খোলাবাজার ঃ তথ্যমন্ত্রী হাসানুল হক ইনু বলেছেন,‘গণতন্ত্র ও স্বাধীন বাংলাদেশের মুক্ত চিন্তার রাজনীতির পথকে দূরগামী করতে খালেদাকে কোনো প্রকার ছাড় দেওয়া হবে না। আগুনযুদ্ধের রাণী খালেদা জিয়াকে আদালতের কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হবে। তাকে কোনো প্রকার রেহাই দেওয়া হবে না।’
শিল্পকলা একাডেমীর জাতীয় চিত্রশালার ৬নং গ্যালারিতে বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগ আয়োজিত ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার সংবাদচিত্র প্রদর্শনী ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ সব কথা বলেন।
খালেদা জিয়ার বর্তমান রাজনীতির কৌশল প্রসঙ্গে তথ্যমন্ত্রী বলেন, ‘তিনি দম ফেলার কৌশল নিয়েছেন। এরপর তিনি পাল্টা আঘাত হানবেন এই পরিকল্পনাও করছেন। কিন্তু খালেদা জিয়াকে পাল্টা আঘাতের কোনো সুযোগই দেওয়া হবে না। এটা এ মুহূর্তেই আমাদের রাজনীতিক কর্তব্য।’
সাম্প্রতিক সময়ে জাসদ ও আওয়ামী লীগের বিতর্ক প্রসঙ্গে ইনু বলেন, ‘আমি মুক্তিযোদ্ধা এবং এখনো মুক্তিযুদ্ধেই আছি। একাত্তরের যুদ্ধের পর ভাবলাম দেশ গড়ার যুদ্ধে নামব। কিন্তু দম ফেলতেই দেখি ১৫ আগস্টের হত্যাকাণ্ড। একাত্তরের খুনিরাই পঁচাত্তরের খুনি। মোস্তাক ও জিয়ার দিকে তাকালেই খুনিদের চেহারা ভেসে ওঠে। ৪৮ ঘণ্টার মধ্যে আমি মোস্তাক সরকারের বিরুদ্ধে লড়াই শুরু করি। মোস্তাকের ৮৩ দিনের শাসনে জাসদের শতাধিক নেতা নিহত হন। এরপর জিয়া আসল, তারপর এরশাদ। শেখ হাসিনার সঙ্গে সংগ্রামে দাঁড়ালাম। সেই সময় থেকে আজ অবধি জাসদের ভূমিকা সবারই জানা।’
তিনি বলেন, ‘বাংলাদেশকে জঙ্গিবাদ ও আদর্শিক গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার জন্য বর্তমানে আওয়ামী লীগ ও জাসদ ইস্পাত কঠিন ঐক্যবদ্ধ রয়েছে এবং থাকবে। এই ঐক্যের কারণেই চক্রান্তকারীদের সকল চক্রান্ত ছিন্নবিচ্ছিন্ন হয়েছিল।’
খালেদা জিয়া প্রসঙ্গে ইনু বলেন, ‘ক্ষমতায় আসার পর গণতান্ত্রিক সংগ্রামে থাকা খালেদা জিয়ার আসল চেহারা বেরিয়ে এল। তার আঁচলের নিচে পাকিস্তানের দালালরা আশ্রয় পেল। কিন্তু শেখ হাসিনার নেতৃত্বে সব চক্রান্ত ভেস্তে গেল। শেখ হাসিনা যখন যুদ্ধাপরাধীদের বিচার করার সিদ্ধান্ত নিলেন তখন খালেদা জিয়া বাংলাদেশ ও বাংলাদেশের সংবিধানের বিরুদ্ধে যুদ্ধ ঘোষণা করলেন। তাই আমার যুদ্ধ এখনো শেষ হয়নি কারণ বাংলাদেশ এখনো নিরাপদ নয়। এদের সম্পূর্ণরূপে নির্মূল করতে হবে।’
প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘শেখ হাসিনা আমাদের কমান্ডার তথা সেনাপতি। আমরা তার নেতৃত্বে এগিয়ে যাচ্ছি এবং এখানে সামান্যতম ভুল ও অসতর্কতা বাংলাদেশকে বিপদে ফেলে দিতে পারে। তাই শেখ হাসিনার সঙ্গে ঐক্য বজায় রেখে বাংলাদেশকে চিরনিরাপদ রাখার যুদ্ধে আছি আমরা। মনে রাখতে হবে, প্রত্যেক স্তরে স্তরে খালেদা জিয়ার এজেন্ট আছে।’
আয়োজক সংগঠন আওয়ামী যুবলীগের চেয়ারম্যান ওমর ফারুক চৌধুরী সভাপতির বক্তব্যে বলেন, ‘যারা জাসদ ও আওয়ামী লীগের ঐক্যের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছে তারা দেশের মিত্রশক্তি নয়। তাই তাদের থেকে সতর্ক থাকতে হবে।’
যুবলীগের মাসব্যাপী কর্মসূচির সমাপনী অনুষ্ঠানে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন সংগঠনটি সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশীদ, বাংলাদেশ টেলিভিশনের মহাপরিচালক আবদুল মান্নানসহ মহানগর উত্তর ও দক্ষিণ যুবলীগের বিভিন্ন পর্যায়ের নেতৃবৃন্দ।
আলোচনা শেষে মন্ত্রী ২১ আগস্ট গ্রেনেড হামলার ভয়াবহ ঘটনার সংবাদচিত্র প্রদর্শনী ঘুরে দেখেন।
(খোলাবাজার/জিএম/৩১-০৮-২০১৫)