খােলা বাজার২৪।। বুধবার, ৫ জুলাই, ২০১৭: দেশে এখন পর্যন্ত মুক্তি না পেলেও পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে প্রদর্শিত হয়ে প্রশংসিত হচ্ছে মোস্তফা সরয়ার ফারুকীর চলচ্চিত্র ‘ডুব’। এটি ‘২০তম সাংহাই আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব’ ও ‘৩৯তম মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসব’-এ প্রশংসা কুড়িয়েছে দর্শক ও সমালোচকদের। মস্কো আন্তর্জাতিক চলচ্চিত্র উৎসবে ছবিটি অর্জন করেছে কোমারস্যান্ত জুরি পুরস্কার। উৎসবে অংশগ্রহণ শেষে দেশে ফিরেছেন নির্মাতা ফারুকী ও অভিনেত্রী তিশা। শুধু এ অর্জনই নয়, আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমেও এসেছে ছবিটির প্রশংসা। আলোচনায় এসেছে হলিউড রিপোর্টার-এ প্রকাশ হওয়া এক সমালোচনা। সেখানে চলচ্চিত্র সমালোচক দেবোরাহ ইয়াং তার সমালোচনায় তুলে ধরেছেন চলচ্চিত্রটি নিয়ে তার নানা পর্যবেক্ষণ। ফারুকী যে তার পূর্ববর্তী নির্মাণশৈলী থেকে সরে এসে আরো সামনে এগিয়েছেন তাও ধরা পড়েছে তার চোখে।
ইয়াং বলেন, ‘টেলিভিশন’ এবং ‘পিঁপড়াবিদ্যা’ ছবি দুটির তুলনায় একদম আলাদা এই ছবিটি। ছবির ভিজ্যুয়াল স্টাইল এবং কাহিনীর গভীরতা মস্তিষ্কে নাড়া দেবে। ‘ডুব’-এর কাহিনীও উন্মোচন করেছেন তিনি। ফারুকীর ছবির মূল চরিত্র জাভেদ হাসান খানের ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ইরফান খান। তার স্কুলশিক্ষিকা স্ত্রী মায়ার ভূমিকায় আছেন রোকেয়া প্রাচী। তিশা অভিনয় করেছেন মেয়ে সাবেরির ভূমিকায়। সাবেরির সহপাঠী নিতুর ভূমিকায় অভিনয় করেছেন ভারতীয় অভিনেত্রী পার্ণো মিত্র। ‘ডুব’ ছবির কাহিনী একজন মধ্যবয়স্ক স্বনামধন্য চলচ্চিত্র নির্মাতাকে নিয়ে।
ছবিতে নির্মাতা তার স্ত্রীকে ছেড়ে মেয়ের সহপাঠীকে বিয়ে করেন। কোনো হত্যার কাহিনী নয় এটি। বরং অহংকার ও আত্মমর্যাদার কাহিনী যা ঢাকার একটি মধ্যবিত্ত পরিবারের অবস্থান পাল্টে দেয় এবং প্রতিটি সদস্যের মন ভরিয়ে তোলে কষ্টে এবং অনুতাপে। তার বর্ণনা মতে ছবিতে দেখানো হয়েছে জাভেদ হাসানের নামে গুজব ছড়ানো হচ্ছে যে, সে তার ছবির অভিনেত্রী এবং মেয়ের সহপাঠী নিতুর সঙ্গে সম্পর্কে জড়িয়েছেন। স্ত্রী মায়ার কাছে সত্য জানানোর সাহস ছিল না জাভেদ হাসানের। মায়াকে গাড়িতে করে লং ড্রাইভে যান তিনি। ধীরে ধীরে কঠিন সত্যটা জানান। জাভেদ জানান, তাদের বৈবাহিক জীবন একঘেয়ে হয়ে যাচ্ছে।
অতীতের মতো নেই আর। জাভেদের মুখে এ ধরনের কথা শুনে অবাক হয়ে যান মায়া। জাভেদের সন্তানেরা এসব জানতে পেরে বাবার সঙ্গে কথা বলা বন্ধ করে দেয়। নিতুকে জীবন থেকে আলাদা করার জন্য জাভেদ তার ফিল্ম স্টুডিওর এক পাশে তৈরি করা ঘরে একা থাকা শুরু করে। স্ক্যান্ডাল এড়াতে নিতু ছবির কাজ ছেড়ে দেয়। কিন্তু খুব সহজেই জাভেদের মন গলাতে সক্ষম হয় নিতু। জাভেদের পরিবারের জন্য পরিস্থিতি মেনে নেয়া এবং জাভেদের অনুপস্থিতি খুব কঠিন ছিল। পরিবার ও প্রেমিকার মধ্যে একজনকে বেছে নেয়ার সময়টাতে জাভেদকেও স্বার্থপর হতে হয়েছে। প্রাণবন্ত এবং শক্তিশালী একটি চরিত্র ছবি নির্মাতার মেয়ে সাবেরি। বাস্তবসম্মত, আবেগপ্রবণ ও শক্তিশালী এই চরিত্র সুনিপুণভাবে ফুটিয়ে তুলেছেন তিশা।