খােলা বাজার২৪। বুধবার, ৭ ফেব্রুয়ারি, ২০১৮: আজাদ সিনেমা হলে ‘রক্ত চোষা’ ছবির পোস্টারচলতি মাসে নতুন কোনো ঢাকাই চলচ্চিত্র এখনো মুক্তি পায়নি। সিনেমা শূন্য হয়ে পড়েছে প্রেক্ষাগৃহগুলো। তাই বাধ্য হয়ে পুরোনো সিনেমা প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শিত হচ্ছে। এই দুঃসময়ে প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শিত হচ্ছে ময়ূরী, পলি অভিনীত অশস্নীল সিনেমা। চলতি সপ্তাহে রাজধানীর আজাদ সিনেমা হলে নিরম্ন বিশ্বাসের ‘রক্ত চোষা’ নামের সিনেমা প্রদর্শিত হচ্ছে। এর পোস্টারে চিত্রনায়িকা পলি, আলেকজান্ডার বোর ছবি দেখা যাচ্ছে। এদের বিরম্নদ্ধে সিনেমায় অশস্নীল দৃশ্যে অভিনয়ের অভিযোগ রয়েছে। আর ছবির পোস্টারেও ছোট পোশাক পরিহিত পলির অশস্নীল অঙ্গভঙ্গির প্রদর্শিত হয়েছে। এই সব সাঁটানো হয়েছে সিনেমা হলের মূল ফটকে। এ সিনেমার পোস্টার দেখে অনেকেই বিব্রত হচ্ছেন। বিশেষ করে, নারী পথচারীরা পড়ছেন বিপাকে। ‘রক্ত চোষা’ সিনেমায় আরও অভিনয় করেছেন অমিত হাসান, মৌমিতা, শিবা শানু, কাবিলাসহ অনেকে। এর কাহিনী ও সংলাপ লিখেছেন উত্তম আকাশ। শামসুল আলম প্রযোজিত এ সিনেমার চিত্রনাট্য লিখেছেন পরিচালক নিরম্ন বিশ্বাস।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, অশস্নীল এই চলচ্চিত্রগুলো ডিজিটাল ফরম্যাটে রূপান্ত্মর করে বিভিন্ন প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শন করার ব্যবস্থা করা হয়েছে। রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে ময়ূরী, পলির কাটপিস সিনেমা প্রদর্শিত হচ্ছে। তবে এ নিয়ে সংশিস্নষ্ট কর্তৃপক্ষের কোনো মাথা ব্যথা নেই। এভাবে চলতে থাকলে সিনেমার যে সম্ভাবনা তৈরি হয়েছে তা খুব শিগগিরই মুখ থুবড়ে পড়বে বলে চলচ্চিত্র বোদ্ধারা মনে করছেন।
এ বিষয়ে চলচ্চিত্র প্রদর্শক সমিতির সভাপতি ও মধুমিতা সিনেমা হলের স্বত্বাধিকারী ইফতেখার উদ্দিন নওশাদের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘নতুন সিনেমা মুক্তি পাচ্ছে না, বাধ্য হয়ে আমাদের পুরোনো সিনেমা চালাতে হচ্ছে। কিন্তু তাই বলে অশস্নীল সিনেমা প্রদর্শন করব কেন?’
আজাদ সিনেমা হলে ‘রক্ত চোষা’ নামের একটি সিনেমা প্রদর্শিত হচ্ছে। প্রেক্ষাগৃহটির সামনে সিনেমাটির অশস্নীল পোস্টার সাঁটানো আছে। এ বিষয়টি উলেস্নখ করে জানতে চাইলে ইফতেখার উদ্দিন নওশাদ বলেন, ‘আজাদ সিনেমা হলে অশস্নীল সিনেমা কেন চলবে? আজাদ হলের মালিক আলমগীর ভাই আমাদের উপদেষ্টা। তার এই সিনেমা কোনোভাবেই চালানো উচিত নয়। বিষয়টি আমি পরবর্তী মিটিংয়ে বলব।’
চলচ্চিত্রের সোনালি যুগের অবসানের পর নব্বই দশকের শেষের দিকে ঢাকাই চলচ্চিত্রে কাটপিস সিনেমার আগ্রাসন শুরম্ন হয়। ২০০০ সালের দিকে বাংলাদেশের সিনেমায় ময়ূরী, পলি, ঝুমকাদের বিচরণ শুরম্ন হয়। তাদের বিরম্নদ্ধে ব্যাপকভাবে অশস্নীল দৃশ্যে অভিনয়ের অভিযোগ ওঠে। যে কারণে সিনেমাপ্রেমী মানুষ হলবিমুখ হতে শুরম্ন করেন। এরপরই ঢাকাই চলচ্চিত্র মুখ থুবড়ে পড়ে।
সরকারের কঠোর মনোভাব আর চলচ্চিত্র সংশিস্নষ্টদের একান্ত্ম চেষ্টায় বর্তমানে অশস্নীল চলচ্চিত্র নির্মাণের এখন আর সুযোগ নেই। নির্মিত হচ্ছে ভালো মানের সিনেমা। চলচ্চিত্রের নতুন সম্ভাবনা তৈরিও হয়েছে। নতুন নতুন প্রযোজক আবার অর্থলগ্নী করছেন। সিনেমাপ্রেমীরা আবারও পরিবার-পরিজন নিয়ে হলে যাওয়া শুরম্ন করছেন। ঠিক এই সময় আবারও অশস্নীল সিনেমা প্রেক্ষাগৃহে প্রদর্শন করাটা চলচ্চিত্রের জন্য হুমকিস্বরূপ বলে মনে করছেন চলচ্চিত্র সংশিস্নষ্টরা। যায়যায়দিন