খোলা বাজার২৪ বৃহস্পতিবার, ২৫ ফেব্রুয়ারি ২০১৬: বলিউডের সেসয় সুন্দরীদের তালিকার শীর্ষে ছিলেন। উপমহাদেশ মাতিয়ে রেখেছিলেন নিজের অভিনয় আর সৌন্দর্যে। তাঁর পুরো নাম দিব্যা ওম প্রকাশ ভারতী। তবে দিব্যা ভারতী নামে পরিচিত ছিলেন এই প্রতিভাধর অভিনেত্রী। আজ ২৫ ফেব্র“য়ারি তাঁর জন্মদিন। ১৯৭৪ সালের এই দিনেই তিনি জন্মগ্রহণ করেন। দিব্যাকে নিয়ে লিখেছেন মাহতাব হোসেন দিব্যা ভারতী ১৯৯০ সালে তেলুগু বব্বিলি রাজা চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে তাঁর চলচ্চিত্র কর্মজীবন শুরু করেন।
এরপর ১৯৯২ সালে বিশ্বআত্মা চলচ্চিত্রে অভিনয়ের মাধ্যমে হিন্দি চলচ্চিত্রে অভিনয় শুরু করেন। ভারতী শোলা অর শবনম (১৯৯২) এবং দিওয়ানা (১৯৯২) চলচ্চিত্রের মাধ্যমে বাণিজ্যিক সাফল্য লাভ করেন, এবং যার জন্যে ফিল্মফেয়ার শ্রেষ্ঠ নারী অভিষেক পুরস্কার অর্জন করেন। ১৯৯২ এবং ১৯৯৩-এর প্রথমার্ধে তিনি ১৪টি হিন্দি চলচ্চিত্রে অভিনয় করেন, যা আজ পর্যন্ত বলিউডে অভিষেক হিসেবে তার রেকর্ড হয়ে আছে।
মাত্র ১৯ বছর বয়সে ভারসোভা, মুম্বাইয়ে তাঁর ৫ তলা অ্যাপার্টমেন্ট থেকে নিচে পড়ে মৃত্যুবরণ করেন। প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান তিনি মূলত ভারসাম্য হারানোর ফলে ব্যালকনি থেকে নিচে পড়ে যান। তবে তাঁর এই আকস্মিক মৃত্যু, দুর্ঘটনাজনিত না হত্যাকাণ্ড তা অস্পষ্ট রয়ে গেছে। শাহরুখের অভিষেক ঘটে দিব্যার বিপরীতে ‘দিওয়ানা’ ছবিতে অভিনয়ের মাধ্যমে। আজ শাহরুখ কোথায় আর দিব্যা কোথায়।
পুলিশের তদন্ত ও সাক্ষীদের সাক্ষ্য যেভাবে এসেছে সেটা নির্দেশ করে এটি একটি দূর্ঘটনা ছিলো। তদন্ত রিপোর্ট অনুযায়ী, সে রাতে দিব্যার মৃত্যুর সময় তিনজন মানুষ উপস্থিত ছিল, দিব্যা ভারতীর ড্রেস ডিজাইনার নীতা লুলা, নীতির স্বামী ডঃ শ্যাম লুলা এবং বাসার কাজের মেয়ে। দিব্যার স্বামী প্রযোজক সাজিদ না“িওয়ালা সেসময় বাসায় উপস্থিত ছিলেন না। পরেরদিন ভোরে দিব্যাকে আউটডোর শুটিংয়ে যেতে হবে বিধায় রাতের বেলাতেই তিনি তার ড্রেস ডিজাইনার নীতা লুলাকে বাসায় ডেকে পাঠাযন। এই তিনজনের উপস্থিতিতে এই মর্মান্তিক ঘটনাটি ঘটে রাত ১১.৪৫ মিনিটের সময়। সালটা ছিল ১৯৯৩ এর ৫ এপ্রিল।
সাক্ষী নীতা লুলার ভাষ্য অনুযায়ী, দিব্যা ভারতী ড্রিঙ্ক করত। এই অবস্থায় খোলা জানালার উপর একেবারে ধারে বসে কাজের মেয়েটির সাথে কথা বলছিলেন। এসময় সে হঠাৎ ব্যালেন্স হারিয়ে পাঁচ তলা থেকে নীচে পড়ে যান। যার ফলে মৃত্যুকে এড়ানো যায় নি। এছাড়া আরেকটি সূত্র অনুযায়ী জানা যায়, দিব্যার উচ্চতা ভীতি ছিলো। তথ্যটা যদি সত্যি হয়ে থাকে, তাহলে জানালার ধারে তার ওভাবে বসাটা কোনওভাবেই মেলে না।
দিব্যা ভারতী ১৯৯২ সালের মে মাসে সাজিদকে গোপনে বিয়ে করে এবং সেটা অনেকদিন পর্যন্ত গোপন রাখা হয়। সাজিদ মুসলমান হওয়াতে এই বিয়েতে দিব্যার পরিবারের একেবারেই মত ছিল না। কিন্তু পরিবারের বিপক্ষে যেয়ে দিব্যা সাজিদকে বিয়ে করে। সাজিদের ভাষ্যানুযায়ী, বিয়ে করার পরে সে ধর্মান্তরিত হয়ে ইসলাম ধর্মও গ্রহণ করেন। এবং মুসলিম নাম হিসেবে ‘সানা না“িওয়ালা’ নামটি গ্রহণ করেন। কিন্তু সার্বিক বিষয় চিন্তা করে সেসব গোপন রাখা হয়। দিব্যা ভারতীকে এখনও স্মৃতি থেকে মুছে ফেলতে পারেন নি ভক্তরা। তাই তো বলিউড এখনো চোখের জল ফেলে গোপনে।