খোলা বাজার২৪, বুধবার, ১৮ মে ২০১৬: ১৯৯২ সালে ‘দিওয়ানা’ সিনেমার মাধ্যমে অভিষেক শাহরুখ খানের। তাও এ সিনেমার অর্ধেক অংশে ছিলেন তিনি। কিন্তু পরবর্তীতে এই শাহরুখ খানই সিনেমায় তৈরি করেন নিজস্ব ভঙ্গিমা, আলাদা আবেদন। যার ফলে শুধু বলিউড নয় পৃথিবীব্যাপী শাহরুখ খান এখন পরিচিত নাম।
এ পর্যন্ত প্রায় আশিটির অধিক সিনেমায় অভিনয় করেছেন তিনি। শুধু পদ্মশ্রী নয়, অভিনয় গুণে পেয়েছেন দেশ বিদেশের একাধিক পুরস্কারও। ১৪ বার জিতেছেন ফিল্ম ফেয়ার অ্যাওয়ার্ড। অভিনয়ে নিজস্ব ঢং, উপস্থাপন শৈলী তাকে নিয়ে গেছে অনন্য মাত্রায়।
দর্শকদের মধ্যে শাহরুখ উন্মাদনা সবসময়ই অন্য যে কোনো অভিনয়শিল্পীর চেয়ে একটু বেশি। শাহরুখের প্রতি ভক্তদের এমন টান শুধু এক কারণে নয়। রয়েছে বহু কারণ। শাহরুখের প্রতি ভক্তদের আগ্রহের বেশকিছু কারণ নিয়ে সাজানো হয়েছে এই প্রতিবেদন।
এক. সিনেমার গল্পের সাথে শাহরুখ নিজেকে খুব সহজে মানিয়ে নিতে পারেন। যা খুব সাধারণভাবে অনেক অভিনেতাকেও অনুপ্রাণিত করে।
দুই. বাবা-মাকে হারান শাহরুখ। তারপর থেকে সংগ্রাম করে সামনে এগিয়ে যান এই অভিনেতা। এমন অবস্থায় একমাত্র বোনের ভরণপোষণের দায়িত্বও ছিল তার মাথায়। শাহরুখের এমন যুদ্ধজীবনের গল্প যে কোনো মানুষকেই তার প্রতি আকৃষ্ট করে।
তিন. শাহরুখ যখন রোমান্টিক অভিনেতা হিসেবে দর্শকদের মধ্যে আলোড়ন তুলছে ঠিক সে সময়ে ‘ডর’ এবং ‘বাজিগর’ সিনেমার মতো সিনেমা তাকে খুব সহজেই আরও বেশি সমৃদ্ধ হতে সাহায্য করেছিল। যেখানে খুব সুনিপুণভাবে দর্শকদের সামনে নতুন শাহরুখকে হাজির করতে পেরেছিলেন। সাথে সাথে ভিন্নধর্মী এই অভিনয়ের কারণে শুধু পুরস্কারই জেতেননি, চলচ্চিত্রবোদ্ধাদের প্রশংসাও কুড়িয়েছেন।
চার. ১৯৯৫ সালে মুক্তিপ্রাপ্ত আদিত্য চোপড়ার ‘দিলওয়ালে দুলহানিয়া লে জায়েঙ্গে’ ভারতের অন্যতম সেরা রোমান্টিক সিনেমা হিসেবে খেতাব পেয়েছে বহু আগে। শুধু এই সিনেমাটিই শাহরুখকে অবলীলায় অনন্য উচ্চতায় পৌঁছে দিতে সক্ষম হয়েছিল।
পাঁচ. শাহরুখের টোলপড়া হাসিমুখ যে কোনো দর্শকের মন খুব সহজেই জয় করে নেয়।
ছয়. সহসা সিদ্ধান্ত নেয়ার ক্ষেত্রে শাহরুখের বুদ্ধিমত্তা অসামান্য। সাংবাদিকদের সামনে কিংবা অন্য কোথাও যে কোনো প্রশ্নের মুখোমুখি হলে তা সামলে নেয়ার দক্ষতা বহুবার দেখিয়েছেন এই অভিনেতা।
সাত. বাস্তবজীবনে নিজের প্রেমকে প্রমাণ করা এবং ভিন্নধর্মের একজনকে জীবনসঙ্গী হিসেবে গ্রহণ করার পাশাপাশি তাদের বিভিন্ন উৎসবের সাথে নিজেকে মানিয়ে নেওয়া তার ভক্তকুলের মন জোগাতে নিয়ামক হিসেবে কাজ করেছে।
আট. যে কোনো অভিনেত্রীর সাথেই শাহরুখ মানিয়ে যায় যা অন্যতম একটি কারণ।
নয়. অভিনয়ে সব সময়ই তাকে প্রচুর অ্যানার্জিটিক দেখা যায়। যা তার সিনেমাগুলোর উপরে ছাপ রাখে।
দশ. স্টেজে বিভিন্ন সময়ে হাস্যরস কিংবা কৌতুক তৈরিতে তার জুড়ি মেলা ভার। শাহরুখকের রোমান্টিক সিনেমাগুলো তরুণদের খুব প্রবলভাবে প্রভাবিত করতে পারে।
এগার. অভিনয়ে নিজস্ব স্টাইল তৈরি করার কারণে তিনি আরও বেশি অনুকরণীয় হয়ে উঠছেন। যা তার ভক্তের সংখ্যা বৃদ্ধিতে একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।
বারো. ভারতীয় চলচ্চিত্র বোদ্ধাদের ভবিষৎ বাণী- দিলীপ কুমার এবং অমিতাভ বচ্চনের পর শাহরুখের অবস্থান। যা তাকে আরেক ধাপ এগিয়ে দিয়েছে। নাচের সময় ভারসাম্য রাখায় শাহরুখ বেশ পারদর্শী। এই বিষয়টি যে কাউকে ভাবিয়ে তুলতে সক্ষম।
তেরো. উপস্থাপক হিসেবে যে কোনো অনুষ্ঠানে শাহরুখ সবচেয়ে বেশি জনসংযোগ তৈরি করতে সক্ষম। কথা দিয়ে আগতদের মাতাতে তার জুড়ি মেলা ভার।
চৌদ্দ : সময়ের সঙ্গে স্টাইল কিংবা রুচির পরিবর্তন খুব সহজেই ধরতে পারেন শাহরুখ। তার অন্যতম প্রমাণ এইট প্যাক তৈরি করা, ‘ডন’ কিংবা ‘রা ওয়ান’-এর মতো সিনেমায় অভিনয় করা তার পক্ষে সম্ভব হয়েছে। যা তরুণ ভক্তকুলকে খুব সহজেই আকৃষ্ট করেছে।
এ ছাড়া আরও অনেক কারণ রয়েছে যা শাহরুখ খানকে খুব সহজেই বলিউডের বাদশা হওয়ার দাবি রাখে। সে কারণেই প্রতিনিয়ত বেড়ে চলছে এই বলিউড বাদশার ভক্তসংখ্যা।