Sat. May 3rd, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

12খোলা বাজার২৪ ॥ শনিবার, ১৪ নভেম্বর ২০১৫: মঞ্চের পেছনের খবরগুলো দর্শক-শ্রোতাদের জানা হয় না। আন্তর্জাতিক লোকগানের উৎসবের প্রথম দিন বৃহস্পতিবার; রাতের মঞ্চ থেকে নেমে অবকাশ-তাঁবুতে প্রবেশ করেন ভারতের শিল্পী অর্ক মুখার্জি। তাঁর কাছে জানতে চাই, এই পৃথিবীর ঘাতকেরা গান শোনে? তিনি শিল্পী কবীর সুমনের গানের চরণ টেনে বলেন, ‘“জানি না এ পৃথিবীর ঘাতকরা গান শোনে কি না।” ঘাতকদের হৃদয়ে ভালোবাসা পৌঁছায়নি। ভালোবাসা না থাকলে গান শুনতে পারে?’
ভালোবাসার টানে উৎসবের দ্বিতীয় দিন শুক্রবার সন্ধ্যায় রাজধানীর আর্মি স্টেডিয়ামে হাজির হয়েছিলেন চল্লিশ হাজারের বেশি দর্শক-শ্রোতা। প্রথম রাতেও দর্শক উপস্থিতি ছিল এর কিছু কম-বেশি। আর সেদিন রাত দুইটা পর্যন্ত তাঁদের জাগিয়ে রেখেছিলেন ভারতের আসামের তরুণ পাপন ও তাঁর দল ইস্ট ইন্ডিয়া কোম্পানি। এই নামটি হয়ে ওঠে বৃহস্পতিবার রাতের প্রিয় নাম।
মেরিল নিবেদিত, মাছরাঙা টেলিভিশন এবং সান ইভেন্টস আয়োজিত প্রথম আন্তর্জাতিক লোকগানের উৎসব ‘ঢাকা ইন্টারন্যাশনাল ফোকফেস্ট-২০১৫’-এর দ্বিতীয় দিনে গান শুরু করেন কুষ্টিয়ার বাউল ভজন খাপা। সুফি, কাওয়ালি ও গজলের এই শিল্পী শোনান কাওয়ালি ‘গুরুগো এ ভব কারাগার’, দেড় শ বছরের পুরোনো লোককবির গান ‘ও মন রে কেন ডুব দিলে না পাক-দরিয়ায়’। ম্যাজিক বাউলিয়ানার পাঁচ তরুণ শিল্পী শোনান ‘কি দিয়ে জুড়াই বলো সখী’, বাউল শাহ আবদুল করিমের ‘কোন মেস্তরি নাও বানাইছে’, ‘করিমনা কাম ছাড়ে না মদনে, ‘সোনা বন্ধুরে আমি তোমার নাম লইয়া কান্দি’, ‘সাধের লাউ বানাইলো মোরে বৈরাগী’।
এই সন্ধ্যার অনুষ্ঠান সঞ্চালনা করেন প্রখ্যাত নজরুলসংগীত শিল্পী শাহীন সামাদ। অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন মাছরাঙা টেলিভিশনের ব্যবস্থাপনা পরিচালক অঞ্জন চৌধুরী। অতিথি ছিলেন ইমেরিটাস অধ্যাপক আনিসুজ্জামান এবং ভারতীয় হাইকমিশনার পঙ্কজ সরন। পঙ্কজ সরন বলেন, দক্ষিণ এশিয়ার প্রধান সাংস্কৃতিক কেন্দ্রে পরিণত হয়েছে ঢাকা। এটি নতুন বাংলাদেশের পরিচয়কে বিশ্বের কাছে তুলে ধরবে। আনিসুজ্জামান এই আয়োজনকে আরও মহিমান্বিত করে বলেন, ‘সকল দেশেই লোকসংস্কৃতি ও পরিশীলিত সংস্কৃতি পাশাপাশি চলে আসছে। প্রান্তিক মানুষ লোকসংস্কৃতিকে ধারণ করে। শহুরে সংস্কৃতি এবং প্রান্তিক মানুষের সংস্কৃতির মধ্যে ব্যবধান থেকেই যায়। এই দুই ধারাকে মেলাবার চেষ্টা করেছেন রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর। এই উৎসব সেই মেলাবার কাজকেই ত্বরান্বিত করবে।’
গতকাল ছিল উপমহাদেশের প্রখ্যাত শিল্পী আবদুল আলীমের সন্তানদের দিন। তাঁদের তিন ভাইবোনের মধ্যে আজগর আলীম করেন ‘সর্বনাশা পদ্মা নদী’, জহির আলীম শোনান, ‘কল কল ছল ছল’ এবং নূরজাহান আলীম শোনান ‘আমার দিন কি এমনি যাবে বইয়া’।
দ্বিতীয় দিনে আরও গান করেন স্বপ্নীল সজীব, রুবা, নাশিদ কামাল। প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত দর্শকদের গান শোনানোর অপেক্ষায় রেখেছিলেন বারী সিদ্দিকী, অর্ণব অ্যান্ড ফ্রেন্ডস, পবন দাস বাউল, মমতাজ বেগম। এ ছাড়া অপেরা পরিবেশন করার কথা চীনের ইউনান আর্ট ট্রুপের।
আজ শনিবার উৎসবের শেষ দিনে গান শোনাবে ইসলাম উদ্দিন কিসসাকার, জলের গান, নিয়াভ নি কারা, পার্বতী বাউল, ইন্ডিয়ান ওশান, কাঙালিনী সুফিয়া, হামিরা থেকে মাঙ্গানিয়ারস এবং আবিদা পারভীন। নাচ করবে লুবনা মরিয়ম ও সাধনা ড্যান্স গ্রুপ।