Sun. Jun 8th, 2025
Logo Signature
Agrani Bank
Rupali Bank
Advertisements

খােলাবাজার২৪, শনিবার, ২০র্মাচ ২০২১ঃ দেশে ‘গণতন্ত্র ও আইনের শাসন’ থাকলে সুনামগঞ্জের শাল্লা উপজেলার নোয়াগাঁওয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের বাড়িঘরে হামলা ও লুটপাটের ঘটনা ঘটত না বলে মনে করে বিএনপি।

আজ শনিবার দুপুর ১২টার দিকে বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট নিতাই রায় চৌধুরীর নেতৃত্বে ঢাকা থেকে একটি প্রতিনিধি দল নোয়াগাঁও গ্রামে যায়। দলের সদস্যরা ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেন এবং ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলেন। এ সময় তাদের হাতে বিএনপির চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার পক্ষ থেকে নগদ এক লাখ ২০ হাজার টাকা তুলে দেওয়া হয়।

প্রতিনিধি দলে আরও ছিলেন বিএনপির নির্বাহী কমিটির সদস্য ও নারী ও শিশু অধিকার ফোরামের সদস্য সচিব নিপুন রায়, সুনামগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাবেক সংসদ সদস্য কলিম উদ্দিন আহমেদ মিলন, সাধারণ সম্পাদক নুরুল ইসলাম নুরুল, ছাত্রদলের সাংগঠনিক সম্পাদক মো. রায়হান উদ্দিন প্রমুখ।

এ সময় বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান নিতাই রায় চৌধুরী গণমাধ্যমকে বলেন, ‘দেশে যদি গণতন্ত্র থাকত, আইনের শাসন থাকত তাহলে এ ঘটনাগুলো ঘটত না। এই সরকার যখনই ক্ষমতায় এসেছে তখনই সংখ্যালঘুদের ওপর হামলা হয়েছে। এই সরকারের আমলেই রামুতে হামলা হয়েছে। এইবার সুনামগঞ্জে একইভাবে হামলা করা হলো।’

‘এই সরকারের আমলে মানুষের বাড়িঘর, জমিজমা দখল করা হয়েছে। আর এ ঘটনাগুলি এজন্যই হচ্ছে কারণ, এই সরকার প্রকৃতভাবে জনগণের সরকার না, এই সরকার জনগণের ভোটে নির্বাচিত হয়নি। এরা রাতের বেলা অর্ধেক ভোট দিয়ে দিনের বেলা নির্বাচিত হয়।’

নিতাই রায় আরও বলেন, ‘আওয়ামী লীগ সরকার গণবিছিন্ন সরকার এবং গণবিছিন্ন সরকার সব সময় দুর্বল থাকে। তাই দুর্বল সরকারকে সবলভাবে টিকে থাকতে হলে তাকে বলপ্রয়োগ করতে হয় রাষ্ট্রযন্ত্রের মাধ্যমে। তাই বলপ্রয়োগ করতে গিয়ে আরও বেশি গণবিছিন্ন হয়ে পড়েছে। এই কারণেই ঘটনাগুলি ঘটছে।’

পুলিশ ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, গত সোমবার সুনামগঞ্জের দিরাই উপজেলায় শানে রিসালাত সম্মেলনে লক্ষাধিক মানুষের সামনে বক্তব্য দেন হেফাজতে ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতারা। সেই সূত্র ধরে পাশের শাল্লা উপজেলার হবিবপুর ইউনিয়নের নোয়াপাড়া গ্রামের ঝুমন দাস আপন তাঁর ফেসবুকে মাওলানা মামুনুল হককে নিয়ে আপত্তিকর পোস্ট দেন বলে দাবি করা হয়। এক পর্যায়ে ঝুমনকে খুঁজে বের করে গত মঙ্গলবার রাতে পুলিশে দেয় লোকজন। এরপরও লোকজন শান্ত না হয়ে গত বুধবার সকাল থেকে লাঠিসোটা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে নোয়াপাড়া গ্রাম ঘিরে রাখে। পরে তারা বাড়িঘর ভাঙচুর ও লুটপাট করে বলে অভিযোগ পাওয়া যায়।

এ ঘটনায় গত বৃহস্পতিবার রাতে হবিবপুর ইউপির চেয়ারম্যান বিবেকানন্দ মজুমদার বকুল ৫০ জনের নাম উল্লেখ করে প্রথম মামলাটি করেন। এতে প্রধান আসামি করা হয় দিরাইয়ের তাড়ল ইউপির সদস্য শহিদুল ইসলামকে। এ ছাড়া অজ্ঞাত আরও দেড় হাজার জনকে আসামি করে পুলিশের পক্ষ থেকে অপর মামলাটি করা হয়। পুলিশের করা মামলার বাদী হয়েছেন শাল্লা থানার উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুল করিম।

এরই মধ্যে গতকাল শুক্রবার অভিযান চালিয়ে ২২ জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। গতকাল সন্ধ্যায় তাঁদের আদালতে হাজির করা হলে আদালত জামিন নামঞ্জুর করে কারাগারে পাঠানোর নিদের্শ দেন।