Fri. Sep 19th, 2025
Advertisements

খােলা বাজার২৪।। শুক্রবার, ১০ মার্চ ২০১৭: কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার শ্রীয়াং গ্রামের মৃত কোব্বাত আলী মজুমদারের মেঝ কন্যা আরফতের নেছা (৫৮) এর অস্বাভাবিক মৃত্যু ঘিরে দীর্ঘ ৬ দিন পার হলেও এলাকায় নানাহ গুঞ্জনে বির্তকের জন্ম দিয়েছে। ওই নিঃসন্তান বৃদ্ধা মহিলার এ মৃত্যু এলাকায় অনেকের ভাগ্য খুলে দিয়েছে।

ঘটনার দিন রাতেই থানা পুলিশ ওই মহিলার লাশ উদ্ধার করে ময়না তদন্ত শেষে গত সোমবার বিকেলে পারিপারিক কবরস্থানে দাফন প্রক্রিয়া শেষ করলেও মৃত্যু রহস্যের জট কিন্তু আজও খুলেনি। প্রকৃত এ মৃত্যুর ঘটনার রহস্য বের করে আনতে জমি-জমা সংক্রান্ত, প্রাথমিক ভাবে অভিযুক্তদের জিজ্ঞাসাবাদসহ মৃত্যুর অজানা কারনগুলো খতিয়ে গোয়েন্দা সংস্থা ডিবি কিংবা সিআইডির হস্তক্ষেপ দাবী গ্রামবাসীর।

ওইদিন বাড়ীর বড় বোনের মেয়ে জাহানারা বেগমের আত্মচিৎকারে আশে পাশের লোকজন এসে জানতে পারে আরফতের নেছা গলায় রশি লাগিয়ে আত্মহত্যা করেছে। মৃত কোব্বাত মিয়ার ৩ মেয়ে ছাড়া কোন পুত্র সন্তান ছিলনা। ফলে বহু সম্পত্তির মালিক হয়ে যায় ৩ মেয়ে আমিরুন্নেছা, আরফতের নেছা ও জমিলতেরন্নেছা। বড় মেয়ে আমিরুন্নেছা (৬৫) পৈত্রিক বাড়ীতেই ঘরজামাই স্বামী মতি মিয়াকে নিয়ে সংসার করছে। মেঝ মেয়ে আরফতের নেছা(৫৮) অন্যত্রো বিয়ে হলেও নিঃসন্তান হওয়ায় স্বামী ঘর ছেড়ে পৈত্রিক বাড়ীতেই বসবাস এবং ছোট মেয়ে জমিলতেরন্নেছা (৫০) এর বিবাহ হয় একই গ্রামের উত্তর পাড়ার সিরাজ মিয়ার সাথে।

বড় বোন আমিরুন্নেছা পুরো সম্পদ ভোগ করতে আশ্রয় নেয় নানাহ কৌশল এবং তার ছেলে মিজান ও মজিদের সহযোগিতায় অবশেষে ছোট ২ বোনের সকল সম্পদ নিজের নামে লিখে নেয়। মাঝে মধ্যে মেঝ বোন আরফতের নেছা নিজের সম্পদ বিক্রি করবে এবং তার সম্পদ রক্ষায় গ্রামের লোকজনকে বলাবলি করতো। এ সবের পরিনতিই ওই বৃদ্ধা মহিলার মৃত্যুর কারন বলে গ্রামের একাধিক সুত্র জানায়।

ওইদিন বৃদ্ধার বসত ঘরের আশে-পাশে তার বড় বোনের ছেলেমেয়েরা আনাগোনা করছিলো। গলায় ফাঁস দিয়ে ওই বৃদ্ধা মহিলার মৃত্যুর গুঞ্জন ছড়ানো হলেও এলাকার লোকজন তা গ্রহন করেনি। সে গলায় ফাঁস দিয়ে আত্মহত্যা করার মতো তার শারীরিক শক্তি সামর্থ ছিলো না। ওই মহিলা সকাল থেকে মৃত্যুর আগ পর্যন্ত স্থানীয় শ্রীয়াং বাজারে ভিক্ষে করছিলো এবং সে দীর্ঘদিন গুঁজা হয়ে (মাথা নিচু করে) চলাচল করতো। জমা সংক্রান্ত জের ধরেই ওই দিন বৃষ্টির সুযোগে ওই মহিলাকে হত্যা করা হয়েছে এবং সন্দেহের তীর বড় বোন আমিরুন্নেছা ও তার সন্তানদের দিকে। তবে লাশ দাফনের প্রস্তুতি নেয়ার সময় স্থানীয় সাংবাদিক ও থানা পুলিশের ঘটনাস্থলে উপস্থিতি টের পেয়ে পালিয়ে যায় ওই বাড়ীর অভিযুক্ত লোকজন।