খােলা বাজার২৪। বুধবার, ৩ জানুয়ারি, ২০১৮: বছর আসে বছর যায়। প্রতিবছরই একঝাঁক নতুনের আগমন ঘটে। বছর শেষে অনেকে হারিয়ে যায়। টিকে থাকার সংখ্যা খুবই নগন্য। এ দায় কার? যারা আসে তাঁদের, নাকি যারা তাদের ব্যাবহার করতে পারে না তাঁদের? ক্ষেত্রে বিশেষে যোগ্যতার অভাবেই অনেকে হারিয়ে যায়। কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই দেখা যায় জায়গা না পাওয়ার হতাশা।
যদি গত তিন বছরের হিসেব করি। ২০১৫ সালে বড় পর্দায় আগমন ঘটেছিল অপূর্ব, ছোটপর্দার এ জনপ্রিয় অভিনেতা এক ছবিতে ক্ষান্ত হয়েছেন। নতুন কোনো ছবির খবর নেই। পরীমণী, সিনেমায় নিয়মিত আছেন। বর্তমান সময়ের অন্যতম আলোচিত নায়িকা হিসেবেই আছেন। সানজীদা, জাতীয় পুরস্কার পাওয়া সিনেমার নায়িকা। বর্তমানে ছোট পর্দাতেই ব্যস্ত। তবে বিয়ে করে সে ব্যস্ততাও অনেকটা কমিয়েছেন। মোহনা মীম, ভারতে পড়াশুনা নিয়ে ব্যস্ত। আরেফ, প্রথম ছবি ‘অনিল বাগচির একদিন’ দিয়ে প্রশংসিত হলেও এখন অনেকটা নিশ্চুপ। নুসরাত ফারিয়া, ঢালিউডের এ সময়কার অন্যতম আলোচিত নায়িকা। জাজের হাত ধরে আগমন হয়েছে। নিজেকে এখনো যথার্থ প্রমান করতে পারেনি। এবিএম সুমন, নিজেকে প্রমাণ করার মত দক্ষতা আছে বলে সকলে মনে করেন। যথার্থ সুযোগ মিলে না। মৌসুমী হামিদ, ছোট পর্দা থেকে বড় পর্দায় আগমন ঘটেছিল। ফের ব্যক টু দ্যা প্যাভেলিয়ন। সোনিয়ারও একই অবস্থা। ইরফান সাজ্জাদ, ছোট পর্দায় ব্যস্ত। এছাড়া আসে রুদ্র রায়হান, অমৃতা , বিপ্লব , তিতান, মিনহাজ , তানিয়া মির্জা, কাজী আসিফ।
২০১৬ সালে আগমন ঘটেছে লামিয়া, জলি, শাহাদৎ, অরিন, ইমু, তানহা , মনিকা , মারজান জেনিফা, আরশী , উদয়, রাজ, তুশি, পিয়া বিপাশা, রাফি সালমান, শবনম বুবলি, রোশান, মণিরাজ, আর্ণা, টিটু, সানজানা, আসিফ নূর সহ আরও অনেকের। কিন্তু এর মধ্যে কয়জন টিকে আছে? এর মধ্যে যারা আলোচিত ছিলেন, জলি জাজের ঘরে আছেন। মাঝেমধ্যে দেখা যায়। মারজান জেনিফা বিয়ে করে সংসার করছেন। আরশীর হাতে ছবি নেই। উদয় র্যাম্পে ফিরে গেছেন, রাজেরও একই অবস্থা , অথচ দুজনকেই মেধাবী বলে ইন্ডাষ্ট্রি আখ্যা দিয়েছিল। তুশিকে মাঝেমধ্যে বিজ্ঞাপনে দেখা যায়। পিয়া বিপাশা নানা স্ক্যান্ডালে জড়াতেই ব্যস্ত। হাতে কোন ছবি নেই। শবনম বুবলি আছেন শাকিবে ভর করে। রোশান নিজেকে প্রমাণে ব্যস্ত, ভালো করার সম্ভবনা আছে। আসিফ নূরের কয়েকটি সিনেমা করার কথা থাকলেও নতুন কোন খবর নেই অনেকদিন।
২০১৭ সালে আগমন শিবলী নোমান, নতুন ছবির খবর নেই। বিজ্ঞাপন ও গানের ভিডিওতে দেখা যায় মাঝেমধ্যে। রাতশ্রী দত্ত, ভারতীয় এ অভিনেত্রী বাংলাদেশে শুরু করেও বেশিদূর যেতে পারেননি। কংকন, শবনীড়, আদনান- তিনজনেরই খোজ নেই। শায়লা সাবি, বিয়ে করে সংসার নিয়ে ব্যস্ত। ক্যামেলিয়া রাঙা, ছোট পর্দায় ব্যস্ত। ফারিন খান, ঘোষনা দিয়ে সিনেমা ছেড়েছেন। তানজীন তিশা, ছোট পর্দায় ব্যস্ত। বড় পর্দায় ভালো করার সুযোগ থাকলেও সুযোগটা আসেনি। ভাবনা, ছোট পর্দায় ব্যস্ত। ফাহমি, পরিচালক অভিনেতা বনে গিয়েছিলেন। তাসকিন, আগমনেই সকলের মন জয় করে নিয়েছে। নতুন ছবিতেও চুক্তিবদ্ধ হয়েছে। দেখার বিষয় নিজেকে কতটা ধরে রাখতে পারে। নীলা তানভীর, মুন- গত বছরের শেষ ছবি ‘গহীন’ বালুচরের মাধ্যমে আগমন। এরই মধ্যে ছবিটি যারা ছবিটি দেখেন তিনজনেরই সমান প্রশংসা করেছেন। নিজেদের নিয়ে যেতে হবে বহুদূর। কতদূর নিয়ে যেতে পারে সেটা সময়ই বলে দিবে।
এ বছর আরো অনেক নতুনের আগমন ঘটবে। এরই মধ্যে আলোচনায় রয়েছে ছোটপর্দায় জনপ্রিয়তা পাওয়া সিয়াম ও শিশুশিল্পী হিসেবে নায়িকার খাতায় নাম লেখানো পূজা। বছরের অন্যতম আলোচিত সিনেমা ‘পোড়ামন ২ ‘ আসছে তাদের হাত ধরে।
গত তিন বছরে এত নায়ক- নায়িকার আগমন ঘটেছে ইন্ডাষ্ট্রিতে। অথচ আমাদের ইন্ডাষ্ট্রি শূন্য বললেই চলে। হাতে গোনা কয়েকজন নায়ক ও নায়িকায় ভর করে চলে। এখানে নেই যেমন সুষ্ঠ নার্সারিং। তেমনি নতুনদের নিয়ে ভাববার সময়। তাদের যদি নিয়মিত সুযোগ দেয়া হয়। হয়তো একদিন ইন্ডাস্ট্রিতে আরো অনেক তারকার জন্ম হবে। আমরা বলিউডে যেমনটা দেখে থাকি।