খােলাবাজার২৪,সোমবার, ০৭ জানুয়ারি ২০১৯ঃ ধানের শীষের প্রার্থীকে ভোট দেয়ার খেসারত দিচ্ছে পুরো গ্রামবাসীকে। গত ৩০ ডিসেম্বর একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর থেকেই রাজশাহীর তানোর উপজেলার একটি গ্রামকে এখনও অবরুদ্ধ করে রাখা হয়েছে।
দেশের শীর্ষস্থানীয় গণমাধ্যম ডেইলি স্টারের খবর- আওয়ামী লীগের রোষানলের মুখে পড়া কলমা গ্রামটিতে রয়েছেন ২ হাজার ৪৩৫ জন ভোটার। কলমা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট পড়েছিলো ১ হাজার ৯১৪টি। এর মধ্যে ১ হাজার ২৪৯ ভোট পেয়েছিলেন বিএনপির প্রার্থী আমিনুল হক এবং ৬৫৩টি ভোট পেয়েছিলেন ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগের প্রার্থী ওমর ফারুক চৌধুরী।
স্থানীয়রা জানান, ভোটের পরে আওয়ামী লীগ সমর্থকরা লাঠিসোঁটা নিয়ে বিএনপি সমর্থক হিসেবে পরিচিত ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য শফিকুল ইসলামের টিনের বাড়ি ভাঙচুর করে। এরফলে বিএনপি সমর্থকরা চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদকে ধাওয়া দেয়। এরপর পরিস্থিতি আরো উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। অবরুদ্ধ হয়ে পড়ে গ্রামটি।
গ্রামবাসীদের অভিযোগ, ভোটের পরদিনই লাঠিসোটা নিয়ে আওয়ামী লীগের লোকেরা অবস্থান নেন গ্রামের প্রবেশ পথ দুটিতে। বিল্লি এবং দরগাডাঙ্গা মোড়ে অবস্থান নিয়ে তারা গ্রামের দিকে সব ধরনের যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেন। এমনকি, বাইসাইকেল ও রিকশা-ভ্যানের চলাচলও বন্ধ করে দেওয়া হয়।
তারা বলেন, আওয়ামী লীগের লোকেরা গ্রামের সেচকাজে ব্যবহৃত গভীর নলকূপটিও দখল করে নিয়েছেন। এছাড়াও, বন্ধ করে দিয়েছেন টেলিভিশনের স্যাটেলাইট সংযোগ।
নাম না বলার শর্তে একজন গ্রামবাসী বলেন, ‘তারা গ্রামের আওয়ামী লীগ সমর্থকদেরও ছাড় দিচ্ছেন না। সবাইকে অবরুদ্ধ করে রেখেছেন।’
এমন পরিস্থিতির জন্যে গ্রামের জ্যেষ্ঠ আওয়ামী লীগ নেতাসহ অন্যান্য গ্রামবাসীদের অভিযোগের তির কলমা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান লুৎফর হায়দার রশিদ এবং দলের তরুণ সদস্যদের দিকে।
তবে এই অবরোধের জন্যে লুৎফর তার সংশ্লিষ্টতা অস্বীকার করেছেন। তার দাবি, ‘বিএনপির লোকদের আক্রমণের ভয়ে লোকজন গ্রামের বাইরে আসছেন না। একই কারণে বাসগুলো সেই রাস্তা এড়িয়ে চলছে।’
আওয়ামী লীগের একজন কর্মী আতাউর রহমান বলেন, ‘পরিস্থিতি স্বাভাবিক রয়েছে। অতিরিক্ত পুলিশ সুপার এবং তানোর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা গ্রামটি ঘুরে যাওয়ার পর থেকেই পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়ে এসেছে। নিরাপত্তার বিষয়ে কর্মকর্তাদের নিশ্চয়তা দেয়ার ফলে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হয়েছে।’
সবাইকে শান্ত থাকার অনুরোধ জানিয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মতিউর রহমান সিদ্দিকী বলেন, ‘আসলে শনিবারের হামলা ও প্রতি-হামলার প্রেক্ষিতে স্থানীয় আওয়ামী লীগের লোকেরা লোকজনদের আটকে রেখেছে। গ্রামের অধিকাংশ মানুষ বিএনপিপন্থি। বিএনপি এবং আওয়ামী লীগ- এই দুই দলের মধ্যে উত্তেজনা রয়েছে।