খোলা বাজার২৪ ॥ বুধবার, ১৮ নভেম্বর ২০১৫: বিশ্বের সেরা ১০টি চলচ্চিত্র সুনাম কুড়ালেও ধর্ষণ, পাশবিক নির্যাতন, জুলুম, অত্যাচার ও শিশু পর্নগ্রাফির কারণে ওই ছবিগুলোকে নিষিদ্ধ করা হয়েছে। চলুন জেনে নিই, সেরা সেই ১০টি ছবি সম্পর্কে।
ক্লক ওয়ার্ক অরেঞ্জ (১৯৭১) : স্ট্যানলি কুবরিকের এই চলচ্চিত্র গ্রেট ব্রিটেনে ২৭ বছর ধরে নিষিদ্ধ ছিল। অত্যধিক মারামারি, পাশবিক ধর্ষণের দৃশ্য থাকায় এই সিনেমাকে কিছুতেই গ্রেট ব্রিটেনে দেখানোর অনুমতি দেওয়া হয়নি। মার্কিন মুলুকে অবশ্য বেশ প্রশংসা কুড়িয়েছে এই চলচ্চিত্র।
দ্য বার্থ অফ এ নেশন (১৯১৫) : সাইলেন্ট মুভি। কিন্তু কৃষ্ণাঙ্গ মানুষদের আক্রমণের দৃশ্য থাকায় মুক্তির পর নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় এটি। ছবির পরিচালকও পরে স্বীকার করে নেন তার ভুল হয়েছিল।
দ্য টিন ড্রাম (১৯৭৯) : অস্কারে বিদেশি চলচ্চিত্র বিভাগে সেরা পুরস্কার জেতে এটি। চলচ্চিত্রে দেখানো হয় ১১ বছরের এক বালক ১৬ বছরের এক তরুণীর সঙ্গে সেক্স করছে। এই জন্য কানাডা ও ফিলাডেলফিয়াতে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। বলা হয় এই সিনেমা চাইল্ড পর্নগ্রাফি ছাড়া বেশি কিছু নয়। কিন্তু সিনে বিশেষজ্ঞরা এই সিনেমাকে বড় নম্বর দিয়ে বলেছেন, ছবির বিষয়বস্তু ঠিকমত বুঝলে এটা নিষিদ্ধ কোনওভাবেই হওয়া উচিত নয়।
থ্রি ডানড্রেড (২০০৬) : যুদ্ধের ওপর তৈরি হওয়া হলিউডের অন্যতম সেরা এই ছবি নিষিদ্ধ ইরান ও আরবের কিছু দেশে। এই ছবি নিয়ে ইরানের অভিযোগ, থ্রি হানড্রেড চলচ্চিত্র দিয়ে তাদের দেশকে অপমান করতে মার্কিনীদের একটা চক্রান্ত।
অল কোয়াইট অন দ্য ওয়েস্টার্ন ফ্রন্ট (১৯৩০) : হিটলার এই ছবিকে নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছিলেন। জার্মানি, ও অস্ট্রিয়ায় ১২ বছর ধরে নিষিদ্ধ ছিল এই সিনেমা। এই ছবি দেখলে নাৎসি বাহিনীর অত্যাচারের মুখে পড়তে হত। ছবিটি হিটলারের বিরুদ্ধে যুদ্ধের ওপর তৈরি।
সালো/হানড্রেড টোয়েন্টি ডেজ অফ সোডোম (১৯৭৫) : চার দুষ্কৃতি অপহরণ করে শিশু ও মহিলাদের। তারপর তাদের ওপর চলে এমন অত্যাচার যা দেখে গা শিউড়ে ওঠে। পাওলো পাসোলিনির এই সিনেমা ইরান, সিঙ্গাপুরসহ পাঁচটি দেশে সম্পূর্ণ নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয়। শিশুদের ওপর অত্যাচার, ধর্ষণের দৃশ্যগুলি থাকায় বিভিন্ন দেশে এর বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানানো হয়।
দ্য সিম্পসন মুভি (২০০৭) : গোটা বিশ্ব তাড়িয়ে তাড়িয়ে উপভোগ করেছে এই কার্টুন চলচ্চিত্র ।কিন্তু বার্মায় এক অদ্ভুত কারণে নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হয় এটিকে। বার্মা সরকারের অভিযোগ এই সিনেমায় হলুদ রঙকে প্রচার করা হয়েছে। হলুদ রঙ বার্মা সংস্কৃতির কাছে নাকি অপমানকর।
ব্যাক টু দ্য ফিউচার ট্রিলজি (১৯৮৫,১৯৮৯,১৯৯০) : টাইম ট্র্যাভেলের ওপর তৈরি হওয়া মজার ছবি। আনন্দের ছবি। কিন্তু চিনে এই ছবি নিষিদ্ধ। কারণ ছবিতে অনেকসময় ভবিষ্যতে যাওয়া হয়েছে। যা নাকি চিনের সরকারের নিয়ম বিরুদ্ধ। একইসঙ্গে ছবিকে কুসংস্কারে ইন্ধন দেওয়ার অভিযোগ জানানো হয়েছে। তা ছাড়া নাকি ছবিতে দেখানো হয়েছে বেজিংয়ের থেকেও থাকার ভাল জায়গা রয়েছে, যা সরকার বিরোধী।
দ্য লাস্ট ট্যাঙ্গো ইন প্যারিস (১৯৭৩) : সাহসী ছবি। ইরোটিক ড্রামা। একাধিকবার নায়িকার ঘনিষ্ঠ দৃশ্য দেখানো হয়েছে। ছবিটি ইতালি ও স্পেনে নিষিদ্ধ। সিনেমায় একটি দৃশ্যে দেখানো হচ্ছে নায়ক মার্লোন ব্র্যান্ডো সেক্সের সময় মাখন ব্যবহার করছেন। ইতালি ও স্পেনের পক্ষ থেকে বলা হয় খাবার জিনিসকে এভাবেই দেখানোটা আপত্তিকর।
ক্যানিবাল হলোকাস্ট (১৯৮০) : বিশ্বের ৪০টি দেশে নিষিদ্ধ। অনেকেই বলেছেন, ছবিটি দেখার পর অসুস্থ বোধ করেছেন। ছবিটি একটা ফেক ডকুমেন্টারির ওপর তৈরি। যেখানে ক্যানিবালিজম, গণহত্যা, ধর্ষণ, যৌন নির্যাতনকে অতি জঘন্যভাবে দেখানো হয়েছে। ছবির শ্যুটিংয়ে সত্যিকারের পশু হত্যা করা হয়েছে। ছবির পরিচালকদের বিরুদ্ধে অভিযোগ ওঠে অভিনেতা, অভিনেত্রীকেও নাকি সিনেমার সময় খুন করা হয়। অবশ্য সেটা প্রমাণিত হয়নি।