খােলা বাজার২৪।। বৃহস্পতিবার, ২৭ এপ্রিল ২০১৭: বলিউডের খ্যাতিমান অভিনেতা ও রাজনীতিবিদ বিনোদ খান্না আর নেই। আজ বৃহস্পতিবার মুম্বাইয়ের এক হাসপাতালে ৭০ বছর বয়সে তিনি মারা যান।
এনডিটিভির খবরে বলা হয়, কয়েক সপ্তাহ আগে হঠাৎ করেই পানিশূন্যতা দেখা দিলে তাঁকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল। তখন গুঞ্জন শোনা যায় ব্লাডারের ক্যান্সারের চিকিৎসা করাতেই তিনি হাসপাতাল গেছেন। তবে বিনোদ খান্নার ছেলে রাহুল খান্না তখন জানিয়েছিলেন, পানিশূন্যতার কারণেই বাবাকে হাসপাতালে নেওয়া হয়। তিনি বলেন, ‘ভয়াবহ পানি শূন্যতা দেখা দিলে বাবাকে শুক্রবার হাসপাতারে ভর্তি করা হয়। অবস্থা দ্রুত নিয়ন্ত্রণ করা হয়। তখন তিনি সুস্থ হয়ে উঠেছিলেন। চিকিৎসকরা শিগগির ছেড়ে দেওয়ার কথাও বলেন। হাসপাতালে যে যত্ন নেওয়া হয় বাবার সেটির কোনো তুলনা নেই, তাঁর প্রতি সবারই মঙ্গলকামনা ছিল।’
এপ্রিলের প্রথম দিকে হাসপাতালে থাকাকালে অসুস্থ ও শীর্ণ বিনোদ খান্নার একটি ছবি ভাইরাল হয়ে যায়। প্রিয় তারকার এই শারীরিক অবস্থার ছবি প্রকাশ নিয়ে ভক্তদের মধ্যে তখন ক্ষোভ দেখা যায়।
সত্তর ও আশির দশকের জনপ্রিয়তার চূড়া স্পর্শ করেন বিনোদ খান্না। ১৯৬৮ সালে ‘মান কি মিত’ ছবি দিয়ে বলিউডে পা রাখেন তিনি। সেখানে সুনীল দত্তের বিপরীতে খলনায়কের চরিত্রে অভিনয় করেন বিনোদ। এরপর খলচরিত্রেই অভিনয় করে যাচ্ছিলেন তিনি, এরপর সত্তরের দশকের ‘পুরাব আউর পাশ্চিম’ ও ‘মেরা গাঁও মেরা দেশ’-এর মতো ছবিগুলোতে পার্শ্বচরিত্রে অভিনয় করে যাচ্ছিলেন বিনোদ। ১৯৭১ সালে ‘হাম তুম অউর ওহ’ ছবিতে মূল চরিত্রে কাজ করার সুযোগ পান বিনোদ। এরপর গুলজার পরিচালিত ‘মেরে আপনে’ ছবিতেও মূল ভূমিকায় অভিনয় করেন তিনি।
বলিউডের অনেক ব্যবসাসফল ছবি উপহার দিয়েছেন বিনোদ, যেমন- ‘অমর আকবর আন্থনি’, ‘পারভারিস’, ‘হেরাফেরি’, ‘মুকাদ্দার কা সিকান্দার’ প্রভৃতি। এরপর পাঁচ বছরের জন্য আধাত্মিক গুরু ওশোর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন বিনোদ। ১৯৮৭ সালে ‘ইনসাফ’ ছবি দিয়ে আবারও রুপালি জগতে ফিরে আসেন এই তারকা। এ সময় তাঁর ‘চাঁদনি’ ছবিটিও ব্যবসা সফল হয়। নব্বই ও একবিংশ শতকের প্রথম দশকেও তিনি প্রচুর কাজ করেছেন। সালমান খান অভিনীত ‘দাবাং’ ছবিতে তাঁর অভিনয় নতুন করে প্রশংসিত হয়। সর্বশেষ তাঁকে দেখা যায় ২০১৫ সালের ছবি ‘দিলওয়ালে’তে।
পাঞ্জাবের গুরুদাসপুর থেকে বিজেপির হয়ে বিনোদ খান্না একাধিকবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। বিনোদ খান্না ভারতের সংস্কৃতি ও ভ্রমণ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী ছিলেন, দায়িত্ব পালন করেছেন পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়েরও।
বিনোদ খান্না দুবার বিয়ে করেছেন। প্রথম স্ত্রী গীতাঞ্জলির সংসারে তাঁর দুই ছেলে- রাহুল ও অক্ষয়। আর দ্বিতীয় স্ত্রী কবিতার সংসারে রয়েছেন এক ছেলে স্বাক্ষী ও এক মেয়ে শ্রদ্ধা।