খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ২৫ মার্চ ২০১৬ : বুধবার বাংলাদেশ-ভারত ম্যাচটি শেষ হওয়ার ঘণ্টাখানেক পরে এক টুইট বার্তায় ভারতীয় ধারাভাষ্যকারদের সমালোচনা করেন অমিতাভ বচ্চন। নিজের দেশের খেলোয়াড়দের উপেক্ষা করে নাকি অন্য খেলোয়াড়দের গুণগান বেশি গাইছেন ধারাভাষ্যকাররা। অমিতাভের টুইটটি পোস্ট হওয়ার মাত্র দু মিনিট পরেই সেটি আবার নিজের অ্যাকাউন্ট থেকে শেয়ার করেন অধিনায়ক মহেন্দ্র সিং ধোনিও।
সামাজিক যোগাযোগের মাধ্যমে বিষয়টি ছড়িয়ে পড়তে হতে বেশি অপেক্ষা করতে হয়নি। নাম উল্লেখ না থাকলেও অনেকেই ধরে নিচ্ছেন তার এই বক্তব্যের লক্ষ্য ছিলেন ধারাভাষ্যকার হর্ষ ভোগলে। হর্ষও এর উত্তর দিয়েছেন আরেকটি টুইটে।
বাংলাদেশ নিয়ে ইদানীং সবাই বেশ প্রশংসায় পঞ্চমুখ। সাবেক ক্রিকেটার, কলাম লেখক, বিশ্লেষক, ধারাভাষ্যকার—সবাই। এমন নয় বাংলাদেশকে দয়া-দাক্ষিণ্য করে এমন স্তুতি। সেটা বাংলাদেশ অর্জন করেই নিয়েছে। এমনকি খোদ অমিতাভ বচ্চনও বাংলাদেশের ক্রিকেট নিয়ে দিলখোলা প্রশংসা করেছিলেন। কিন্তু ভারত-বাংলাদেশ ম্যাচের দিন যেন আসল রং বের হয়ে এল অনেকের। কিংবদন্তি অভিনেতা অমিতাভ যেমন টুইট করেন, ‘ভারতীয় কমেন্টেটরদের উচিত সারাক্ষণ অন্য খেলোয়াড়দের নিয়ে কথা বলার বদলে আমাদের (ভারতীয়) খেলোয়াড়দের নিয়ে কথা বলা।’ উত্তেজনাপূর্ণ ম্যাচে বাংলাদেশকে ১ রানে হারানোর রাতেই ধোনি অমিতাভের টুইটটি রিটুইট করেন।
এটাই পরে স্রোতের মতো ছড়িয়ে পড়ে। এ নিয়ে পক্ষে-বিপক্ষে অনেক কথাও হচ্ছে। তবে হর্ষ নিজের ফেসবুক পেজে ব্যাখ্যা দিয়ে বলেছেন, ‘ভারতীয় দর্শকেরা দুটো টিভি চ্যানেলে খেলা দেখতে পারেন। এর মধ্যে একটি টিভি চ্যানেলে ধারাভাষ্য সম্প্রচার করা হয় শুধুমাত্র ভারতের দর্শকদের কথা মাথায় রেখে। হিন্দিতে প্রচারিত সেই ধারাভাষ্যে শুধু ভারতীয় দর্শকদের নিয়ে কথা বলার স্বাধীনতা থাকে। এবং সেটাই করা হয়। আমি বলছি না তারা ভারতের পক্ষে কথা বলেন, কিন্তু তাদের সুযোগ থাকে নিজেদের খেলোয়াড়দের কেন্দ্র করে বেশি কথা বলার।’
স্টার স্পোর্টসের ইংরেজি চ্যানেলটিতে খেলা দেখেন সারা বিশ্বের দর্শক। সেখানে ভারতের প্রতি সমর্থন দেখানোর সুযোগ নেই বলেই জানিয়েছেন হর্ষ, ‘বাংলাদেশ, পাকিস্তান, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা, যুক্তরাষ্ট্রসহ পৃথিবীর যেকোনো প্রান্তে পৌঁছে যায় এটি। কাজেই এ ক্ষেত্রে ধারাভাষ্যকারদের হতে হয় একদম নিরপেক্ষ। দুটো দলের যথার্থ বিশ্লেষণগুলো তুলে ধরতে হয়। ধারাভাষ্য কক্ষে সমতা রাখতে চেষ্টা হয় দুই দেশেরই কাউকে উপস্থিত রাখতে। অথবা নিরপেক্ষ দৃষ্টিকোণ থেকে বিশ্লেষণের জন্য তৃতীয় পক্ষের কাউকে রাখতে। সেদিনও আমার ধারাভাষ্যের শ্রোতা ছিলেন দুই দলেরই মানুষ। সেখানে আমি যদি ভারতীয় খেলোয়াড়দের নিয়ে বেশি কথা বলতাম ব্যাপারটা নিঃসন্দেহে বাংলাদেশের দর্শকদের ভালো লাগত না।’
ভারতকে অন্ধ সমর্থন দিতে গিয়ে অন্য দেশকে অবজ্ঞা করা ঠিক হবে কি না, সেই প্রশ্নও তুলেছেন হর্ষ। বলেছেন, তাঁর ছেলেবেলায় দেখেছেন, বিদেশে খেলতে গেলে ভারতকে নিয়ে বিদেশি ধারাভাষ্যকাররা ভারতীয় খেলোয়াড়দের উপেক্ষা করত। এ কারণে ধারাভাষ্যকে পেশা হিসেবে নেওয়ার আগে হর্ষ ঠিক করেছিলেন, যথাসম্ভব নিরপেক্ষ থাকবেন।