খোলা বাজার২৪, রবিবার, ৮ মে ২০১৬: বিশ্ব মা দিবস আজ। মাকে ভালোবাসার বিশেষ দিন। যদিও মায়েদের ভালোবাসার বিশেষ কোনো দিনের প্রয়োজন হয় না। তবুও বিশ্বের সব মাকে একসঙ্গে একদিনে সম্মান জানাতে বিশেষ একটি দিন নির্বাচন করা হয়েছে। যে দিনটিতে আনুষ্ঠানিকভাবে সম্মান ও স্মরণ করা হয় মায়েদের। আজই সে কাক্সিক্ষত দিন। গত কয়েক বছরে দেশীয় শোবিজ অঙ্গনে অনেক তারকাই মা হয়েছেন। আর সে তারকা মায়ের মা হতে পারা ও সন্তান নিয়ে অনুভূতির কথা তুলে ধরা হলো আজকের এ আয়োজনে।
পূর্ণিমা
মা একটি অদ্ভুত ভালোলাগার শব্দ। মা না হওয়ার আগে এটি কারও পক্ষেই বোঝা সম্ভব নয়। তাই নিজের মাকে এখন সবচেয়ে বেশি অনুভব করি। মা ছিল এবং আছে বলেই আমি রীতা থেকে পূর্ণিমা হিসেবে প্রতিষ্ঠা পেয়েছি। একমাত্র মা-ই ছিল আমার পথপ্রদর্শক। এখনও মায়ের উপদেশ মেনে চলি। ভালো-মন্দ সবকিছু শেয়ার করি। মায়ের সান্নিধ্যই পৃথিবীর সবচেয়ে শান্তির জায়গা বলে আমার কাছে মনে হয়। এখন আমিও একটি সন্তানের মা। এ মা হওয়া যে কতটা আনন্দের ও গর্বের সেটা মা হিসেবে আমরা মেয়েরাই বুঝি। আমার মা আমাকে যেভাবে বড় করেছেন, তার আশীর্বাদ আমার সঙ্গে যেভাবে রয়েছে ঠিক একইভাবে আমার মেয়ে আর্শিয়ার জন্য থাকবে। বড় কোনো স্বপ্ন দেখি না। শুধু এটুকুই বিশ্বাস করি যেন মেয়েকে মানুষের মতো মানুষ হিসেবে গড়ে তুলতে পারি।
ন্যান্সি
মায়ের ভূমিকা বলে শেষ করা যাবে না। শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত সব কিছুতেই রয়েছেন আমার মা। ছোটবেলা থেকে সব কিছু মা ঠিক করেছেন আমি কি করব, কি করব না। তার ইচ্ছাতেই আমার মিডিয়ায় আসা। আমার মা হয়তো আমার মতো কাজ করতেন না। তাই তার সবটুকু সময় তিনি আমাদের দিতেন। আমি মা হওয়ার পর আমার সন্তানদের জন্য হয়তো তেমনটা করতে পারি না। তাই বলে যে আমি আমার সন্তানদের কম ভালোবাসি সেটা না। এটা সত্যি মায়ের মতো করে আমি আমার সন্তানদের সময় দিতে পারি না। আমার সন্তানরাও ছোটবেলা থেকে এটা মানিয়ে নিয়েছে। নিজের জায়গা থেকে আমার একটা প্রত্যাশা থাকবেই। আমার সন্তানরা আমার মতোই গান করুক। কিন্তু এখন সময়টা অনেক আধুনিক হয়ে গেছে। সেই কারণেই আমি ওদের জোর করতে পারব না।
দীপা খন্দকার
মায়ের অবদানে আজকের আমি। মা ছাড়া এ দুনিয়ার আলোই তো দেখতে পারতাম না। আজকের এ বিশেষ দিনে মায়ের প্রতি রইল অনেক শ্রদ্ধা আর ভালোবাসা। আমিও এখন মা। দুই সন্তান রয়েছে আমার সংসারে। তাদের ঘিরেই আমার সব স্বপ্ন। একদিন বড় হবে, মানুষের মতো মানুষ হবে। এটাই তো কামনা করি।
বর্ষা
ছোটবেলা থেকেই মায়ের আদর ভালোবাসায় বড় হয়েছি। বাবা শাসন করতেন, তাই মায়ের কাছে ছিল হাজারো আবদার। মাও সাধ্যমতো পূরণ করার চেষ্টা করেছেন। মায়ের প্রতি মমত্ববোধ থাকলেও সন্তানের প্রতি মায়ের ভালোবাসা কতটুকু সেটা বুঝতে পেরেছি নিজে মা হওয়ার পর। আমার আদরের আরিজকে একটি মুহূর্ত না দেখলে যেন অস্থির লাগে। সবসময় বুকের মাঝে আগলে রাখতে ভালো লাগে। অনন্তর সঙ্গে পৃথিবীর যে দেশেই যাই না কেন, আরিজকে সঙ্গে নিয়ে যাই। এই বয়সেও ছোট্ট শিশুটি সব ধকল সইতে পারে। এটা ওর আল্লাহ প্রদত্ত বিশেষ একটি গুণ। আমার আরিজের পাশাপাশি পৃথিবীর সব শিশুই যেন সুখে থাকে, মা হিসেবে এ কামনাই করি।
বাঁধন
মাকে নিয়ে নতুন করে বলার কিছু থাকে না। আমি যেমন পরিবার থেকে এসেছি সেখান থেকে আমার মা হয়তো অনেক কিছুতেই সরাসরি আমাকে সাপোর্ট করতে পারেননি। তবে আমাকে যে বিষয়গুলো শিক্ষা দিয়েছেন তা সঙ্গে নিয়েই নিজের চেষ্টায় একটা অবস্থান তৈরি করতে পেরেছি। কোনো ব্যাপারে মিথ্যা না বলা, খারাপ কিছু না করা- সব কিছু মায়ের কাছ থেকেই পাওয়া। তবে নিজের মা হওয়ার ব্যাপারে আমার একটি অবজারভেশন আছে। সেটি হচ্ছে, যে কোনো মেয়েকে মা হওয়ার আগে মানসিকভাবে প্রস্তুত হতে হয়। যদি সে মানসিকভাবে প্রস্তুত না হয় তবে সে তার সন্তানকে বোঝা মনে করে। কারণ, সন্তান হওয়ার পর একটা মেয়ের জীবনে অনেক পরিবর্তন আসে। তখন আশপাশে যতই মানুষ থাকুক দায়িত্বটা সম্পূর্ণ মায়ের থাকে। সেক্ষেত্রে মানসিকভাবে প্রস্তুত না হলে মাতৃত্বের স্বাদটা সে পায় না। আমি সেই জায়গায় আসল অনুভূতি গ্রহণ করতে পেরেছি। আমি চেয়েছি আমাকে ও মা বলুক। আমি চেষ্টা করি মা হিসেবে নিজের দায়িত্বটা ভালোভাবে পালন করার। কাজের বাইরে যেটুকু সময় পাই সবটুকু আমার সন্তান সায়রার জন্য। একজন মা হিসেবে এটুকুই চাই আমার সন্তান ভালো মনের মানুষ হোক।
রুনা খান
জন্মের পর থেকে মাকে দেখে আসছি। কতটা কষ্ট সহ্য করেছেন। কত ত্যাগ স্বীকার করেছেন। এটা শুধু মা-ই পারে। আমিও এখন মা। মা হিসেবে একমাত্র সন্তান রাজশ্রীর জন্য যা যা করণীয় সবই করি। ভবিষ্যতে বড় হয়ে ও কি হবে না হবে তা নিয়ে ভাবি না কখনোই। শুধু একজন ভালো মানুষ যেন হয়- সে কামনাই করি।
মৌটুসি বিশ্বাস
শুরু থেকে সব কিছুই মায়ের ওপর নির্ভর করে এসেছি। চলার ক্ষেত্রে যেমন, কাজের ক্ষেত্রে আরও অনেক বেশি। মায়ের অনুমতি আর সমর্থন না পেলে মিডিয়ায় কাজ করাই হতো না। সেটা অনেক বড় ব্যাপার। এখন নিজে মা হওয়ার পরও আমার মায়ের ওপর অনেক বেশি নির্ভর করতে হয়। যে কোনো কাজে যেতে হলে মায়ের কাছে নিশ্চিন্তে আমার মেয়েকে দিয়ে যাই। তিনি সম্পূর্ণ সময় আমার মেয়েকে দেখে রাখেন। আসলে মায়ের ভালোবাসা আর সাপোর্টের কথা বলে শেষ করা যাবে না। এখন নিজে মা হয়ে মা হওয়ার অনুভূতি আর কষ্ট দুই-ই খুব ভালোভাবে অনুভব করতে পারি।
ফারহানা মিলি
মিডিয়ায় কাজ করছি মায়ের সাপোর্টে। এখন পর্যন্ত কোনো কাজে গেলে মায়ের কাছ থেকে পুরো সহযোগিতা পাই। নিজে মা হওয়ার পর মায়ের অবস্থাটা এখন খুব ভালোভাবে বুঝতে পারি। যেটা মা না হলে কখনোই অনুভব করতে পারতাম না। নিজের সন্তানকে ঘিরেই এখন সব স্বপ্ন আর পরিকল্পনা। কাজের অবসরে চেষ্টা করি আমার ছেলেকে সময় দিতে। মা হিসেবে কিছু দায়িত্ব তো থেকেই যায়। তারপরও সেগুলো নিজের ভালো লাগা থেকেই করি। সবসময় চাইব আমার সন্তান ভালো মানুষ হোক।