খােলা বাজার২৪।। বুধবার, ১২ এপ্রিল ২০১৭: জনপ্রিয় ব্যান্ডদল চিরকুট। কথা প্রধান গান ও ব্যতিক্রমী সুর দিয়ে এরইমধ্যে গ্রহণযোগ্যত পেয়েছে দলটি। অডিও গানের পাশাপাশি চলচ্চিত্রের গানেও নিয়মিত গাইতে দেখা যায় চিরকুট। সর্বশেষ জনপ্রিয়তা পেয়েছে ‘আয়নাবাজি’ ছবিতে গাওয়া তাদের ‘না বুঝি দুনিয়া না বুঝি তোমায়’ কথায় সাজানো গানটি। আরও বেশ কিছু চলচ্চিত্র অপেক্ষায় রয়েছে চিরকুটের গান নিয়ে মুক্তি পাবার।
শুধু তাই নয়; দেশের গন্ডি পেরিয়ে সাফল্য নিয়ে গান করে বেড়াচ্ছে চিরকুট দেশের বাইরেও। পৌঁছে দিচ্ছে বাংলাদেশি গানের মুগ্ধ স্পর্শ আন্তর্জাতিক অঙ্গনে। নতুন খবর হলো এই ব্যান্ডদলটি আগামীকাল বৃহস্পতিবার (১৩ এপ্রিল) জাতীয় সংসদের সামনে মানিক মিয়া এভিনিউতে টেলিকমিউনিকেশ প্রতিষ্ঠান বাংলালিংকের আয়োজনে ‘বাংলালিংক আল্পনায় বাংলাদেশ’ অনুষ্ঠানে পারফর্ম করবে দলটি। ছবি আঁকার পাশাপাশি দলের সদস্যদের নিয়ে গানের তালে মেতে উঠবেন চিরকুট প্রধান শারমিন সুলতানা সুমি।
এই অনুষ্ঠানসহ চিরকুটের নানা ভাবনা ও সাম্প্রতিক গান-বাজনা নিয়ে সুমি কথা বললেন –
বাংলাদেশের গানের জগতে চিরকুট একটি অন্যতম জনপ্রিয় ব্যান্ড। কীভাবে চিরকুটের জন্ম হলো?
সুমি : ২০০২ সালে চিরকুট ব্যান্ডের জন্ম হয়। এরপর গানের সুরে বেড়ে ওঠা। ব্যান্ডের নাম ‘চিরকুট’ রাখি আমি নিজে। জন্মের আট বছর পর ২০১০ সালে আমরা প্রথম অ্যালবাম নিয়ে আসি। এই দীর্ঘ সময় চিরকুট নিজেকে গুছিয়ে অ্যালবামের প্রস্তুতি নিয়েছে। অনেক যত্নে আদরে গড়া সেই অ্যালবামটির নাম ছিল ‘চিরকুটনামা’। চিরকুটের প্রকাশিত দ্বিতীয় অ্যালবাম ‘যাদুর শহর’। গায়কি এবং চমৎকার কথার জন্য এই অ্যালবামটিরও সব কটি গানই বেশ প্রশংসিত হয়েছে।
চিরকুট দর্শক শ্রোতাদের মধ্যে বেশ আলোচিত নাম। চিরকুটের সবচাইতে উল্লেখযোগ্য সাফল্য কোনটি বলে মনে করেন আপনি?
সুমি : আমাদের পুরো টিমের সদস্যরা একসঙ্গে এতগুলো বছর আছি এটাই অন্যতম বড় অর্জন বলে মনে করি। আমরা প্রত্যেকেই প্রত্যেকের সুখে-দুঃখে একটা পরিবারের মতো পাশে থেকেছি। এই অর্জন কোনোভাবেই কম নয়। তাছাড়া কাছে ক্ষেত্রে চিরকুট ব্যান্ডের মাধ্যমে আমরা বাংলাদেশকে বিশ্বব্যাপী তুলে ধরেছি। ২০১৪ সালে ইন্ডিয়ার প্রেসিডেন্ট হাউজে গান করেছি,। সেখানে পাঁচ দিন ছিলাম। গত বছর মার্চে স্প্যানিশ একটা ব্যান্ডের সঙ্গে মিলিয়ে বাংলা গান করেছি। যেটা গেল বছর আমেরিকা থেকে প্রকাশ পেয়েছে।
এছাড়া ‘সাউথ বাই সাউথওয়েস্ট’ (এসএক্সএসডব্লিউ)- নামের একটা ব্যান্ড শো তে অংশ নিয়েছি যেখানে বিশ্বের অনেক বড় দেশের ব্যান্ডদলের সদস্যরাও গান গেয়েছিল। মনে আছে বারাক ওবামা ও তার স্ত্রী নিজে ওই অনুষ্ঠানের চিফ গেস্ট ছিলেন। এছাড়া আরও বিশ্বের নানা প্রান্তে গিয়ে গান করেছি।
বাংলা মিউজিক ইন্ডাস্ট্রির কী ধরণের পরিবর্তন প্রয়োজন?
সুমি : সময়ের শ্রোতে গানের ধারায় পরিবর্তন আসবে। এটা সময়ের প্রয়োজন মাত্র। যা ইতিবাচক তা গ্রহণ করে নেতিবাচকগুলো এড়াতে হবে। নিজেদের শেকড়, বাণী প্রধান গানকে প্রাধান্য দিতে হবে।
আগামীতে নতুন কী গান নিয়ে আসছে চিরকুট?
সুমি : আগামীতে চিরকুট হাজির হচ্ছে নতুন অ্যালবাম নিয়ে। নাম চূড়ান্ত হয়নি, কিন্তু এরমধ্যেই অ্যালবামের কাজ প্রায় শেষ। এই অ্যালবামে ৬ টি গান থাকবে। রোজার সময় অ্যালবামটি প্রকাশ পাবে ঈদ উপলক্ষে। তাছাড়া ‘ডুব’, ‘তুমি যে আমার’, ‘আসমানি’, ‘ভয়ঙ্কর সুন্দর’ নামের ছবিগুলোতেও চিরকুটের গান থাকছে। যা শ্রোতা-ভক্তদের মন ভরাবে বলে বিশ্বাস রাখছি।
পহেলা বৈশাখের জন্য এবারে কী পরিকল্পনা রয়েছে চিরকুটের?
সুমি : অনেক পরিকল্পনা ছিল। তবে ভেন্যু সমস্যার কারণে সব বাদ দিয়েছি। চৈত্র সংক্রান্তিতে দুটো কনসার্টে থাকব আমার। ঢাকার মধ্যেই। তার একটি হবে মানিক মিয়া এভিনিউতে ‘বাংলালিংক আল্পনায় বাংলাদেশ’ অনুষ্ঠানে। পহেলা বৈশাখের আগের রাতে, অর্থাৎ ১৩ তারিখ রাতে আমরা থাকব সেখানে। আল্পনা আঁকায় অংশগ্রহণ করব এবং উপস্থিত দর্শকদের জন্য আমাদের গানগুলো পরিবেশন করব। আশা করছি প্রচুর ভক্ত, শ্রোতাদের সাথে সেখানে দেখা হবে এবং তাদের সাথে পহেলা বৈশাখের শুভেচ্ছা বিনিময় করা যাবে।
এছাড়া ২৮ এপ্রিল পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে মালয়েশিয়াতে একটি কনসার্টে গান করব আমরা। আপাতত এই পরিকল্পনা নিয়ে বৈশাখ উদযাপনের জন্য প্রস্তুত আমরা।
বাংলালিংক আল্পনায় বাংলাদশে’ আয়োজনরে ব্যাপারে কিছু বলুন-
সুমি : আমরা অত্যন্ত আনন্দিত বাংলালিংকের এরকম একটি আয়োজনরে অংশ হতে পেরে। আশা করছি এটি একটি ব্যতক্রিমধর্মী আয়োজন হতে যাচ্ছ। যা দর্শক-শ্রোতাদের অন্যরকম অভজ্ঞিতা দেবে। আমি আরও আনন্দিত যে বাংলালিংকের এই আয়োজন ঢাকা ছাড়াও দেশের পাঁচটি অঞ্চলে উদযাপিত হবে এবং এটি সকলের জন্য উন্মুক্ত থাকবে। আশা করছি প্রচুর সংখ্যক ভক্ত, শ্রোতারা এই আয়োজনে অংশ নেবেন।
শ্রোতা-ভক্তদের উদ্দেশ্যে কিছু বলেন…..
সুমি : ভক্তদের জন্য বলতে চাই- সবসময় আমাদের সাথে থাকুন। বেশি বেশি গান শুনে, ভালোবেসে আমাদের আরও সাহস দিন। সবার প্রতি থাকল চিরকুটের পক্ষ থেকে কৃতজ্ঞতা। আমাদের সবার জন্য দোয়া চাই।