Wed. Oct 15th, 2025
Advertisements
খােলাবাজার২৪,শনিবার,০৭মার্চ,২০২০ঃ এবার মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর ও পররাষ্ট্রমন্ত্রী অং সান সুচিকে দেয়া সম্মাননা কেড়ে নিল লন্ডন সিটি কর্পোরেশন (সিএলসি)। দেশটির রাখাইন রাজ্যে রোহিঙ্গাদের ওপর নিপীড়নের ঘটনাকে সামনে এনে গত বৃহস্পতিবার এমন সিদ্ধান্তের কথা জানিয়েছে রাজধানী শহরটির কর্তৃপক্ষ। লন্ডনের ঐতিহাসিক এবং অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলো পরিচালনা করা সিএলসি কর্তৃপক্ষের নির্বাচিত প্রতিনিধিদের ভোটে সুচির সম্মাননা বাতিল করা হয়। খবর আল জাজিরা’র।

২০১৭ সালের আগস্টে মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর পূর্বপরিকল্পিত ও কাঠামোগত সহিংসতা জোরদার করে মিয়ানমার সেনাবাহিনী। হত্যা, সংঘবদ্ধ ধর্ষণ, ঘরবাড়িতে অগ্নিসংযোগের কারনে জীবন বাঁচাতে নতুন করে বাংলাদেশে পালিয়ে আসেন সাত লাখেরও বেশি রোহিঙ্গা। এ বিষয়ে সুচি কোন কার্যকরী পদক্ষেপ নেননি। বরং গণহত্যার কথা অস্বীকার করে সেনাবাহিনীর হত্যাযজ্ঞের পক্ষে সাফাই গেয়ে আসছেন তিনি। এ কারণে তিনি গণতান্ত্রিক মিয়ানমারের পক্ষে তার সংগ্রামের স্বীকৃতি হিসেবে পাওয়া প্রায় সমস্ত সম্মাননা হারিয়েছেন। ২০১৭ সালের মে মাসে মিয়ানমারের স্টেট কাউন্সেলর সুচিকে সম্মাননা দিয়েছিল সিএলসি। এর মাধ্যমে মিয়ানমার নেত্রীর অনেক বছর ধরে গণতন্ত্রের জন্য অহিংস লড়াই এবং মানুষের জন্য একটি শান্তিপূর্ণ সমাজ গঠনে তার অবিচল নিষ্ঠার স্বীকৃতি দেয়া হয়েছিল। সে সময় ইউরোপ সফরে থাকাকালে সুচি লন্ডনে ওই সম্মাননা প্রদানের অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন এবং পুরস্কার গ্রহণ করেন। তবে রোহিঙ্গা সমস্যার জন্য সেখানে তিনি বিক্ষোভের সম্মুখীন হয়েছিলেন।

সু চি সর্বশেষ গেল বছরের ডিসেম্বরে আন্তর্জাতিক বিচার আদালতে (আইসিজে) নিজ দেশের সেনাবাহিনীর গণহত্যার পক্ষে সাফাই গাইতে হাজির হন। এতে নিজের অর্জিত আন্তর্জাতিক সম্মানের শেষটুকুও নষ্ট করেন। বিশ্লেষকরা বলছেন, আইসিজে মিয়ানমারকে গণহত্যা মামলায় অভিযুক্ত করার পর সু চি এখন কেবলই একজন ক্ষমতালিপ্সু স্বৈরাচার, যিনি ক্ষমতা ধরে রাখার স্বার্থে নিজ দেশের সামরিক বাহিনীর গণহত্যা ও যুদ্ধাপরাধের পক্ষে দাঁড়ান। ডিসেম্বরে হেগে আন্তর্জাতিক আদালতে রোহিঙ্গা ইস্যুতে গাম্বিয়ার করা মামলার শুনানিতে সু চির অবস্থানের পর সম্মাননাটির জন্য তিনি যোগ্য নন বলে একমত হয় সিএলসি। শুনানিতে রোহিঙ্গাদের ওপর মিয়ানমারের গণহত্যা, ধর্ষণ, অগ্নিসংযোগের অভিযোগ অস্বীকার করেন শান্তিতে নোবেলজয়ী এ বিতর্কিত নেত্রী। এর আগে কানাডার পার্লামেন্টের দেয়া সম্মানসূচক নাগরিকত্ব, ব্রিটেনের অক্সফোর্ড শহরের দেয়া সম্মাননা, গ্লাসগো নগর কাউন্সিলের দেয়া ফ্রিডম অব সিটি খেতাব, লন্ডনভিত্তিক সংস্থা অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের দেয়া সম্মাননা হারিয়েছেন সু চি।