বিরুদ্ধে নেতিবাচক প্রচার করে তাদের মানহানির চেষ্টা চালিয়েছে। আইএস-এর দাবির বিশ্বাসযোগ্যতা সম্পর্কে তারা নিশ্চিত হয়েছে বলে উল্লেখ করেছে। সেই সঙ্গে এই হামলার দায় স্বীকার করে আইএস যে ওয়েবসাইটে বক্তব্য দিয়েছে তার লিঙ্কও প্রকাশ করেছে।
তবে ওই লিঙ্ক অনুসরণ করে যে বাংলা ওয়েবসাইটটি পাওয়া গেছে, তার নাম আততামকীন। এতে দেখা গেছে, শুক্রবার রাত ২টা ৩১ মিনিটে একটি বার্তা আপলোড করা হয়েছে। বার্তায় বলা হয়েছে, ‘বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা শহরে মুশরিক শিয়া রাফিদাদের মন্দিরের সামনে শিয়াদের সমাবেশে খিলাফাহর সৈনিকগণের কয়েকটি আই.ই.ডি হামলা। হতাহতের সংখ্যা একশ এর কাছাকাছি। আল্লাহু আকবার..।
এছাড়া ইতালির নাগরিক তাবেলা সিজার নিহত হওয়ার পরের দিন ওয়েবসাইটটিতে হত্যার বিষয়ে একটি বার্তা প্রকাশিত হয়। এতে বলা হয়, ‘গতকাল ১৪ জিলহাজ্জ ১৪৩৬ হিজরি তারিখে ঢাকায় এক বরকতময় গোপন হামলায় এক ইতালীয় ক্রুসেডারকে হত্যার মাধ্যমে বাংলাদেশে খিলাফতের সৈনিকগণ খালীফাহ ইবরাহীম (হাফিযাহুল্লাহ) এবং শায়খ আল মুজাহিদিন আবু মোহাম্মদ আল আদনানী (হাফিযাহুল্লাহ)- এর আহ্বানের প্রতিফলন ঘটিয়েছেন।