Mon. Oct 27th, 2025
Advertisements

59খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ৮ জানুয়ারি ২০১৬: গত নভেম্বর থেকে ‘অসহিষ্ণুতা’ ইস্যুতে খোলামেলা ভারত সরকারের সমালোচনা করেছিলেন বলিউড বাদশাহ শাহরুখ এবং মিস্টার পারফেকশনিস্ট খ্যাত অভিনেতা আমির খান। আর সে সময় তাদের মন্তব্য নিয়ে ভারতজুড়ে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। অবস্থা এতটাই নাজুক ছিল যে তাদের নিরাপত্তা বাড়িয়ে দ্বিগুণ করা হয়েছিল। কিন্তু, সেই নিরাপত্তা এবার কমানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার।
মুম্বাই পুলিশের বরাত দিয়ে ভারতীয় মিডিয়া বলছে, শাহরুখ ও আমির খানের মতো প্রায় ৪০ জন তারকার নিরাপত্তা কমিয়ে নেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে মুম্বাই পুলিশ। এমনকি, বলিউডের অনেক তারকার কোনো নিরাপত্তাই দিবে না বলে জানানো হয়। শুধু অমিতাভ বচ্চন সহ মোট ১৫ জন তারকার নিরাপত্তাব্যবস্থায় কোনো পরিবর্তন হচ্ছে না বলে জানা গেছে।
ভারতে গরুর মাংস খাওয়া নিয়ে একজনকে পিটিয়ে হত্যা ও সাম্প্রদায়িক সংঘাতের উসকানি, মুক্তবুদ্ধির লেখক বুদ্ধিজীবী কালবুর্গি হত্যার প্রতিবাদ এবং ভারতের ফিল্ম ও টেলিভিশন মিডিয়া ছাত্রদের আন্দোলনের সাথে একাত্মতা ঘোষণা করে একের পর এক সরকারি সম্মাননা ফিরিয়ে দিয়েছিলেন সিনেমা নির্মাতা, বৈজ্ঞানিক ও মুক্তিবুদ্ধির লেখকরা। আর দেশে চলমান এইসব বিষয় নিয়েই নিজের পঞ্চাশতম জন্মদিনে মুখ খুলেছিলেন বলিউড বাদশাহ শাহরুখ খান। বর্তমান ভারতের পরিস্থিতিকে তিনি ‘অসহিষ্ণু’ বলে মন্তব্যও করেছিলেন। কিন্তু তার এই মন্তব্যের পর থেকেই তাকে ‘মুসলমান’ ট্যাগ দিয়ে ভারত থেকে বিতাড়িত করার দাবি জানান কট্টরপন্থী ধর্মীয় দল শিবসেনাসহ বর্তমান বিজেপির অনেক সংসদ সদস্যও।
অন্যদিকে ‘অসহিষ্ণুতা’ প্রসঙ্গ ধরে ‘ইনক্রেডিবল ইন্ডিয়া’র ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডরের পদ থেকেও সদ্য আমির খানকে সরিয়ে দেওয়া হয়েছে। এর আগে তিনি অসহিষ্ণুতার প্রশ্নে এবং সাম্প্রতিক তর্ক-বিতর্ক নিয়ে প্রথমবার মুখ খুলেই রীতিমতো আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে পরিণত হয়েছিলেন। রাখঢাক না রেখেই তিনি রাষ্ট্রব্যবস্থা অসহিষ্ণু হয়ে উঠছে বলে মন্তব্য করেছিলেন। এমনকি তার স্ত্রী কিরণ রাও সন্তানদের নিয়ে একধরনের অনিরাপত্তার মধ্যে আছেন বলেও সে সাক্ষাৎকারে বলেছিলেন তিনি। এমন মন্তব্যের পর ভারতজুড়ে আলোচনার ঝড় উঠে। থানায় তার বিরুদ্ধে একাধিক মামলা হয়। রাজপথে তার কুশপুত্তলিকা দাহ করা হয়, এমনকি তাকে দেশ ছেড়ে যাওয়ারও দাবি তোলেন কেউ কেউ।
সরকারি এসব সুযোগ সুবিধা, অর্পিত দায়িত্ব থেকে তারকাদের এভাবে হঠাৎ সরিয়ে দেওয়ার পিছনে এখন সবাই সেই ‘অসহিষ্ণুতা’ নিয়ে সরকারের বিরুদ্ধে কথা বলার প্রতিশোধ হিসেবে দেখছেন।