Tue. May 6th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলা বাজার২৪। রবিবার, ১২ নভেম্বর, ২০১৭: বাংলাদেশে ই-কমার্সে উজ্জল সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু নানা প্রতিবন্ধতায় খাতটি বিকশিত হচ্ছে না। ব্যবসায়ীরা বলছেন, প্রতিবন্ধকতা দূর করতে না পারলে এখাতের ভবিষ্যত অনিশ্চিত। অথচ এই খাতটিকে ঘিরে উদ্যোক্তাদের আগ্রহের কমতি নেই।

বেস্ট আইটির কর্ণধার ফারুক জানান, কৌতুহলে তিনি ই-কমার্সে উদ্যোগী হয়েছিলেন। ব্যবসা শুরুর পর দেখলেন এই খাতে প্রচুর সম্ভাবনা। তখন তিনি ব্যবসা বাড়ানোর জন্য উদ্যোগী হন। আর্থিক সহযোগীতার জন্য যখন ব্যাংকের দারস্থ হলেন তখন ব্যাংক তাকে জানালো, এই খাতে তারা কোনো ঋণ প্রকল্প নেই।

ফলে তাকে ফিরে আসতে হয়েছে। ব্যবসা বড় করার স্বপ্ন এখনো অপূর্ণ ফারুকের। ফারুক জানায়, ই-কমার্সে ব্যবসা অন্য যেকোনো পদ্ধতির থেকে অনেক সহজ। কম জনবল, স্বল্প পূঁজি এবং অনেকটা নিশ্চিন্তে ব্যবসা করা যায়। তবে এই খাতের প্রধান প্রতিবন্ধকতা আর্থিক সহযোগীতার অভাব ও যানজটের কারণে সময়মত পণ্য পৌঁছাতে না পারা।

এছাড়া দক্ষ লোকবলের অভাবতো রয়েছেই। তবে আশার কথা হচ্ছে, গত ২/৩ বছরে দেশে ই-কমার্সের প্রবৃদ্ধি শতভাগ বেড়েছে। এই ধারা অব্যাহত থাকলে এবং সমস্যাগুলোর সমাধান হলে অল্প সময়ের ব্যবধানে এই খাত জনপ্রিয়তা অর্জন করতে পারবে।
বিশ্ববাজার নিয়ে গবেষণা করা প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রতিবেদনে দেখা যায়, ২০১৬ সালে বিশ্বব্যাপী ২২.০৪৯ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের সেবা বা পণ্য বিক্রি হয়েছে। এর মধ্যে ই-কমার্সের অবদান ১.৯১৫ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার।

যা মোট সেবার প্রায় ১০ শতাংশ। পরিসংখ্যান বলছে, ২০২০ সালে বিশ্বব্যাপী ২৭.৭২৬ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলারের পণ্য বিক্রি হতে পারে। এর মধ্যে ই-কমার্সের মাধ্যমে বিক্রি হতে পারে ৪.০৫৮ ট্রিলিয়ন মার্কিন ডলার। যা মোট বিক্রির ১৪.৬৩ শতাংশ। প্রবৃদ্ধি হার ১৮.০৭ শতাংশ। সুতরাং বলা যায়, আগামীর বাজার হবে ই-কমার্সের বাজার।
বাজার গবেষণায় দেখা যায়, ই-কমার্সে বিশ্বের সবথেকে বেশি পণ্য বিক্রি করেছে চীনের প্রতিষ্ঠানগুলো। ২য় অবস্থানে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র, ৩য় অবস্থানে যুক্তরাজ্য। এই তালিকার শীর্ষ ৫০’এ বাংলাদেশের ঠাই হয়নি।

বিশ্বের উন্নত দেশগুলো যখন ই-কমার্সে এত এগিয়ে তখন আমাদের দেশে এই খাতের অবস্থা খুবই শোচনীয়। হাতেগোনা কয়েকটি প্রতিষ্ঠান নিজ উদ্যোগে এগিয়ে যাচ্ছে। দেশের মোট বাজারে ই-কমার্সের অবস্থান দশমিকের নিচে। দেশের বেশিরভাগ ক্রেতারা ই-মার্কেটের বিষয়ে পুরোপুরি অজ্ঞ। আবার অনেকেই এই খাতে লেনদেন করার ব্যাপারে আশ্বস্ত না হওয়ায় লেনদেন করছে না। ফলে ক্রেতা সংকটেও আছে সম্ভাবনাময় এই খাত। অথচ বাজার বিশ্লেষকদের দাবি, ই-কমার্সের মাধ্যমে সময় এবং অর্থ দুটোরই সাশ্রয় হয়।
তত্বাবধায়ক সরকারের সাবেক উপদেষ্টা মির্জ্জা আজিজুল ইসলামের মতে, বর্তমান যুগ, প্রযুক্তির যুগ। আমাদের প্রযুক্তির সাথে তাল মিলিয়ে চলতে হবে। এর বিকল্প অন্য কিছু নেই।
বাংলাদেশ শিল্প ও বণিক সমিতির (এফবিসিসিআই) পরিচালক (ই-কমার্সের প্রতিনিধিত্বকারী) শমী কায়সারের মতে, প্রয়োজনীয় সহায়তা পেলে ই-কমার্স খাত দেশের অর্থনীতিতে তৈরি পোশাক খাতের মত ব্যাপক অবদান রাখতে সক্ষম। এক্ষেত্রে সম্ভাবনাময় উদ্যোক্তাদের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থায়ন এবং সম্ভাবনাময় বাজার চিহ্নিতকরণের উপর ওপর গুরুত্ব দিতে হবে।