খোলা বাজার২৪, শুক্রবার, ৪ নভেম্বর ২০১৬ :
জনপ্রিয় লেখক হুমায়ূন আহমেদের জীবন অবলম্বনেই ‘ডুব’ সিনেমা নির্মাণ করেছেন পরিচালক মোস্তফা সারওয়ার ফারুকী। খবর আনন্দবাজার’র।
সিনেমাটিতে ‘বলিউডের ফোর্থ খান’ বলে পরিচিত ইরফান খান অভিনয় করায় নির্মাণের শুরু থেকেই আলোচনায় ছিল ডুব।
তবে হুমায়ূন আহমেদের জীবনের গল্পগুলোই সিনেমা ঠাঁই পাচ্ছে এমন খবর চাউর হবার পর দুই বাংলার সিনেমা ইন্ডাস্ট্রিতেই আলোচনার ঝড় বইছে।
এছাড়া সিনেমা নির্মাণের সময় কেন বিষয়টি জানানো হল না এ বিষয় নিয়ে লেখকের প্রথম পক্ষ ও দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী এবং সন্তানরাও প্রশ্ন তুলেছেন।
যদিও অভিনেতা থেকে পরিচালক কেউই এ ব্যাপারে ‘কনফার্ম’ করছেন না কিছুই।
জানা গেছে, শ্যুটিংয়ের আগে হুমায়ূন আহমেদের প্রচুর ভিডিও দেখেন ইরফান। সেগুলো দেখেই হুমায়ূন আহমেদের কথাবার্তা বলার ধরণ— এ সব নিয়ে হোমওয়ার্ক করেছিলেন।
এছাড়া শুধু বাংলা শিখবেন বলেই ইরফান ১৫ দিন বাংলা টিউটরও রেখেছিলেন মুম্বাইতে।
সিনেমায় হুমায়ূন আহমেদের চরিত্রে ইরফান ছাড়াও তার কন্যা শীলা আহমেদের চরিত্রে অভিনয় করছেন বাংলাদেশের জনপ্রিয় অভিনেত্রী নুসরাত ইমরোজ তিশা।
লেখকের প্রথম পক্ষের স্ত্রী গুলতেকিনের ভূমিকায় রয়েছেন রোকেয়া প্রাচী। আর দ্বিতীয় পক্ষের স্ত্রী শাওনের চরিত্রে অভিনয় করছেন টালিগঞ্জের পার্নো মিত্র।
কিন্তু সিনেমা নিয়ে রাখঢাক কেন ছিল? কেনই বা হুমায়ূন আহমেদের চরিত্রে ইরফান অভিনয় করছেন তা জানা সত্ত্বেও এতদিন সেটা মিডিয়া থেকে লুকিয়ে রাখা হল?
এ বিষয়ে বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে নানা ধরনের ব্যাখ্যা। এতে বলা হচ্ছে- গল্পটা স্পর্শকাতর। শ্যুটিংয়ের সময় যাতে কোনো ঝামেলা না হয়, সেজন্যই রাখঢাক করা হয়েছে।
তবে হুমায়ূন আহমেদের কন্যা শীলা আহমেদ ভিন্ন মত দিয়েছেন।
তার মতে, ফারুকীর ছবিতে যদি লেখা থাকে ‘এটা হুমায়ূন আহমেদের জীবন অবলম্বনে’ তা হলে অবশ্যই আমাদের কাছ থেকে পারমিশন নেয়া উচিত ছিল। কিন্তু ও যদি কয়েকটা ঘটনা থেকে অনুপ্রাণিত হয়ে ছবিটা বানায়, সে ব্যাপারে আমার কিছু বলার নেই।’
হুমায়ূন আহমেদের দ্বিতীয় স্ত্রী, মেহের আফরোজ শাওনও বিষয়টিতে যথেষ্ট বিস্মিত হয়েছেন। তিনিও এর আগে জানতেন না ইরফান খান তার স্বামীর চরিত্রে অভিনয় করছেন।
তাই তার মন্তব্য, আমার এ বিষয়ে কোনো ধারণাই নেই। পরিচালক কি কোনো দিন হুমায়ূন আহমেদকে মিট করেছিলেন? আমার মনে হয় না। আমি একজনের ওপর ছবি করছি, তার পরিবারের সঙ্গে কথা না-বলে, এটা আমার কাছে যথেষ্ট বিরক্তিকর। খুব খারাপ লাগছে।
ছবিটা যৌথভাবে প্রযোজনা করছে বাংলাদেশের জাজ মাল্টিমিডিয়া, অশোক ধানুকার এসকে মুভিজ এবং ইরফান খান স্বয়ং। ছবির গোটা শ্যুটিংটা হয়েছে বাংলাদেশের বিভিন্ন লোকেশনে যেমন গুলশান, রাঙামাটি, বান্দরবান এবং বনানী।
তবে পরিচালক ফারুকীর মতে, ‘আমি চাইছি দর্শক আগে ছবিটা দেখুক। এটুকুই বলব, আমি একটা পরিবারের গল্প বলছি, কয়েকজন মানুষের ভালোলাগা, দুঃখ, ক্ষোভ, হিংসা— এই আবেগগুলো ফুটিয়ে তুলতে চেয়েছি। সেটা কার জীবন অবলম্বনে, সেটার বিচার ছবি দেখার পরে হলেই বেটার।’
এদিকে ছবি রিলিজ হলে সাহিত্যিকের পরিবারের তরফ থেকে ঝামেলা আশা করছেন কি না এমন প্রশ্নে ফারুকী বলেন, ‘মনে হয় না কোনো ঝামেলা হবে। ছবিটা একই দিনে বাংলাদেশ, ভারত ও নর্থ আমেরিকায় মুক্তি পাবে। আমি একটা মানবিক গল্প বলেছি, যার বিচার করবেন দর্শক।’